বিনয় ভরদ্বাজ , অবতক খবর : চাকরি দুর্নীতি মামলায় যেভাবে একের পর এক তৃণমূল নেতা নেত্রীদের নাম প্রকাশ্যে আসছে এবং তাঁদের ঠিকানা থেকে যখের ধন উদ্ধার হচ্ছে তাতে সব দিক থেকে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল সরকার। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চাপ সামলাতে পারছেন না। তিনি মাঝে মধ্যেই খেই হারিয়ে ফেলছেন।

এদিকে চোর ধরো জেলে ভরো স্লোগান দিয়ে রাজপথ ভরাচ্ছে বিরোধীরা। প্রতিদিন বিচারপতিদের রায়ে বিধ্বস্ত হচ্ছে শাসক গোষ্ঠী। কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে শিক্ষকদের চাকরি। আর রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছেন যোগ্য চাকরি প্রার্থীরা। ঘুষ দিয়ে শিক্ষক পদে বসে রয়েছেন অশিক্ষিত তৃণমূলের ক্যাডাররা। অন্ধকারে ঢেকে রয়েছে রাজ্যের ভবিষ্যত। বাংলার মানুষের কাছে বিশ্বাস হারাচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার।

ইতিমধ্যেই এই কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী অর্পিতা। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে বস্তা বন্দি কয়েক কোটি টাকা। শান্তি প্রসাদ সিনহা, মানিক ভট্টাচার্য, সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, প্রদীপ সিংহ, প্রসন্ন রায়, বাগদার রঞ্জন ওরফে চন্দন, কুন্তল ঘোষ, শান্তনু ও তার ব্যবসায়ী বন্ধু অয়ন শীল কে গ্রেফতার করেছে সি বি আই। তাঁদের কাছ থেকেও উদ্ধার হয়েছে বিপুল টাকা ও সম্পত্তি। রোজ সামনে উঠে আসছে নতুন নতুন নাম।

ইতিমধ্যেই কোর্টের নির্দেশে চাকরি গেছে প্রায় ৫০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের। বিরোধী দলনেতা বিধানসভায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল বিধায়ক, মন্ত্রীদের চোর বলছেন। জেলে ঢোকানোর হুমকি দিচ্ছেন। এর মধ্যে রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারীকের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপি নেড়ি ফাল্গুনী পাত্র। রাজ্যের শাসকদলকে নতুন বিড়ম্বনায় ফেলতে চলেছেন বিজেপির রাজ্য সম্পাদিকা ফাল্গুনী পাত্র। ফাল্গুনী দেবী রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী কমিশনের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।

তার দাবি , ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে যে যে বুথে এই অভিযুক্ত শিক্ষকরা প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন সেই সব বুথ চিহ্নিত করে সেখানে নতুন করে নির্বাচন করানো হোক। তাঁর দাবি কোর্টের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে তাঁরা যোগ্যতার নিরিখে চাকরি পাননি। তাঁরা শাসকদের দালাল।

 

তাই তাঁরা তৃণমূলকে জেতানোর জন্য অসৎ পথ অবলম্বন করেছেন। নির্বাচন আধিকারী ফাল্গুনী দেবীর অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে। তবে এখানেই প্রশ্ন, এই ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে রাজ্যবাসীর অবশিষ্ট ভরসা এই সরকার বা শিক্ষক, কর্মচারীদের উপরে থাকবে কি?