অবতক খবর,২১ আগস্ট: রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালার ছোট্ট “খোঁকি” টা পিতৃত্বের অমোঘ ভালোবাসায় বাধঁতে পেরেছিলো ভিনদেশি এক আফগানকে। যাকে দেখতে কাবুলিওয়ালা ছুটে আসতো বারে বারে। কাবুলের একপ্রান্তে ফেলে আসা নিজের “খোঁকি” টার মুখটা বড্ড মনে পড়াতো তাকে।
হিন্দুকুশ পর্বতের কোল বেয়ে বয়ে আসা ভালোবাসা আর মানবতায় কখন যে ভিন দেশ, ভিন ধর্ম, এক হয়ে গিয়েছিলো
কাবুলিওয়ালা তার সাধের খুঁকি হয়তো টেরই পায়নি কখনো। হয়তো ধর্মান্ধতার করাল ভয়াবহতা তদ্দিনে গ্রাস করেনি আফগানকে, মরুভুমির মাটিতে কখনো সখনো দু -একটা রজনীগন্ধা হয়তোবা ফুটে উঠতো, ভাবতে ভালো লাগে মরুভুমির চাদরেমোরা আফগানিস্তানকে একসময় দেখতে ছিল সুন্দরীগৌরবর্ণা, আহা !! বেশ তাই না?
যাক, একটু হলেও ইতিহাস অন্তত তার সাক্ষী রেখেছে এই রক্ষে; নাহলে হুরিয়ত, জেহাদ, কট্টরবাদ, মৌলবাদ, ফতোয়া বোমার ঘায়ে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ক্ষতের দাগে ভর্তি দেশটার কথা শুনতে কারই বা ভালো লাগে?
নাজিমুল্লার পদত্যাগের পরেও নরমপন্থি ও কট্টরবাদীদের লড়াই ছিল অক্ষত তখন 1995 সাল, পাকিস্তানের সেনার হাতে তৈরী হলো উগ্র ইসলামীক আফগান শক্তি, যাদের উত্থানের নেপথ্যেই ছিল আলকায়দার সাহায্য তারই আরেকটা নাম তালিবান-এই নামেই তাদের পরিচিতিটা এখন বিশ্বজুড়ে। একসময় তালিবানি শাসনে জেরবার ছিল আফগানিস্তান, 9/11 পর মার্কিন সৈন্য বাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে একটানা কুড়িটা বছর ধরে চলা একের পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ক্ষয়ে যাওয়া প্রায় ধ্বংস হওয়া একটা গোটা দেশ। বাইডেনের মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরেই গজনি, কান্দাহার, হেরোত, মাজারিসরিফ পেরিয়ে শেষ গন্তব্য কাবুল অবশেষে আফগানিস্তানের মসনদ এখন তালিবানের কব্জায়। বন্দুকের নলের ডগায় শুরু হয়েছে শান্তির বার্তা, তালিবানি নেতার কথায় কুড়ি বছরের লড়াইয়ের ফসল ফলল এতদিনে। দুদিন আগেও সাধারণ আফগান বাসীকে সেখানকার গণতান্ত্রিক সরকার রক্ষা করার ভরসা জুগিয়েছিল, ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও হার স্বীকার করে আশরাফ গনি জীবন বাঁচাতে নিজের দেশ বদল করলো, আর পরে রইলো, পুরুষ -মহিলা, অসহায় শিশু, বৃদ্ধ সহ প্রায় তিন কোটি আফগানবাসী। হাজারে হাজারে আফগানী এখন নিরাপদ আশ্রয়ের তাগিদে ছুটছে অন্য দেশের সীমানার দিকে। সমীক্ষাঅনুযায়ী ঐ দেশের নিরানব্বই শতাংশ মানুষ নাকি হুরিয়ত আইনের সমর্থক যদি তাই হতো তাহলে নিজের দেশ ছেড়ে পালানোর এমন তাগিদ কি থাকতো নাকি? এমন অবস্থায় কে সাহায্য করবে তাঁদের? আরেকটা প্রশ্ন হলো কেনই বা করবে? তালিবান নামক এক উগ্রবাদী ভয়ঙ্কররুপি জেহাদি দলকে ঘাঁটাতে যাওয়ার ফল কেবলই নিজের দেশের নিরাপত্তার মাসুল গোনা, কোনো দেশই তা চাইবে না। আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন বলেছে এটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, ইতিমধ্যেই তালিবান কে নতুন বন্ধু ভাবতে শুরু করেছে চাইনা, পাকিস্তান, রাশিয়া – টার্কিও সেই সুরেই কথা বলছে এখনও এই সব দেশের দূতাবাস রয়েছে আফগানিস্তানে,ঐ দেশের নাগরিকদের
নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে নবীন তালিবানি সরকার। আন্তর্জাতিক কূটনীতিবিদের বলেন প্রাকৃতিক সম্পদ, অফুরন্ত লোহা তামার মতো খনিজ দ্রব্যে ভরপুর আফগানিস্তানের দিকে চাইনার বরাবরই নজরটা ছিল এছাড়া আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে ইরানের সাথে করিডোরটা মিডিলইস্টকে চাইনার আরো কাছে এনে দেবে। আগামীতে কি হয় তা ভাববার বিষয় বটে। আমেরিকার সৈন্যবাহিনী শুধু নিজেদের লোকেদেরকে নিয়েই দেশে ফিরবে। বাকিটার উত্তর কারোরই আর জানা নেই।

মার্কিন সৈনিক প্রত্যাহারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছেন যদিনা এমনটা হতো কট্টর, মৌলবাদ, ফতোয়ার ঘেরাটোপে বন্দি থেকেও তো আফগানবাসী শিক্ষার আলোয় একটু একটু করে গড়ে উঠছিলো, ক্ষত বিক্ষত হয়েও পুনরায় মাথা তোলার চেষ্টা করছিলো, সবার আড়ালে থেকেও বিগত কয়েকটা বছর ধরেই খেলার আঙিনায় একটা নাম উঠে আসছিলো, নামটা আফগানিস্তান ; সেখানে জেহাদের ছিটে ফোঁটাও ছিলনা কখনো, শুধু ছিল কয়েকটা নিষ্পাপ মুখ যারা দারিদ্রতার নিচে থেকেও অবহেলিত দেশটাকে নিয়ে নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলো। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সাফল্য কিছুটা হলেও সামনের সারিতে রেখেছিলো আফগানিস্তানকে। ভারতও তিন বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেছে সেদেশে, ভারতসরকার ওদেশের পার্লামেন্ট হাউসটা নির্মাণ করে আরেকবার মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে বিশ্বকে। এরকমটা না হলে আগামী তে কিছু একটা করার থাকতো হাতে। কিন্তু বাস্তব যে বিপরীত কথা বলে যে দেশের নারী -পুরুষ সমাজে বর্তমানের তালিবানি আইনে ধর্ম আর রাষ্ট্রের চোখরাঙানিতে বোরখার আড়ালে নিপিড়িত হয়েও মেয়েরা থাকবে সেই পিছনেরই সারিতে। ধর্মের যুপকাস্টে বলি হয়ে যেখানে বাঁচাটাই হবে শেষ কথা। প্রেম- ভালোবাসাহীন পৃথিবীতে যুদ্ধাস্ত্রের আওয়াজ, আর ঐ ভূমিতে জন্ম নেবে আরেক নতুন প্রজন্ম,তাদের দাবি হবে ধর্মের নামে সশস্ত্র হিংস্র এক জেহাদ মুলুকের।
এই মুলুকে ফুলফোটে সম্প্রীতি আর মহানুভবতার গন্ধ ছড়ায়, আর ঐ মুলুকে না ফোটে ফুল, না ফোটে ফল, কেবল বারুদেরই গন্ধ বেড়োয়। মৌলবাদ,উল্লাসী সন্ত্রাসবাদ, অস্ত্রের ঝনঝনানি হিংসার ঘেরাটোপে বন্দিদশা কয়েকটা প্রাণ নিয়ে সে হলো আরেকটা অজানা পৃথিবী।

সুমনা আদক —-

সে এক অন্য পৃথিবী —–

অবতক খবর,২১ আগস্ট: রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালার ছোট্ট “খোঁকি” টা পিতৃত্বের অমোঘ ভালোবাসায় বাধঁতে পেরেছিলো ভিনদেশি এক আফগানকে। যাকে দেখতে কাবুলিওয়ালা ছুটে আসতো বারে বারে। কাবুলের একপ্রান্তে ফেলে আসা নিজের “খোঁকি” টার মুখটা বড্ড মনে পড়াতো তাকে।
হিন্দুকুশ পর্বতের কোল বেয়ে বয়ে আসা ভালোবাসা আর মানবতায় কখন যে ভিন দেশ, ভিন ধর্ম, এক হয়ে গিয়েছিলো
কাবুলিওয়ালা তার সাধের খুঁকি হয়তো টেরই পায়নি কখনো। হয়তো ধর্মান্ধতার করাল ভয়াবহতা তদ্দিনে গ্রাস করেনি আফগানকে, মরুভুমির মাটিতে কখনো সখনো দু -একটা রজনীগন্ধা হয়তোবা ফুটে উঠতো, ভাবতে ভালো লাগে মরুভুমির চাদরেমোরা আফগানিস্তানকে একসময় দেখতে ছিল সুন্দরীগৌরবর্ণা, আহা !! বেশ তাই না?
যাক, একটু হলেও ইতিহাস অন্তত তার সাক্ষী রেখেছে এই রক্ষে; নাহলে হুরিয়ত, জেহাদ, কট্টরবাদ, মৌলবাদ, ফতোয়া বোমার ঘায়ে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ক্ষতের দাগে ভর্তি দেশটার কথা শুনতে কারই বা ভালো লাগে?
নাজিমুল্লার পদত্যাগের পরেও নরমপন্থি ও কট্টরবাদীদের লড়াই ছিল অক্ষত তখন 1995 সাল, পাকিস্তানের সেনার হাতে তৈরী হলো উগ্র ইসলামীক আফগান শক্তি, যাদের উত্থানের নেপথ্যেই ছিল আলকায়দার সাহায্য তারই আরেকটা নাম তালিবান-এই নামেই তাদের পরিচিতিটা এখন বিশ্বজুড়ে। একসময় তালিবানি শাসনে জেরবার ছিল আফগানিস্তান, 9/11 পর মার্কিন সৈন্য বাহিনী ও সরকারের বিরুদ্ধে একটানা কুড়িটা বছর ধরে চলা একের পর এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ক্ষয়ে যাওয়া প্রায় ধ্বংস হওয়া একটা গোটা দেশ। বাইডেনের মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরেই গজনি, কান্দাহার, হেরোত, মাজারিসরিফ পেরিয়ে শেষ গন্তব্য কাবুল অবশেষে আফগানিস্তানের মসনদ এখন তালিবানের কব্জায়। বন্দুকের নলের ডগায় শুরু হয়েছে শান্তির বার্তা, তালিবানি নেতার কথায় কুড়ি বছরের লড়াইয়ের ফসল ফলল এতদিনে। দুদিন আগেও সাধারণ আফগান বাসীকে সেখানকার গণতান্ত্রিক সরকার রক্ষা করার ভরসা জুগিয়েছিল, ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও হার স্বীকার করে আশরাফ গনি জীবন বাঁচাতে নিজের দেশ বদল করলো, আর পরে রইলো, পুরুষ -মহিলা, অসহায় শিশু, বৃদ্ধ সহ প্রায় তিন কোটি আফগানবাসী। হাজারে হাজারে আফগানী এখন নিরাপদ আশ্রয়ের তাগিদে ছুটছে অন্য দেশের সীমানার দিকে। সমীক্ষাঅনুযায়ী ঐ দেশের নিরানব্বই শতাংশ মানুষ নাকি হুরিয়ত আইনের সমর্থক যদি তাই হতো তাহলে নিজের দেশ ছেড়ে পালানোর এমন তাগিদ কি থাকতো নাকি? এমন অবস্থায় কে সাহায্য করবে তাঁদের? আরেকটা প্রশ্ন হলো কেনই বা করবে? তালিবান নামক এক উগ্রবাদী ভয়ঙ্কররুপি জেহাদি দলকে ঘাঁটাতে যাওয়ার ফল কেবলই নিজের দেশের নিরাপত্তার মাসুল গোনা, কোনো দেশই তা চাইবে না। আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন বলেছে এটা ওদের অভ্যন্তরীণ বিষয়, ইতিমধ্যেই তালিবান কে নতুন বন্ধু ভাবতে শুরু করেছে চাইনা, পাকিস্তান, রাশিয়া – টার্কিও সেই সুরেই কথা বলছে এখনও এই সব দেশের দূতাবাস রয়েছে আফগানিস্তানে,ঐ দেশের নাগরিকদের
নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে নবীন তালিবানি সরকার। আন্তর্জাতিক কূটনীতিবিদের বলেন প্রাকৃতিক সম্পদ, অফুরন্ত লোহা তামার মতো খনিজ দ্রব্যে ভরপুর আফগানিস্তানের দিকে চাইনার বরাবরই নজরটা ছিল এছাড়া আফগানিস্তানের মধ্য দিয়ে ইরানের সাথে করিডোরটা মিডিলইস্টকে চাইনার আরো কাছে এনে দেবে। আগামীতে কি হয় তা ভাববার বিষয় বটে। আমেরিকার সৈন্যবাহিনী শুধু নিজেদের লোকেদেরকে নিয়েই দেশে ফিরবে। বাকিটার উত্তর কারোরই আর জানা নেই।

মার্কিন সৈনিক প্রত্যাহারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছেন যদিনা এমনটা হতো কট্টর, মৌলবাদ, ফতোয়ার ঘেরাটোপে বন্দি থেকেও তো আফগানবাসী শিক্ষার আলোয় একটু একটু করে গড়ে উঠছিলো, ক্ষত বিক্ষত হয়েও পুনরায় মাথা তোলার চেষ্টা করছিলো, সবার আড়ালে থেকেও বিগত কয়েকটা বছর ধরেই খেলার আঙিনায় একটা নাম উঠে আসছিলো, নামটা আফগানিস্তান ; সেখানে জেহাদের ছিটে ফোঁটাও ছিলনা কখনো, শুধু ছিল কয়েকটা নিষ্পাপ মুখ যারা দারিদ্রতার নিচে থেকেও অবহেলিত দেশটাকে নিয়ে নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিলো। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সাফল্য কিছুটা হলেও সামনের সারিতে রেখেছিলো আফগানিস্তানকে। ভারতও তিন বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেছে সেদেশে, ভারতসরকার ওদেশের পার্লামেন্ট হাউসটা নির্মাণ করে আরেকবার মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছে বিশ্বকে। এরকমটা না হলে আগামী তে কিছু একটা করার থাকতো হাতে। কিন্তু বাস্তব যে বিপরীত কথা বলে যে দেশের নারী -পুরুষ সমাজে বর্তমানের তালিবানি আইনে ধর্ম আর রাষ্ট্রের চোখরাঙানিতে বোরখার আড়ালে নিপিড়িত হয়েও মেয়েরা থাকবে সেই পিছনেরই সারিতে। ধর্মের যুপকাস্টে বলি হয়ে যেখানে বাঁচাটাই হবে শেষ কথা। প্রেম- ভালোবাসাহীন পৃথিবীতে যুদ্ধাস্ত্রের আওয়াজ, আর ঐ ভূমিতে জন্ম নেবে আরেক নতুন প্রজন্ম,তাদের দাবি হবে ধর্মের নামে সশস্ত্র হিংস্র এক জেহাদ মুলুকের।
এই মুলুকে ফুলফোটে সম্প্রীতি আর মহানুভবতার গন্ধ ছড়ায়, আর ঐ মুলুকে না ফোটে ফুল, না ফোটে ফল, কেবল বারুদেরই গন্ধ বেড়োয়। মৌলবাদ,উল্লাসী সন্ত্রাসবাদ, অস্ত্রের ঝনঝনানি হিংসার ঘেরাটোপে বন্দিদশা কয়েকটা প্রাণ নিয়ে সে হলো আরেকটা অজানা পৃথিবী।

সুমনা আদক —-