অবতক খবর , উত্তর দিনাজপুর :      ইসলামপুর মহকুমার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত মানুষদের ক্ষয় ক্ষতি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন ব্লকের একাধিক গ্রামে গ্রামে নেমে পড়লেন জেলার উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিকরা। জেলাশাসক থেকে শুরু করে মহকুমা শাসক, বিডিও এবং অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা সোমবার খতিয়ে দেখলেন এই পরিস্থিতি।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষরা তাদের কাছে এদিন ত্রাণের দাবি জানিয়েছেন। একটানা বর্ষণে সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটেছে চোপড়াতেই। সেখানের মৃধা বস্তি এলাকায় কালভার্ট ভেঙ্গে ঢুকে পড়েছে জল। ভেঙে গিয়েছে রাস্তা ।বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা।।এবং হাঁসখালিতে ধানের জমি জলের তোড়ে কেটে গিয়ে দীর্ঘ এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ক্যানেল। এদিন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জেলা শাসকের সামনে তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।

উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা জানান, যে এজেন্সি রাস্তার কাজ করেছে তাদেরকে রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে শীঘ্রই ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে বিডিওকে বলা হয়েছে প্রাথমিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। খুব শীঘ্রই এস্টিমেট তৈরি করে ওই কাজগুলো শুরু হয়ে যাবে ।যাতে সাধারণ মানুষ কোন অসুবিধার সম্মুখীন না হন। জলমগ্ন এলাকার সমস্ত মানুষদের মধ্যে ত্রাণ বন্টন করতে পেরেছেন কিনা, এ প্রশ্নের উত্তরে জেলাশাসক জানান, রাজ্য সরকার পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্যবস্থা করেছেন এবং মহকুমা শাসক ও বিডিওকে বলা হয়েছে প্রয়োজন অনুযায়ী তা সরবরাহ করার জন্য। যেখানে যেখানে লাগবে সেখানে সেখানে যাতে ত্রাণ পৌঁছে যায় সে বিষয়ে তাদেরকে বলা হয়েছে। তবে চোপড়া ব্লকের থেকে ত্রাণ লুট হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

জেলাশাসকের বক্তব্য, কোথায় কোথায় জলমগ্ন এলাকা তা ঘুরে দেখেছি। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা এর মাধ্যমে কালভার্ট নির্মাণ হবে এবং মহাত্মা গান্ধী জাতীয় কর্ম নিশ্চয়তা প্রকল্পের মাধ্যমে ভেঙে যাওয়া রাস্তা নির্মাণ হবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি জমি কেটে যে ক্যানালের মত রূপ নিয়েছে সে বিষয়ে তিনি বলেন ,যাদের জমি গেছে সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। এমনকি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা বিডিওর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। যদি তারা ওই জমি দিতে রাজি হন তবে তা একটা ক্যানেলের মতন করে তা নদীর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে যাতে ভাঙ্গন না হয় তার জন্য দুই দিকে কংক্রিটের মাধ্যমে বাঁধিয়ে দেওয়া হবে। এদিন ইসলামপুরের পাশাপাশি চোপড়া, গোয়ালপুকুর এক, গোয়ালপুকুর দুই এবং করণদিঘির বিস্তীর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে তিনি জেলায় ফিরবেন বলেও জানান।

অন্যদিকে এলাকার কৃষক হামিদুল রহমান জানান, তাদের ধানের জমির মাঝখান দিয়ে জলের তোড়ে ক্যানেল সৃষ্টি হয়েছে। এতে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন। তা নয়তো তাদের আয়ের উৎসটাই বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। প্রায় পঁয়ত্রিশ থেকে চল্লিশ বিঘা জমি নষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে। জেলাশাসকের কথা মতন তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিডিওর সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করবেন।