অবতক খবর,৩০ জানুয়ারিঃ দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদটি তাপস রায় পেয়েছেন,তার প্রায় ২ মাস অতিক্রান্ত। কিন্তু জেলা সভাপতিকে নিয়ে কর্মীদের মধ্যে সেই উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়নি। যখন জেলা সভাপতি ঘোষণা হয়নি তখন সাধারণ মানুষের তথা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে নানান প্রশ্ন,নানান গুজব চলছিল যে, কে হবেন জেলা সভাপতি! প্রথম দিকে উত্তেজনা থাকলেও শেষমেষ সেই উত্তেজনা সব ফিকে পড়ে যায়।

তাপস রায় বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু ছাত্র রাজনীতি থেকে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেস দলে বড় বড় দায়িত্ব সামলেছেন। পাশাপাশি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের সঙ্গী। তিনি কোন গোষ্ঠী বাজিতে থাকেন না। সব সময় চেষ্টা করেন সংগঠন মজবুত করার।

তবে তাপস রায় জেলা সভাপতি হওয়ার পরেই যেন কার্যত থমকে গেল দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা। তাপস রায়ের আগে যিনি জেলা সভাপতি ছিলেন অর্থাৎ বর্তমানে রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, তিনি জেলা সভাপতি হওয়ার পর শুভেচ্ছা বার্তার পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে গিয়েছিল জেলা‌। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন একাধিক ব্যক্তিত্বরা।

কিন্তু তাপস রায় জেলা সভাপতি হওয়ার পর সেইরকম কোন কিছুই তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। এর পেছনে কারণ কি, তা কিছুই পরিষ্কার নয়। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, যেহেতু তিনি একজন বর্ষীয়ান নেতা এবং কোন গোষ্ঠীবাজিতে থাকেন না, সেই কারণে অনেকেই হয়তো চেয়েছিলেন যে তাঁকে সামনে রেখে পেছনে ছড়ি ঘোরাবেন। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সেরকম কোন কিছুই হচ্ছে না। ফলত যাদের এই উদ্দেশ্য যাদের ছিল তারা তাঁকে অর্থাৎ তাপস রায়কে প্রচারের আলোতে আনতে চাইছেন না।

পার্থ ভৌমিক জেলা সভাপতি হবার পর যেভাবে তিনি জনসংযোগ করেছেন, কমিটি গঠন করেছেন একের পর এক, সবকিছু ঢেলে সাজিয়েছেন। কিন্তু তাপস রায়ের ক্ষেত্রে সেসব কিছুই দেখা যাচ্ছে না। সেই একই পুরনো কমিটি চলছে।

তৃণমূল দলের পুরনো নেতাকর্মীরা, তাপস রায়কে শুভেচ্ছা জানানো তো দূর, অভিনন্দন বার্তা সহকারে একটি ব্যানারও লাগাননি।

দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলায় কোথাও কোথাও এখনো নজরে আসছে প্রাক্তন জেলা সভাপতি অর্থাৎ পার্থ ভৌমিকের ব্যানার।

এ প্রসঙ্গে পূর্বে যখন অবতক খবরের পক্ষ থেকে তাপস রায়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলা হয় অর্থাৎ তাঁর কাছে প্রশ্ন রাখা হয় যে,আপনি কি জেলা সভাপতি হতে চান? উত্তরে তিনি বলেন, সমস্ত সিদ্ধান্তই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁরাই ঠিক করবেন যে কে কোন পদে থাকবেন।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে, জেলা সভাপতিকে নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন উৎসাহ উদ্দীপনা নেই।

অন্যদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। আর এই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের একটি কর্মসূচি চলছে সেটি হল ‘দিদির দূত’, এছাড়া আর কোন কর্মকাণ্ড এই দলের তেমনভাবে দেখা যাচ্ছে না।

বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে যে সকল নেতৃত্বরা দায়িত্বে রয়েছেন, তাদেরকেও জেলা সভাপতিকে নিয়ে কোন কর্মসূচি রাখতে দেখা যাচ্ছে না।

দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার রাজনীতি কেমন যেন তালগোল পাকিয়ে ফিকে পড়ে গেছে। এমনই জানিয়েছেন কিছু তৃণমূল নেতারা।

আদেও কি আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাপস রায়কে কোন দায়িত্ব দেওয়া হবে,নাকি তিনি শুধু জেলা সভাপতির পদেই থাকবেন তা সময়ই বলবে। কারণ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্বরা জানাচ্ছেন, উপর মহলের নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না।

যখন তাপস রায়কে ব্যারাকপুর ব্লক ওয়ান এর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জানানো হয় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একাধিক নেতৃত্বরা। আবার দেখা যায়নি তৃণমূলের তাবড় তাবড় নেতৃত্বদের।

এখন দেখার বিষয় যে,তাপস রায়কে কেন্দ্র করে এই দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার রাজনীতি কোন দিকে এগোয়। আর তিনিই বা কিভাবে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যান!

উল্লেখ্য,বেশ কিছু তৃণমূল নেতারা জানিয়েছেন,তাপস রায়কে হয়তো অনেকে পছন্দ করছেন না বা জেলা সভাপতি হিসেবে মেনে নিতে পারছেন না,সেটাও একটা কারণ হতে পারে ব্যানার ফেস্টুন না লাগানোর।