অবতক খবর,২১ এপ্রিল: হালিশহর ১৪ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডটি নির্বাচনের সময় থেকেই বেশ চর্চায় রয়েছে। এই ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন নব প্রজন্মের শিক্ষিত একজন মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস। তিনি নিজে যেমন শিক্ষিত, সেই শিক্ষা দিয়েই পাল্টে ফেলতে চান নিজের ওয়ার্ড তথা এই সমাজকে। কিছুদিন আগেই দেখা গিয়েছিল ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ তিনি বন্ধ করিয়েছেন। কিন্তু এখন সেই ১৪ নম্বর ওয়ার্ডেই পুকুর ভরাটের গুরুতর অভিযোগ উঠে এলো। শুধু তাই নয়, সেই অভিযোগ উঠল যুবা কাউন্সিলরের এক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সহ কর্মীর বিরুদ্ধে।

তিনি নাকি কাউন্সিলরের নাম ভাঙিয়ে ওই ওয়ার্ডে একটি পুকুর ভরাট করছেন। হালিশহর ১৪ নং ওয়ার্ড দেশবন্ধু ক্লাব শনি মন্দিরের পেছনের একটি পুকুর ক্রমে ক্রমে ভরাট হয়ে চলেছে। আর এতে ক্ষুব্ধ ওয়ার্ডবাসী।
তারা জানাচ্ছেন যে, কাউন্সিলর তাদের কথা দিয়েছিলেন সেখানে ড্রেন তৈরি করে দেবেন। ড্রেন তো দূরের কথা, তারই সঙ্গী এখন পুকুর ভরাট করে চলেছে। ফলত, ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে গিয়ে ড্রেনের জল ঘরে ঢুকে পড়ছে। আমাদের এই সমস্যার সমাধান করবে কে? কাউন্সিলরের সঙ্গীই যদি এই কাজ করে, তবে আমরা অভিযোগ জানাবো কার কাছে? আমাদের সমস্যা আরো বাড়িয়ে এখন পুকুর ভরাট হয়ে চলেছে।

ওয়ার্ডবাসী বিজেপি বিধায়ক সুবোধ অধিকারীকে এই দিকে নজর দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। এই একটি পুকুরের জন্য সমস্ত ড্রেনের জল মানুষের বাড়িতে ঢুকে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও এই পুকুর ভরাট হয়ে চলেছে। কার মদতে, কোন সাহসে এই কাজ চলছে তা সকলেই জানেন।

বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী সর্বদাই পুকুর ভরাটকারীদের বিরোধিতা করেন। তিনি পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পুকুর পুনরুদ্ধারও করেন এবং সকলকেই কড়া বার্তা দিয়েছেন এ বিষয়ে। কিন্তু বিধায়কের কথার কোনো তোয়াক্কা না করেই একের পর এক পুকুর ভরাট হয়ে চলেছে হালিশহর কথা বীজপুরে। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই মাফিয়ারা কিভাবে এতো সাহস পাচ্ছে? অদ্ভুত একটা পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে এই বীজপুর জুড়ে।

শুধু একটি নয়,অভিযোগ এসেছে এই ওয়ার্ডে মোট দুটি পুকুর ভরাট হয়ে চলেছে। কিন্তু কোন ভ্রুক্ষেপ নেই কাউন্সিলরের। নির্বাচনের আগে তিনি বলেছিলেন যে তিনি দুয়ারে কাউন্সিলর পরিষেবা শুরু করবেন, মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাবেন। মানুষের দুয়ারে দুয়ারে তো তিনি যাচ্ছেন, কিন্তু কোনভাবেই হয়তো এই পুকুরগুলো তার নজরে আসছে না। এদিকে এ পুকুর গুলির দিকে কুনজর পড়ছে তাঁর সঙ্গীদের। আর দেখতে দেখতে পুকুর ভরাট করে ফেলছে। সাদা বালি দিয়েই পুকুর ভরাট চলছে। রাস্তাঘাটে পড়ে থাকছে সাদা বালি। এই গরম এবং শুষ্ক আবহাওয়ায় সেই সাদা বালি মানুষের ঘরবাড়িতে ভরে যাচ্ছে, রাস্তাঘাট দিয়ে চলাফেরা করতে অসুবিধা হচ্ছে তাদের এই সাদা বালির কারণে।

তাদের ভয় নেই প্রশাসনের, তারা ভয় পাচ্ছেন না বিধায়ককেও। তবে কি এই ভাবেই চলবে অবাধ ভরাট? প্রশ্ন তুলেছেন ওয়ার্ডবাসী।

অন্যদিকে এই বিষয়টি নিয়ে যখন আমরা ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি,তখন তিনি বলেন,এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে ঘটনাস্থলে আমি নিজে গিয়ে বিষয়টি দেখব।

অন্যদিকে হালিশহর ১৩ নং ওয়ার্ডেও একটি বড় পুকুরের একাংশ ভরাট হয়ে বাড়ি তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাকি যে জলাশয় টুকু রয়েছে, সেটিকে ওই বাড়ির মালিক ডোবা বলে চালাচ্ছেন এবং কাগজপত্র দেখতে চাইলে সেটিও দেখাচ্ছেন না।

শুধু তাই ন,য় এই ভাবে ভরাটের প্রশ্ন তুললে তারা বলেন, আমাদের সব সেটিং হয়ে রয়েছে।

এখন প্রশ্ন,কি এই সেটিং? কার সাথে সেটিং? তবে কি এই ভাবেই সেটিং করে একের পরে এক জলাশয় হারিয়ে যাবে হালিশহর থেকে?