রজত জয়ন্তী বর্ষের কল্যাণী বইমেলা।
শহরতলিতে এই বইমেলা এক ইতিহাস রচনা করতে চলেছে।
নদিয়া জেলার এই বইমেলায় উল্লেখযোগ্য ভাবে অংশ নিচ্ছেন বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগণার কবি- গল্পকারেরা। অন্যান্য জেলার সাহিত্যিকদের উপস্থিতিও নজরে পড়ছে।

এখন রাত সাড়ে নটা।বইমেলার বই ও মানুষের গন্ধ মেখে ফিরে এলাম।
বইমেলার ময়দান থেকে বলছি

বিধ্বস্ত সংলাপ
তমাল সাহা

এক)
তূণ

আমার স্কন্ধে বাঁধা আছে
শব্দবাণ ভর্তি এক তূণ।
এক একটি তীর নিক্ষেপ করি
নির্দিষ্ট চাঁদমারি আমার।
প্রতিটি বাণ তীব্র বেগে ছুটে যায়
মুখে নিয়ে লেলিহান আগুন!

দুই)
নিষাদ

আমি চোখ নিবদ্ধ রাখি
চারিদিকে দেখি শোক দুঃখ বিষাদ।
ভারত ভূমি আমার জন্মভূমি–
আমি এক অরণ্যচারী
পাহাড় সমতল সর্বত্রগামী।

আমি এক ব্যাধ–বৈদিক নিষাদ!

তিন)
ভাষা ও ভালোবাসা

মানুষ! মানুষ! মানুষ!
এছাড়া আমার নেই কোনো ভাষা।
আমার সম্পদ বলো আর অস্ত্র যাই বলো
সে শুধু এক-বুক ভালোবাসা।

চার)
সমিধ

হে প্রিয় জন্মভূমি!
আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।
তাই তোমাকে ছেড়ে হতে পারিনি
গৈরিক সন্ন্যাসী।

এখন আমি অক্ষর সাজাই
সমিধ কুড়াই
সাগ্নিক পুরোহিত, বনবাসী–
অগ্নিক্ষরা এক শব্দ সন্ত্রাসী!

পাঁচ)
দোকানদার

একজন দোকানদার
বেশ বয়স হয়েছে,
খুলেছেন ছোট্ট একটি বইয়ের স্টল।
আমি বলি,
এমন বই আছে, যে বই পড়লে জানা যাবে
রুটি জোগানোর কৌশল?

বয়স্ক দোকানদার
আমার দিকে তাকায়।
বলে, দেখুন ঘুরে ফিরে আমার দোকান
যদি তেমন কোনো বই খুঁজে পেয়ে যান!

আমি পেয়ে যাই,
আসল কথাশিল্প-জীবনশিল্প—
লড়াই,
দেশ-বিদেশের মুক্তিযুদ্ধের বই।
এতো বই! মাভৈঃ মাভৈঃ!

দোকান তো ছোট্ট,
এতো দেখি বারুদভর্তি স্টল!
বইয়ের ভেতরে অগ্নিক্ষরা অক্ষর
প্রচ্ছদে আঁকা পিস্তল।