বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর, 19জুলাই ::  2024 এর নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় মহাসচিব এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ।  সে কথা মাথায় রেখেই ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-কে তাঁর দলে ফিরিয়ে এনেছেন। শুধু তাই নয়,এবার তাকে ফেরানোর পাশাপাশি তাঁর ঘাড়ে এবার 2024 এর নির্বাচনের দায়িত্ব দিতে চলেছেন বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলের খবর।

তবে প্রশ্ন,কেন হঠাৎ করে অর্জুনের ঘাড়ে এই দায়িত্ব? এর কারণও কিন্তু অনেকটাই পরিষ্কার করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারাই। কারণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন যে অর্জুন ওয়ান ম্যান আর্মি। অর্থাৎ তাঁর সমতুল্য ব্যারাকপুর-দমদম জেলা সাংগঠনিক এলাকায় কোনো নেতা নেই। সে একই একটি সেনার সমান।

অন্যদিকে অর্জুন সিং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ভরসা বজায় রাখতে এখন থেকেই ঘর সাজাতে মাঠে নেমে পড়েছেন। তাই এখন অর্জুন সিং বেছে বেছে কট্টর সমর্পিত তৃণমূলের নেতা নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে চলেছেন। আর এই ক্রমে বনগাঁ জেলা সাংগঠনিক সভা নেত্রী ও বীজপুর বাসিন্দা বলিষ্ঠ তৃণমূল নেত্রী আলো রানি সরকারের বাড়িতে তিনি বৈঠক করেন।

জানা গেছে, এই বৈঠকে তৃণমূলের 2019-এর জয়-পরাজয়ের নিয়েও কথা হয়।বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূলের নেতাদের জন্যেই অর্জুন লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছে সে কথা উঠে। তার পাশাপাশি উঠে আসে আলোরানির বিপদের সময় তৃণমূলে এসে নিয়ন্ত্রণ হাতে ধরা ও সংগঠনের জন্য কাজ করার কথাও।

জানা গেছে, এই বৈঠকে আলোচনা হয়, তৃণমূলের কোন কোন নেতা তৃণমূলের থেকেও বিজেপির দিকে হাত বাড়িয়ে ছিলেন এবং দলকে ডোবাতে কাজ করেছেন তাদের নিয়েও। 2019 এর ভরাডুবির সময় তৃণমূলের হয়ে আলোরানি যেভাবে শক্তপোক্ত ভাবে তৃণমূলের হাত ধরে ছিলেন তার ভূয়শী প্রশংসা করেন অর্জুন সিং।

আলোরানি সরকারের বাড়িতে অর্জুন বৈঠকের সময় বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখন মূল টার্গেট 2024 এ 42 সে 42। তাছাড়া অর্জুন জানান যে, যারা বিপদের সময় লড়াই দিয়েছেন তারাই এবার নেতৃত্ব হিসেবে উঠে আসবেন।আর যারা দলে থেকে দলকে ডোবানোর জন্য কাজ করেছেন তাদের তিনি ভালো করেই চেনেন।

যদিও প্রকাশ্যে অর্জুন সিং-কে আলরানি সরকারের বাড়িতে আগমনের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান যে আলো দিদি লড়াকু নেত্রী। বিপদে পালিয়ে যান না। যেই দলে থাকুন না তিনি তার জন্য সমর্পিত হয়ে কাজ করেন। অন্য নেতাদের মত তিনি দলে থেকে দলকে ছুরি মারেন না, তাই তার সঙ্গে দেখা করে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে এসেছি। এটি সৌজন্য বৈঠক মাত্র।

অন্যদিকে আলরানী সরকার জানান যে, অর্জুন সিংহ ভীষণ লড়াকু ও বলিষ্ঠ নেতা। তিনি প্রতিকূল পরিস্থিতিকে অনুকূল করে নিতে জানেন। তিনি একটি “ভোট মেশিন” বলতে পারেন। কারণ, তার জানা আছে নির্বাচন কি ভাবে করা যায় ও সংগঠন কি ভাবে ।

অন্যদিকে অর্জুন সিং- এর এই আগমন নিয়ে বীজপুরে ব্যাপক হৈ- চৈ শুরু হয়ে গেছে। যে সকল জনপ্রতিনিধিরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না, বা যাদের কথা শোনার কেউ নেই, তারা এখন অনেকটাই উৎসাহিত ও উজ্জীবিত । তাছাড়া যে সকল নেতা নেত্রীদের ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে তারা আলরানি সরকার ও অর্জুন সিংকে এক সঙ্গে দেখে বাড়তি অক্সিজেন পেতে শুরু করেছেন।