রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া ::     ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম হলেও, হাওড়া জেলাতেও পালিত হল শাসক দলের ২১ শে জুলাই।আজ বর্তমান শাসক দলের শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠান। এই সভা থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে রাজনৈতিক কর্মসূচির রূপরেখা টেনে দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বক্তব্য শোনার জন্য জায়গায় জায়গায় বসেছে জায়েন্ট স্ক্রিন, পাড়ার মোড়ে মোড়ে লাগানো হয়েছে মাইক।

করোনা আবহ আর সভা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার জেরে এবার ধর্মতলামুখী নয় ‘তৃণমূলের জনস্রোত’। যে দিনটায় বিরোধীদের মনবলে ধাক্কা দিতে আর নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে কাতারে কাতারে ভিড় তৃণমূলের পতাকা হাতে এগিয়ে যায় হাওড়া স্টেশন, শিয়ালদহ স্টেশন, হাওড়া জেটি, এবং সর্বোপরি হাওড়া ব্রিজ ধরে। কিন্তু এবার আর পুনরাবৃত্তি হলো না সেই ছবির। সবা হলেও তা যেমন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে হল, তেমনই হল আগামীর স্ট্রাটেজি ঠিক করে দেওয়াও। কিন্তু ২১ জুলাইয়ের রাস্তা এবার যেন ‘জনশূন্য’। এমনটা যে হতে পারে কখনও তা হয়ত ভাবেননি তৃণমূলের কোনও দলীয় নেতা কর্মীই।

যে হাওড়া স্টেশন একদিন আগে থাকতে মা-মাটি-মানুষের স্লোগানে গমগম করে উঠতে প্রত্যেক লোকাল এবং ইন্টারসিটি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি এবার সম্পুর্ন আলাদা। শুনশান শতাব্দী প্রাচীন স্টেশনটা। একই ছবি রাজ্যের আরও একটি ব্যস্ত স্টেশন শিয়ালদাতেও। শুধু তাই নয়, ২১ জুলাইয়ের ‘বাদুড় ঝোলা’ লঞ্চগুলিও আজ পুরোটাই ফাঁকা। গুটিকয়েক যাত্রী নিয়েই পড়ি দিচ্ছে নিজের গন্তব্যে। হাওড়া ব্রিজে নেই কোনো মিছিল, নেই ৬০ কিংবা ৭০ ফুটের তাক লাগানো তৃণমূলের পতাকা।

গোটা ছবিটাই ২১ শে জুলাইয়ের অন্য বারের সঙ্গে এক্কেবারে আলাদা। যদিও, এইবারের ২১ শে জুলাই তৃণমূলের কাছে রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের শেষ সব থেকে বড় মঞ্চ। সেই সঙ্গে শহীদ তর্পনের কর্মীসূচি। কিন্তু করোনার কারণে সবটাই থমকেছে। পড়ার বিভিন্ন জায়গায় কিংবা তৃণমূলের পার্টি অফিস গুলো সামনে ছোট ছোট স্ক্রিনের সামনে চোখ রেখে তৃণমূলের কর্মীরা বসে থাকলেও নেই অন্যান্য বারের মত সেই উদ্দীপনা। যে ভোটকে কেন্দ্র করে আগামী রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হতে পারে তার আগে একুশে জুলাই এর মঞ্চ না পাওয়া কতটা ব্যাকফুটে’ ঠেলতে পারে তৃণমূলকে তা হয়তো বলবে সময়। কিন্তু কলকাতার প্রবেশদ্বারের ২১ শে জুলাইয়ের এমন জনশূন্য ছবি যে একটা আলাদা ছাপ রাখবে তা বলাই বাহুল্য।

প্রসঙ্গত বিজেপির ভার্চুয়াল সভা নিয়ে রাজ্যের শাসক দল কটাক্ষ করলেও তারাও বিজেপির দেখানো পথেই হাঁটলো বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মোহল।