শ্মশান কুণ্ড
তমাল সাহা

ছোট বোন জানতে চেয়েছে,
লেখা ডিলিট করেছ কেন! তোমার কী কোনো ভয় করছে এই শাসককে?
আমি শুধু জানিয়েছি, জানিনা।

জানিয়েছি, এই খরতপ্ত রৌদ্রে তাপমাত্রা সহ্য করার শক্তি অর্জনের চেষ্টা করছি মাত্র।
আমি শুধু ধরে আছি আগ্নেয় পাত্র।

হালিশহর নান্না হাসপাতালের কাছে গিয়েছিলাম এক আত্মীয়ার শ্রাদ্ধ বাড়ি।
ক্ষমা করবেন, বিশেষ আত্মীয় বা আত্মীয়া বলে কিছু নেই। সব মানুষই আমার আত্মীয়।
কাকে ধরি আর কাকে যে ছাড়ি!

এবার সেখান থেকে ছুটে চলেছি নটবর ঘাটে।
দাহঘাট আমি ছাড়তে চাই কিন্তু সে কী আমাকে ছাড়ে!
আর এক আত্মীয়া মারা গেছে।
বসে আছি ছিন্নমস্তা মন্দিরের কাছে
ঝুরিমূল নামা ঝাপড়া বট গাছের নিচে
যতক্ষণ না তার দেহ পোড়ে।

জীবনে প্রথম ভালোবাসা হয়েছিল রুমিদির সাথে।
রুমুদি চোখে জল, আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল,তমু! আর কোনদিনও যাবি না গোরস্থানে। কবর খোঁড়া আর দেখবি না, যাবি না শ্মশানখোলায়।
পারিনি, পারিও না তার কথা রাখতে।
রুমুদির মুখখানি এখনো আমার চোখের তারায়!

শ্মশানঘাটে বসে আছি।
মাথায় রৌদ্রের তাপ, পেছনে জ্বলছে চিতা।
পিঠ স্পর্শ করে যায় লেলিহান আগুনের শিখা।
দ্রুত পুড়ছে নারীটি। কিছুটা অঙ্গার হয়ে গেছে দহিতা।

দক্ষিণে কালীঘাট কেওড়াতলা,বারাণসীতে মণিকর্ণিকা ঘাট
আরো সব ঘাট আমি চিনি ও জানি
আগুনই পৃথিবীর একমাত্র সত্য আমি মানি।

পিছনে অগ্নিকুণ্ড,
সামনে বয়ে চলে ভাগীরথী জল ….
নটবরঘাট ডাকে আমায়,
চরৈবেতি! চরৈবেতি! এগিয়ে চল!