অবতক খবর,৪ মার্চ: সত্যজিৎ রায়ের গুপি গাইন বাঘা বাইন-এর গানটা মনে পড়ে গেল-“ও মন্ত্রী মশাই,ষড়যন্ত্রী মশাই” … নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে এমনই লিখলেন ব্লক সভাপতি (স্বঘোষিত) রাণা দাশগুপ্ত।

শুধু তাই নয়, তিনি আরো লিখেছেন,কর্মীদের বোকা বানিয়ে তলায় তলায় সব সেটিং। এমপি’র সাথে সম্পর্ক রাখলে তাদের করা হয় থ্রেটিং।এই চালাকি আর কতদিন চলবে।”

আজ নৈহাটি বিধানসভায় এমপি ল্যাডের বেশ কয়েকটি রাস্তা উদ্বোধন করেন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং সাংসদ অর্জুন সিং যৌথভাবে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই রাণা দাশগুপ্তর এমন পোস্ট,তা বুঝতে আর বাকি নেই কারোর। কারণ তিনি আজকের ছবি দিয়ে মন্ত্রীকে নিশানা করে ব্যঙ্গ করেছেন।

এই যে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র, সেখানে দলেরই বিধায়করা সাংসদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন। আর বিধায়কদের অভিভাবক হলেন পার্থ ভৌমিক। বিভিন্ন মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই কথা বলেন বিধায়করাই। তবে এতকিছুর পরও মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এসব নিয়ে মুখ খোলেননি। মন্ত্রীর এই দুই বিধায়ক দিনের পর দিন সাংসদকে নিশানা করেছেন। পাল্টা সাংসদও নিশানা করতে পিছপা হননি। যদিও ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অর্জুন সিং বিজেপির টিকিটে জিতে সাংসদ হয়েছিলেন। তবে বর্তমানে তিনি তৃণমূল দলেই আছেন এবং এই দুই বিধায়ক তৃণমূল দলেরই। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় মঞ্চ বেঁধে এলাকার মানুষদের এই দুই বিধায়ক বারংবার মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁর বিজেপিতে থাকার কথা।

তাদের লড়াই তো চলছেই, তবে এইসবের মধ্যে ক্ষুব্ধ দলের সাধারণ কর্মীরা। তাদের বক্তব্য,’এটা হল দল বিরোধী কাজ। কারণ যখন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে অর্থাৎ সাংসদ অর্জুন সিংকে যখন তৃণমূল দলে বরণ করে নিয়েছিলেন তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে একাধিক মন্ত্রী-বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। যারা এখন সাংসদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন তাঁরা তো সেই সময় কোন প্রতিবাদ করেননি!তবে এখন কেন?’ সেই কারণেই এই নেতা লিখেছেন যে, ‘তোমরা করবে সেটিং, আর আমরা খাব থ্রেটিং! এটা তো চলবে না।’

স্বঘোষিত ব্লক সভাপতি রাণা দাশগুপ্ত বলছেন,উপরে উপরে সব সেটিং। এই যে বিধায়করা মুখ খুলছেন, এই মুখ খোলার পেছনে তাদের অভিভাবক রয়েছেন। তাই এদের থ্রেটিংয়ে কিছু যায় আসে না।’

গোটা রাজ্যে ব্যারাকপুরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে চর্চা চলছে। এই বিধায়কদের কথা অনেক সাধারণ কর্মীরাও মেনে নিতে পারছেন না। তাদেরও একই বক্তব্য যে, ‘প্রতিবাদ করা উচিত ছিল সেই সময়ে যে সময় সাংসদকে দলে বরণ করে নিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন প্রতিবাদ করে কি হবে! এইসব প্রতিবাদ নয়,আমাদের বোকা বানানোর কাজ চলছে।’

আর তৃণমূলের অন্দরের এই গন্ডগোলের সুযোগ নিচ্ছে বিরোধীদল বিজেপি। এইসব ইস্যুকে হাতিয়ার করে তারা চুপচাপ তাদের কাজ করছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার করছে, জনসংযোগ করছে।

এইসব দেখে বিজেপি নেতৃত্বরা বলছেন, ,এইসব হচ্ছে কামাইয়ের লড়াই। এতদিন একেকজনের কামাই এর রাস্তা ক্লিয়ার ছিল,কিন্তু সাংসদ অর্জুন সিং দলে ফিরে আসার পর তাদের কামাইয়ে বাঁধা পড়েছে তাই এই গন্ডগোল। তারপর একসময় দেখবেন সকলের নিজেদের মধ্যে সেটিং করে নিয়েছে, যে যার মত কামাই করছে, তখন এইসব গন্ডগোল আবার থেমে যাবে। এই হল তৃণমূল নেতাদের চরিত্র! মানুষ সব বোঝে, আর মানুষ এর জবাব দেবে লোকসভা নির্বাচনে।’