অবতক খবর,২৯ এপ্রিল: লোকসঙ্গীতের ঐতিহ্যমন্ডিত মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে এবার একজন শিক্ষিকা দুই বাংলার মাটির গান নিয়ে নিজের শহরের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলার লোকগান শোনাতে যাচ্ছেন সুদূর ফ্রান্সের রাজধানী পৃথিবী বিখ্যাত শহর প্যারিসে। অনামিকা তরফদার বাংলা লোকগানের একজন পরিচিত শিল্পী হলেও পেশাগত দিকে তিনি একজন স্কুল শিক্ষিকা। বহরমপুর শহরের জে এন একাডেমি (প্রাতঃ বিভাগ) স্কুলের এই শিক্ষিকা আগামী মে মাসের ২ তারিখ তার লোকগানের সম্ভার নিয়ে চলেছেন পৃথিবী বিখ্যাত শহর প্যারিসে, সেখানে বসবাসকারি ওপার এবং এপার দুই বাংলার বাঙালি এবং অসমীয়া মানুষজনের সামনে “বেঙ্গলি আসামিজ কমিউনিটি” -র আমন্ত্রণে।

আগামী ৪ঠা মে সন্ধ্যায় প্যারিসের বিখ্যাত ‘লে ট্রেভান্ডো’ আন্তর্জাতিক মিউজিক কনসার্ট অডিটোরিয়ামে লাইভ মিউজিক কনসার্টে বেঙ্গলি আসামিজ কমিউনিটি গ্যাদারিং এ থাকছে শিল্পী অনামিকা তরফদারের ঘণ্টা খানেক লোকগানের অনুষ্ঠান। দীর্ঘ দুটো বছর করোনার প্রকোপে সারা বিশ্বের মানুষ যখন ঘরবন্দী ছিলেন সেই সময় ঘরবন্দী এই সব মানুষজনের মানসিক অবসাদ কাটাতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নানান গান পরিবেশন করতেন ।

এই রকম কিছু অনুষ্ঠান থেকেই প্রবাসীরা খুঁজে পান এই লোকগানশিল্পীকে। তখন থেকেই তাদের আগ্রহ ছিল এই শিল্পীর অনুষ্ঠান সামনে থেকে উপভোগ করার। করোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই প্যারিসের বাংলা লোকগান প্রেমী মানুষদের এই অভাবনীয় আমন্ত্রণ। শিল্পীর এই প্রথম বিদেশ যাত্রার সঙ্গী লোকগান হলেও একটা সময় শিল্পীর সঙ্গীত চর্চা সীমাবদ্ধ ছিল একমাত্র রবি ঠাকুরের গানের জগতে।বিগত কয়েক দশক ধরে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চার সুফলও মিলেছে যথেষ্ট । ।

শুধু তাই নয়,এক বিখ্যাত সঙ্গীত বিষয়ক পরীক্ষা নিয়ামক সংস্থার সর্বোচ্চ বর্ষের পরীক্ষায় ২০১২ সালে সারা দেশের মধ্যে রবীন্দ্রসঙ্গীত বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে প্রথমস্থান অধিকারের স্বীকৃতি স্বরূপ অষ্টম বর্ষের ওই পরীক্ষায় স্বর্ণপদক প্রাপ্তি শিল্পীর কাছে এক বিশেষ গর্বের বিষয়।দীর্ঘদিন থেকেই রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং শাস্ত্রীয়সঙ্গীত চর্চা জারি থাকলেও বিগত ৫/৬ বছর থেকেই মাটির গন্ধ মাখা দুই বাংলার লোকসংগীতের সাথে নিজেকে ওতোপ্রত ভাবে জড়িয়ে ফেলেছেন এই শিল্পী।

পরিবারের সহায়তা পেয়েছেন যথেষ্টই। মেয়ে পৃথা তরফদার এবছর উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছে। পরীক্ষার পর লম্বা ছুটি তার মধ্যে মায়ের সাথে প্যারিসে যাত্রা তার কাছে বার্তি খুশী সংযোজন৷ স্বামী পেশায় স্কুলের এ.আই। স্ত্রীর সাথে মাঝে মধ্যেই এসরাজ নিয়ে বসেন। উনি সুর দেন স্ত্রী ওনার সাথে সুর মেলান। তিনজন মিলে এক মফস্বল থেকে বিদেশের মাটিতে জগৎ বিখ্যাত শহরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এরকম এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন যা ওনাদের জীবনে সত্যিই অভাবনীয়।লোকগানশিল্পীর এরকম সাফল্য আগামী দিনে এই জেলার অনেক শিল্পীর কাছে অনুপ্রেরণা যোগাবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।