অবতক খবর: নরেন্দ্র মোদীর স্বপ্নের প্রকল্প সেন্ট্রাল ভিস্তা। এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে। এবার সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা। সেন্ট্রাল ভিস্তা নির্মাণের সপক্ষে যুক্তি খাড়া করতে আসরে নেমেছে মোদী সরকার।

সরকারি সাইটে বলা হয়েছে, পুরোনো সংসদ ভবনটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার জন্য তৈরি হয়নি। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটে আসনসংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। তখন পুরনো ভবনে নতুন সদস্যদের জায়গা দেওয়া মুশকিল হবে। আরও বলা হয়েছে, সেন্ট্রাল হলে মাত্র ৪৪০ জনের বসার জায়গা আছে, যা যথেষ্ট নয়। যৌথ অধিবেশন চলাকালীন সীমিত আসনের সমস্যা প্রকট হয়। যাওয়া আসার জায়গাও কম। এর ফলে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে  বড় ঝুঁকি থেকে যায়।

ওই সরকারি সাইটে আরও বলা হয়েছে, স্থানাভাবের সাথে সাথে পুরোনো ভবনে রয়েছে জল সরবরাহ, নর্দমার লাইন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ, অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম, সিসিটিভি ক্যামেরার মত পরিষেবাগুলোর ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক সমস্যা দেখা দিয়েছে অনেক দিন ধরেই। বিভিন্ন জায়গায় জল চুঁইয়ে পড়ার সমস্যা তো আছেই। এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে সংসদ ভবনের সৌন্দর্যও। অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থার অপ্রতুলতা ঝুঁকির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, পুরনো সংসদ ভবন স্থাপিত হয়েছিল ১৯২৭ সালে। জানা গিয়েছে, শতবর্ষ প্রাচীন হেরিটেজ হিসেবে দেখতেই আগ্রহী শাসক দল। দীর্ঘ সময় অতিক্রম করার পর এই ভবনে জরুরি ভিত্তিতে বেশ কিছু সংস্কারও হয়েছে। তারপরও দেখা যাচ্ছে পুরনো সংসদ ভবনে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে বলে সংবাদ সরকারি সূত্রে। সরকারের মতে, পুরোনো সংসদ ভবনে বর্তমানে দেখা দিয়েছে স্থানাভাব। বহু প্রয়োজনীয় সুযোগই নেই এখানে, সেই কারণেই নতুন ভবন নির্মাণের ভাবনা ছিল আগে থেকেই। অত্যাধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবস্থাও সঠিক ভাবে লাগু করা যাচ্ছিল না পুরোনো ভবনটিতে।

অন্যদিকে, দিল্লিতে ভূমিকম্পের প্রবণতা বৃদ্ধিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে। পুরনো সংসদ ভবনটি নির্মাণের সময় দিল্লি সিসমিক জোন দুইয়ের অন্তর্গত ছিল, যা বর্তমানে সিসমিক জোন চারে অবস্থান করছে। ফলে কাঠামোগত নিরাপত্তার দিক থেকে নতুন টেকসই ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা ছিল, এমনটাই জানা যাচ্ছে সরকারি ওয়েবসাইট থেকে। তবে এত যুল্কতি দেওয়ার পরেও বিতর্ক থামার নাম নেই। প্রশ্ন উঠছে দেশের কোটি কোটি মানুষ যেখানে কর্মক্ষেত্রে বা বাসস্থানে নিরাপত্তাহীন কষ্টকর জীবন কাটাচ্ছে, সেদেশে এক বিপুল খরচে সেন্ট্রাল ভিস্তা নির্মাণ কি আদেও যুক্তিযুক্ত! এই প্রশ্ন মাথায় নিয়েই এবার থেকে বর্ষা বা শীতলকালীন অধিবেশন বসবে সেন্ট্রাল ভিস্তাতেই।