অবতক খবর,১৭ ডিসেম্বর,দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে গত বছর থেকেই গঙ্গাসাগরে স্নানের ক্ষেত্রে এক বিশেষ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন। এবার থাকছে আরও চমক। ই-স্নান নয়, এবারে ড্রোনের মাধ্যমেই হবে স্নান। অর্থাৎ ড্রোনের মাধ্যমে পুণ্যার্থীদের ওপর গঙ্গাজল ছিটাবে প্রশাসন।

কোভিড পরিস্থিতিতে সমুদ্রের জলে নেমে ডুব দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। জেলা প্রশাসন ও তীর্থ যাত্রীদের যতটা সম্ভব জলে না নামার জন্য প্রচার চালিয়েছিল। পরিবর্তে করোনা সংক্রমণ এড়াতে বেশ কিছু বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। যেমন ই স্নান, সমুদ্রের জল পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়ে গিয়ে অস্থায়ী বাথরূম তৈরি করে স্নানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গতবারে ই-স্নান ঘিরে পুর্ণার্থীদের আকর্ষণ তুঙ্গে উঠেছিল। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে জেলা প্রশাসন পরিকল্পনা করছে স্নানের পরিবর্তে ড্রোনের মাধ্যমে আকাশ পথে জল ছিটিয়ে তীর্থ যাত্রীদের ‘শুদ্ধিকরণ’ করাবার ব্যবস্থা করা হবে।

 

জেলাপ্রশাসন প্রতি বছর গঙ্গাসাগর মেলাতে কিছু না কিছু নতুনত্ব ব্যবস্থাপনা রাখে। নতুন বছরের গঙ্গাসাগর মেলায় আসা তীর্থযাত্রীদের এবার এই পরিষেবা দেওয়া হবে। এই নয়া পদ্ধতিতে পূর্ণ স্নানের ভিড় এড়ানো গেলেও জেলা প্রশাসন কর্তাদের দাবি, কোভিড বিধি মানার জন্য মেলা চলাকালীন লাগাতার সতর্কতা প্রচার জারি থাকবে।

জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ২০টির মতো ড্রোন নেওয়া হবে এই স্নান যাত্রার জন্য। মকর সংক্রান্তির দিন বিভিন্ন পাত্রে সমুদ্রের জল ভরে নিয়ে যাওয়া হবে কপিল মুনির মন্দিরে। সেখানে পুজো করে সেই পাত্র ড্রোনের সঙ্গে আটকে তা উড়িয়ে নিয়ে আসা হবে। একটি নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে সেখানে পুণ্যার্থীদের জড়ো করে আকাশ থেকে স্নান করানোর ব্যবস্থা করা হবে। একেকবারে ১৫০ থেকে ২০০ জন পুণ্যার্থীকে এই পদ্ধতিতে স্নান করানো যাবে বলে আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার সংক্রমণ রুখতে জমায়েত বা ভিড় আটকানোটাই প্রসাশনের লক্ষ্য। তাই যতোটা সম্ভব বিকল্প উপায়ে স্নানের ব্যবস্থা করা গেলে সংক্রমণ আটকানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা। সেই ভাবনা থেকেই এবার ড্রোনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নভেম্বরের শেষের দিক থেকে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। কিন্তু জাওয়াদের প্রভাবে নিম্নচাপ ও অমবস্যার কোটালের জোড়া ফলায় তছনছ হয়ে যায় গঙ্গাসাগরের উপকূল। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ব্যাঘাত ঘটেছে মেলার প্রস্তুতির কাজও। যত দিন যাচ্ছে, এগিয়ে আসছে সমুদ্র। দ্রুত ড্যামেজ কন্ট্রোল করে এবার অভিনব ও আকর্ষণীয় ব্যবস্থপনা করেছে প্রশাসন।