অবতক খবর: ১৯ বছর আগে এরকম এক আগস্ট মাসে স্বাধীনতা দিবসে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছিল ‘ধর্ষক’ ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে। সেই মৃত্যুদণ্ড নিয়ে আজও বিতর্ক রয়েছে। ধনঞ্জয়ের পরিবারের প্রতি সমব্যথীরা পুরো বিষয়টির জন্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তাঁর স্ত্রী মীরাদেবীর প্রভাবকে দায়ী করে থাকেন। প্রায় দু’দশক পর সেই ঘটনাকে টেনে নাম না করে অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিশানা করলেন কবীর সুমন। ফেসবুকে পোস্ট করা কবিতায় কার্যত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যু কামনা করা হয়েছে বলে মত নেটিজেনদের একাংশের। আর এই পোস্ট ঘিরেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা কবিতায় ধনঞ্জয়ের ফাঁসির প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন সুমন। তাঁর অভিযোগ, ‘গরিব বাঙালি’ যুবককে স্রেফ পারিপার্শ্বিক তথ্য় প্রমাণের ভিত্তিতে ফাঁসিকাঠে ঝোলানো হয়েছে। আর সেই কাজে ফাঁসুড়ে নাটা মল্লিকের মতোই ‘দোষী’ ছিলেন ‘মীরাবাঈ’। উল্লেখ্য, ধর্ষণ কাণ্ডে ধনঞ্জয়কে শাস্তি দিতে সেই সময় পথে নেমেছিলেন বুদ্ধবাবুর স্ত্রী তথা সমাজকর্মী মীরা ভট্টাচার্য। ফাঁসির সাজার পিছনে তাঁর আন্দোলনের প্রভাব ছিল বলে মনে করে ওয়াকিবহাল মহল। এদিন নাম না করে সেই খোঁচাই দিয়েছেন শিল্পী। বুদ্ধবাবুর নাম না করে ‘প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে’ বলেও কটাক্ষ করা হয়েছে কবিতায়।

শুধু ধনঞ্জয় প্রসঙ্গ নয়, সুমনের লেখায় উঠে এসেছে নন্দীগ্রাম, হাজরা মোড়ে তৎকালীন কংগ্রেস যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নৃশংস মারধরের কথাও। নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কি সেই সমস্ত স্মৃতি মনে পড়ছে? তোলা হয়েছে প্রশ্ন। এমনকী, জীবন সায়াহ্নে সেই মমতার নেতৃত্বাধীন রাজ্য় সরকারই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে সরকারি সম্মান ও গান স্যালুট দেবে বুঝেই আজ তাঁকে দেখে হাত নাড়াচ্ছেন বুদ্ধবাবু। সেই অনুষঙ্গও কবীর সুমনের লেখায় উঠে এসেছে। নেটিজেনদের একাংশের দাবি, পরপর পোস্ট করা তিনটি কবিতাতেই বুদ্ধবাবুর মৃত্যু কামনা করেছেন শিল্পী কবীর সুমন। সবমিলিয়ে নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন ‘তোমাকে চাই’-এর স্রষ্টা।

শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গত শনিবার আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সংকটনজনক পরিস্থিতি কাটিয়ে আপাতত কিছুটা সুস্থ তিনি। আপামর রাজ্যবাসী তাঁর সুস্থতা কামনা করছে। অসুস্থতার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়েছেন। দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। এমন সৌজন্যের রাজনীতির আচমকা তাল কাটল রাজ্য়ের শাসকদল ঘনিষ্ঠ শিল্পী কবীর সুমনের ফেসবুক পোস্টে।