বাসা ভাঙলো কার
তমাল সাহা

গার্ডেনরিচ শব্দটি শুনতে ভালো, তার অর্থ আরো ভালো। গান্ডেনরিচে ফতেপুর নামে একটা এলাকা ছিল। এলাকাটা ঘিঞ্জি ছিল।
ঘিঞ্জি এলাকায় একটা বস্তি ছিল। বস্তিতে টালির ছাদওয়ালা নিচু নিচু অনেক ঘর ছিল। ঘরের ভেতর দিন আনি দিন খাই অনেক মানুষ ছিল।

বস্তির পাশে একটা পুকুর ছিল। পুকুর থাকলেই সেখানে জল থাকতেই হবে তার কোনো মানে নেই। ভরাট করতে হবে। ভরাট মানে বোজানো হয়েছিল। বোজানো হয়েছিল মানে ফ্ল্যাট হবেই।
চার ফুট রাস্তার ধারে পাঁচতলা ফ্লাট হওয়াই স্বাভাবিক। তার থেকে অনিবার্য শব্দটা বসানোই ভালো।

পুকুর ভরাট মানেই প্রোমোটার ছিল। প্রোমোটার মানেই পৌরসভা ছিল। পৌরসভা মানে কাউন্সিলর ছিল। কাউন্সিলর ছিল মানে কাটমানি ছিল। তার মানে
কাটমানি থেকে প্রো-প্র-পৌ একটা মালা গাঁথা হয়ে গেল। বহুতল উঠতে থাকলো তো উঠতেই থাকলো। গাঁথুনি পর গাঁথুনি উঠে গেল।সিমেন্টের এত জোর সুতরাং বালি বেশি ছিল।
বালি বেশি মানেই বহুতল হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে গেল। পড়বি তো পড় বস্তির ছাউনির উপরেই পড়! তার উপর তখন মাঝরাত।
বহুতল মানে তলায় বস্তির বহু মানুষ চাপা পড়ল। চাপাপড়ার সঠিক কাজ চাপাপড়া ঠিকঠাক মতোই করলো।
হারাধনের দশটি ছেলের কবিতার মতো নটি ছেলে বেমালুম মরে গেল।

প-য়ের কাণ্ডকারখানা দেখে ম-য়েদের মধ্যে শোরগোল উঠলো।
কাদের মদত ছিল! কাদের মদত ছিল! রব উঠলো।
মেয়র মন্ত্রী গর্জে উঠলো।
মানুষ যেন আর মরে না।মরেছো তো কী হয়েছে? মারাত্মক মেজার নেবো,অ্যাকশন নেবো, মৃতশ্রী দেবো।

বাতাস বলে,
বহুতল নয় ভেঙে পড়ল, কত মানুষের বাসা ভাঙলো বলতো!