অবতক খবর,৫ জুলাইঃ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে রাতভর বসেছিল অভিযুক্ত। তার হাতে নাকি রড ছিল। ‌ মুখ্যমন্ত্রী রাতে একা কোনো কারণে ঘরের বাইরে এলেই আক্রান্ত হতে পারতেন। এমন সম্ভাবনার গল্প শোনাচ্ছে এখন বড় বড় মিডিয়ারা।

অভিযুক্ত ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তের পিতাও নানারকম কথা বলছেন। ‌ পুত্র তার মানসিক অবসাদগ্রস্ত ছিল। সে নাকি মুখ্যমন্ত্রীকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেই কারণেই নাকি সে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ করেছে। ‌

যাক, অনেক গল্প হবে, অনেক গল্পের গরু গাছে উঠবে। ‌ঘটনা ঘটে গেছে তিন দিন হল। কিন্তু কোনো মিডিয়া সরাসরি প্রশ্ন তুলছে না যে, যার জন্য এত লৌহ দৃঢ় নিরাপত্তা, সমস্ত নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা,সেই সমস্ত সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে একটি অপরিচিত ব‍্যক্তি একদম তার বাড়ির অন্দরমহলে ঢুকে গেল কি করে? লখিন্দরের বাসরঘর লৌহ দ্বারা নির্মিত হলেও বিশ্বকর্মাকে সূক্ষ্ম ছিদ্র রাখতে হয়েছিল।কালনাগিনী সেই ছিদ্রপথে প্রবেশ করেছিল। বর্তমানে ডিজিটাল যুগ, নিরাপত্তা বলয় অত্যন্ত আধুনিক। কিন্তু সেখানে কোন ছিদ্রপথের সাহায্যে অভিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়ল?

এই যে বিশাল নিরাপত্তা বাহিনী,এই যে ব্যাপক সিসিটিভির সাজ সরঞ্জামের প্রস্তুতি, মুখ্যমন্ত্রীকে রক্ষার জন্য বিশাল আয়োজন তার জন্য যে কোটি কোটি টাকা ব্যয়,এই টাকা তো ব্যয় হয় জনগণের কোষাগার থেকে। বছরের পর বছর নিরাপত্তার নামে এই যে কোটি কোটি টাকা যাদের পেছনে ব্যায়িত হচ্ছে, যারা নাকি নিরাপত্তা রক্ষায় কঠোর ভূমিকা পালন করতে পারছেন না, অর্থাৎ এই নিরাপত্তার মধ্যে ফাঁকিবাজি এবং ফাঁকফোকর রয়েছে, সেই নিরাপত্তা বাহিনীকে গ্রেফতার করা হবে না কেন? কোনো মিডিয়াই বা এই প্রশ্ন তুলছে না কেন? তাহলে এই বিশাল ব্যয় যে জলে যাচ্ছে,এর কৈফিয়ত কে দেবে? জনগণের কোষাগার জলে যাবে আর প্রশাসনিকভাবে ঢিলেমি অপদার্থতা থাকবে এটা পশ্চিমবঙ্গের জনগণ মেনে নেবে কেন?

অভিযুক্ত গ্রেপ্তার অনেক কিছু বলা হচ্ছে, গোয়েন্দা দপ্তর অনেক কিছু বলছে। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পরেই তাদের যত কৌশল বোঝা যায়,তার আগে বোঝা যায় না কেন? তাহলে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ বিভাগের প্রশাসনিকভাবে কি নজরদারি চলছে, কেন সেই প্রশ্ন উঠবে না? মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয়, তার নিরাপত্তা যখন সুনিশ্চিত নয়, তখন পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে কি নিরাপত্তা দিতে পারবে এই পুলিশ প্রশাসন? মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পুলিশ মন্ত্রী। এই অপদার্থতার দায় তো তাকেও নিতে হবে, এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি নিশ্চুপ কেন?

আরো অদ্ভুত তাঁর দলীয় কর্মীরাই বা তার এই যে দলীয় নেতৃত্ব,যিনি সর্বভারতীয় নেত্রী হতে চলেছেন, তাঁর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত নয় বলে তারাও কিন্তু আন্দোলন করছেন না,বা সরবে গর্জন করছেন না।

এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে আসলে উপরের দিকে ছুঁড়ে যাওয়া থুতু তো নিজেদের বুকের উপরেই পড়বে। ‌