অবতক খবর,১৪ মার্চঃ একমাত্র মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় ছাড়া বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের যেসকল তৃণমূলী নেতা কাউন্সিলরদের পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সুরক্ষার জন্য যে সিকিউরিটি দেয়া হয়েছিল তা প্রত্যাহার করে নিলেন পুলিশ কমিশনার। নেতা, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যানদের সুরক্ষার জন্য দেওয়া হয়েছিল ১-২ জন করে সিকিউরিটি। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনার একটি অর্ডার জারি করে সেই সমস্ত সিকিউরিটি তুলে নিয়েছে আজ থেকে । ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে মোট ৪২জনের তৃণমূলী নেতাদের সিকিউরিটি দেয়া হয়েছিল যা তুলে নেওয়া হয়েছে। সমস্ত সুরক্ষাকর্মীদের নিজ নিজ থানায় ডিউটি করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বিশেষ করে কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, নৈহাটি, ভাটপাড়া, জগদ্দল, টিটাগড়, নিমতা এই সমস্ত অঞ্চলের নেতা নেত্রীদের ১-২ জন করে সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছিল। আজ থেকে কোনো সিকিউরিটি তাদের কাছে থাকবে না। যাদেরকে সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছিল যেমন নৈহাটি পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক চ্যাটার্জী, তাঁর দুটি সিকিউরিটি ছিল। দুজনকেই তুলে নেওয়া হয়েছে। ঠিক একইভাবে সনৎ দে, নৈহাটির টাউন সভাপতি ও সিআইসি তাঁর দুটি সিকিউরিটি ছিল। সেই দুটিও তুলে নেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে নৈহাটি সিআইসি রাজেন্দ্র গুপ্তার সিকিউরিটি। এর পাশাপাশি নৈহাটির পার্থ প্রতিম দাশগুপ্তকে একটি সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছিল। সেটিও তুলে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ নৈহাটির ৪ জন যে নেতা ছিলেন, তাদের মোট ৬টি সিকিউরিটি ছিল, তা তুলে নেওয়া হয়েছে।

হালিশহর পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শুভঙ্কর ঘোষকে যে দুজন সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছিল, সেটিও তুলে নেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃত্যুঞ্জয় দাসের সিকিউরিটি। এছাড়াও সিকিউরিটি পাচ্ছিলেন আরো ২ জন। যার মধ্যে প্রাক্তন চেয়ারম্যান অংশুমান রায়, তিনিও সিকিউরিটি পাচ্ছিলেন। তাঁর সিকিউরিটিও তুলে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও হালিশহর ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অশোক যাদব খুব কম সময় ধরে সিকিউরিটি পাচ্ছিলেন, ১ জন সিকিউরিটি নিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছিলেন, সেই সিকিউরিটিও তুলে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ হালিশহর পৌর এলাকার ৪ জনকে যে সিকিউরিটি দেওয়া হয়েছিল, শুভঙ্কর ঘোষ, অশোক যাদব, অংশুমান রায় ও মৃত্যুঞ্জয় দাস। এই ৪ জনের সিকিউরিটি তুলে নেওয়া হয়েছে।

এর পাশাপাশি কাঁচরাপাড়ার ২ জন সিকিউরিটি পাচ্ছিলেন। আলোরানি সরকার তৃণমূল নেত্রী হিসেবে সিকিউরিটি পাচ্ছিলেন। তাঁর সিকিউরিটিও কিন্তু তুলে নেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে সোনালী সিংহ রায়ের সিকিউরিটি। তিনি জেলা মহিলা নেত্রী এবং ১১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে সিকিউরিটি পাচ্ছিলেন।

ঠিক একইভাবে তুলে নেওয়া হয়েছে ভাটপাড়ার বেশ কয়েকজন নেতা নেত্রীর সিকিউরিটি। ভাটপাড়ার সিআইসি অমিত গুপ্তার সিকিউরিটি তুলে নেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে প্রিয়াঙ্গু পান্ডের একটি সিকিউরিটি। তুলে নেওয়া হয়েছে জীতেন্দ্র সাউ অর্থাৎ টাউন সভাপতি জিতু বলে বিখ্যাত অঞ্চলে, তাঁর দুটো সিকিউরিটিও। এর পাশাপাশি ভাটপাড়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা অর্জুন সিং-এর ভাইপো সৌরভ সিং এর দুটি সিকিউরিটি তুলে নেওয়া হয়েছে। তুলে নেওয়া হয়েছে ১০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সত্যেন রায়ের সিকিউরিটি।

ঠিক একইভাবে জগদ্দলের প্রাক্তন বিধায়ক পরেশ বাবুর সিকিউরিটিও তুলে নেওয়া হয়েছে।

তবে সিকিউরিটি তুলে নেওয়া নিয়ে এক কাউন্সিলরকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাদেরই যদি সিকিউরিটি নিয়ে ঘুরতে হয় তাহলে জনগণের সাথে নেতা মিশবে কি ভাবে ? সিকিউরিটি নিয়ে চলাফেরা করা নেতা কাউন্সিলরদের একটা স্টাইল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিহার ইউপি’র নেতাদের মত বাংলার নেতারাও সিকিউরিটি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে চাইছেন ।এখন নেতারা তাদের স্ট্যাটাসের সিম্বল হিসেবে তা গ্ৰহণ করছেন। এই কালচার ইউ পি বিহার থেকে আমদানি করেছে এই নেতারা। তিনি আরও বলেন নিজের এলাকায় যেতে হলে যদি সিকিউরিটি নিতে হয় তাতেই বোঝা যায় যে, নেতাদের গ্ৰহণ যোগ্যতা মানুষের মধ্যে কোন জায়গায় গেছে‌।