অবতক খবর: সকাল থেকেই বৃষ্টি , বৃষ্টি মাথায় নিয়েই  কোচবিহার সার্কিট হাউসের সামনে ছাতার ভিড়। বিজেপি বিধায়ক থেকে শুরু করে কংগ্রেস এবং সিপিএমের নেতা-কর্মী এবং পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থীরা ভিড় করেছেন।  পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘অশান্ত’ কোচবিহারকে শান্ত করতে শুক্রবার রাতে রাজ্যপাল বার্তা দেওয়ার পরেই সকাল থেকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিড় জমিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিরা। পঞ্চায়েত ভোটকে সামনে রেখে যে ‘হিংসা’র ঘটনা ঘটছে, সেই পরিস্থিতির কথা বোসকে জানাতে।

শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে সকালেই বিজেপির পাঁচ বিধায়কের একটি দল সার্কিট হাউসে প্রবেশ করেন। তাঁদের পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও সার্কিট হাউসে চলে আসেন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে। জানা যাচ্ছে, রাজ্যপাল সার্কিট হাউসের এই সাক্ষাৎপর্ব শেষ করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যাবেন। সেখানে সন্ত্রাসে আক্রান্ত কয়েক জন রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে দেখা করবেন। তার পর সেখান থেকে তিনি যেতে পারেন দিনহাটায় সন্ত্রাস কবলিত এলাকা পরিদর্শনে। এদিকে পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যপালের ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।

বুধবারই রাজ্যপালের কোচবিহারে আসার কথা ছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাঁর সফর বাতিল হয়ে যায়।  শুক্রবার রাতে আচমকাই কোচবিহার রওনা হন রাজ্যপাল। কোচবিহার সার্কিট হাউস পৌঁছেই তিনি তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করেন। জানান, রাজ্যে আর অশান্তি বরদাস্ত নয়। কোচবিহারকেও শান্ত দেখতে চান। তার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। চাইলে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা  তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন। তিনি তাঁদের অভিযোগ বা বক্তব্য শুনবেন। পাশাপাশি ‘অশান্ত’ দিনহাটা যাওয়ার পথে সাধারণ মানুষও চাইলে অভিযোগ জানাতে পারবেন। রাজ্যপালের এই বার্তার পর শনিবার সকালেই দেখা গেল কোচবিহার সার্কিট হাউসের সামনে নানা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের। বিজেপি অবশ্য আগেই জানিয়েছিল, যে তারা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে ‘হিংসার ইতিহাস’ জানাবেন। সকালে দেখা গেল রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও।

রাজ্যপালের সঙ্গে বিরোধীদের সাক্ষাৎ নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র পার্থ প্রতিম রায় বলেন, ‘‘আহতদের দেখতে যাবেন। নিহতদের পরিবারের সঙ্গে কি দেখা করতে যাবেন না? আমাদের তৃণমূলের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন কি না জানি না। কারণ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক তাঁকে চোরাচালান কারবারি বলে দাগিয়ে দিয়েছেন।’’ তৃণমূল নেতার আরও বলেন, ‘‘বিএসএফও কোচবিহারের সীমান্তবর্তী এলাকায় তৃণমূলকে ভোটপ্রচারে বাধা দিচ্ছে। সে নিয়ে রাজ্যপালের ভূমিকা কি হবে?’’ তৃণমূল নেতার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে ভেঙে ফেলতে চায় বিজেপি। কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে নানা ভাবে তৃণমূলকে হেনস্থার চেষ্টা হয়েছে। এখন পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রাজ্যপাল কেন এত সক্রিয়, সেটাও প্রশ্নের।

পঞ্চায়েত ভোটের বিঞ্জপ্তি জারির পর রাজ্যের  যেসমস্ত জায়গায় অশান্তির খবর মিলেছে, তাদের মধ্যে ‘অন্যতম’ কোচবিহার। জেলার দিনহাটায় বার বার বিজেপি এবং তৃণমূলের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দিনহাটার গীতালদহে গুলিতে এক জনের মৃত্যুও হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, মৃত ব্যক্তি তাদের কর্মী। এই আবহে মাত্র ৭ দিন পরে ভোট। কোচবিহারে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস কিভাবে প্রতিক্রিয়া করেন নজর এখন এইদিকেই।