অবতক খবর,২১ জুলাই: লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে বীজপুরের কর্মীদের মধ্যে বাড়ছে ততই বিড়ম্বনা। কারণ ব্যারাকপুর লোকসভার রাজনীতি একটি বড় প্রভাব ফেলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। বিশেষ করে বীজপুরের রাজনৈতিক দলের কর্মীদের এখন প্রায় দমবন্ধ অবস্থা। কে কখন নেতা হয়ে যাচ্ছে,মঞ্চে উঠে বসে পড়ছে,তা দেখে রীতিমতো হকচকিয়ে যাচ্ছেন তারা।
অর্জুন সিং বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার পর নেতা-কর্মীরা তৃণমূলে আসতে শুরু করেছিল। সেই সময়ে দেখা গিয়েছিল পার্থ ভৌমিক এবং অর্জুন সিংকে একসাথে দলের হয়ে কাজ করতে। একসাথে তাঁরা প্রকল্পগুলিও উদ্বোধন করেছেন।

কিন্তু বর্তমানে দুজন দুজনের প্রতিদ্বন্দ্বী। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বী বলা ভুল হবে, তাঁরা এখন দুজন দুজনের শক্র।
তবে এখন দেখা যাচ্ছে অর্জুন পন্থী যারা ছিলেন অর্জুন সিং বিজেপিতে আসার পর তাঁর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।
অথচ যারা অর্জুনপন্থী হওয়া সত্ত্বেও বিজেপিতে এখনো পর্যন্ত যাননি তাদেরকে তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক বুঝিয়ে সুুঝিয়ে দলে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কয়েকদিন আগেই ছিল তৃণমূলের কর্মীসভা। আর সেই কর্মী সভাতেও দেখা গেল এক অন্য চিত্র।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,’বর্তমানে তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক বীজপুরে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন শুভ্রাংশু রায়কে। শুভ্রাংশু রায় বীজপুরের দুবারের বিধায়ক ছিলেন। মানুষ তাঁর উন্নয়ন দেখেছেন। সেই উন্নয়নকে পালিশ করেই বর্তমানের নেতারা মানুষকে দেখাচ্ছেন। শুভ্রাংশু রায়ের অধিকাংশ ফলক উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে স্থান পেয়েছে বর্তনাম নেতাদের নাম। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, সাংসদ অর্জুন সিং-এর তহবিলের টাকায় হাজিনগর মাজারের উন্নয়ন হয়েছে, সেই ব্যানার কেউ বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। আর এই নিয়ে সেখানকার মুসলিম ভাইয়েরা প্রতিবাদ করেছেন। এই তো বীজপুরের অবস্থা! উন্নয়ন করছেন একজন আর নাম হচ্ছে অন্য একজনের।’

এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে নতুন এক গুজব। গোটা বীজপুর জুড়ে কানাঘুষো চলছে যে,বীজপুরের এক নেতা খুব শিগগিরই দল পরিবর্তন করতে চলেছেন। বর্তমান নেতারা এই লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রাক্তন নেতাদের যেভাবে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন তাতে মানুষের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তবে বীজপুরের এক যুব নেতাকে সেইভাবে আর দেখা যাচ্ছে না।

কয়েকদিন আগে যেমন কর্মীসভায় দেখা গেছে পার্থ ভৌমিকের পাশে শুভ্রাংশু রায়,শুভাংশুর পাশে সুবোধ অধিকারী, কিন্তু এই যুব নেতাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।‌অথচ এই যুব নেতা কাঁচরাপাড়ার বাসিন্দা।

এদিকে সিপিএম নেতৃত্বরা বলছেন,’এরা তো বিজেমূল। এদের মধ্যে কোন ফারাক নেই। তারা যেই দলেই থাকুক,বিষয়টা একই দাঁড়ায়। কারণ কিছুদিন আগেই অর্জুন সিং কাঁচরাপাড়ায় এত বড় একটা মিছিল করল কিন্তু তার পাল্টা তৃণমূল করতে পারল না। অথচ তার পাল্টা আমরাই দিলাম। এর মানে তৃণমূল সুযোগ করে দিচ্ছে বিজেপিকে।’

ওদিকে আবার বিজেপি নেতারা বলছেন,’তৃণমূলের বড় বড় নেতারা আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। কারণ তৃণমূল নেতাকর্মীদের দলে রাখতে খোদ পার্থ ভৌমিককেই বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি তাদেরকে প্রলোভন দেখাচ্ছেন। অপেক্ষা করুন,এখনো দেখার অনেক কিছু বাকি।’

তবে যা রটে তার কিছু তো বটে! বীজপুরের মানুষের মুখে যেটা ঘুরছে তা কিছুটা হলেও সত্যি যে,তৃণমূলের কিছু নেতৃত্বরা বিজেপির সাথে যোগাযোগ রাখছেন। সেই সকল তৃণমূল নেতাদের নামও উঠছে কিন্তু কেউ প্রমাণ দেখাতে পারছে না। সবাই শুধু বলছেন,ওমুক নেতা অর্জুন সিং-এর সাথে যোগাযোগ রাখছেন। আর তা পার্থ ভৌমিক জানতে পেরে তাকে বা তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন।

কে কোথায় কার সাথে যোগাযোগ রাখছেন,কে কোথায় কি প্রলোভন দেখাচ্ছেন,কে সেটিং করছেন সমস্ত আপডেট আমরা আমাদের সমক্ষে তুলে ধরব। চোখ রাখুন অবতক খবরে….