অবতক খবর: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটিকাণ্ডে প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের বিরুদ্ধে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন ডিআইজি কারা।

জানা যাচ্ছে, জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে জেলের আইন ভাঙা ও কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই মর্মে আদালত কারা দফতরের কাছে রিপোর্ট চেয়ে জানতে চেয়েছিল। কারা দফতরের রিপোর্টে সন্তুষ্ট ছিল না আদালত। শনিবার আলিপুর আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিন-মামলার শুনানি রয়েছে। কারা দফতরের তরফে প্রেসিডেন্সি জেলের সুপারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি আদালতে জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত,আদালতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মামলার শুনানির সময় ইডির আইনজীবী তাঁর হাত আদালতের সামনে দেখাতে বলেন৷ সেখানে দেখা যায়, হাতে দু’টি আংটি রয়েছে পার্থর৷ সেই নিয়েই ওঠে প্রশ্ন৷ সংশোধনাগারে থাকাকালীন কী ভাবে একজন বন্দির হাতে ‘অরনামেন্টস’ থেকে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইডির আইনজীবী৷ পার্থ অবশ্য জানান, তিনি স্বাস্থ্যের কারণে হাতে আংটি পরেছেন৷ দামি কিছু নয়, খুলে দেবেন৷

আদালতের সওয়াল জবাবে আসলে প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করতে চেয়েছিল ইডি৷ ইডির আইনজীবী প্রথমেই আদালতে বলেন, ‘ক্যামেরার সামনে পার্থবাবুর হাত দুটো দেখাতে বলবেন?’ বিচারক তারপর বলেন, ‘পার্থ বাবু হাত দুটো দেখাবেন? তালু দেখাবেন? রিভার্স সাইড প্লিজ’… তার পর আদালতে ইডির আইনজীবীদের তরফ থেকে বলা হয়, ‘দেখতে পেলেন হাতে আংটি। হেফাজতে থাকাকালীন কোনও অরনামেন্ট পরতে পারেন না বন্দি। উনি এতটাই পাওয়ার ফুল (প্রভাবশালী) যে উনি অরনামেন্ট পরে আছেন… এতটাই পাওয়ারফুল!’

এর পরেই ইডিকে প্রশ্ন করেন, তাঁদের হেফাজতে থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে আংটি ছিল কি না৷ ইডি জানায়, না! তার পরেই আদলতের তরফ থেকে প্রশ্ন ওঠে, ‘কী ভাবে সংশোধনাগারে অরনামেন্ট পরে থাকার অনুমতি দিল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। কারা আইন ও জেল কোডে বলা আছে সংশোধনাগারে প্রবেশের সময় অরনামেন্ট খুলে দেওয়া হয়। উনি কতটা প্রভাবশালী তাতেই বোঝা যাচ্ছে… জেল হেফাজতে থাকাকালীন টাকা, গয়না সমস্ত কিছু জেল সুপারের হেফাজতে রাখা হয়ে থাকে। তাহলে উনি কি ভাবে আংটি পরে আছেন?’

পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফের প্রশ্ন করে আদালত৷ তিনি কী জানতেন না, সংশোধনাগারে প্রবেশের সময় এগুলো খুলে রাখতে হয়৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনি জানতেন না৷ তাঁকে কেউ জানাননি৷ যদিও তারপর আদালত জানায়, এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, বিচলিত হওয়ারও কিছু নেই৷ সব মিলিয়ে অস্বস্তি ঢাকোটে উঠেপড়ে লেগেছে রাজ্য কারা দফতর।