মহাশ্বেতা দেবী বাংলা সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য নাম। আদিবাসী জনজাতির কাছে তিনি ‘মারাংদাই’। সাধারণের কাছে তিনি _হাজার চুরাশির মা’। তাঁর সাহিত্য জনজীবনের সাহিত্য, নিপীড়িত লাঞ্ছিত মানবতার সাহিত্য।
তিনি হরিজন হত্যার প্রতিবাদে এবং হরিজন সমিতির ডাকে বক্তব্য রাখতে দুবার কাঁচরাপাড়ায় আসেন এবং বীজপুর থানায় ডেপুটেশন দিয়েছিলেন।

শব্দের ভিতর জীবন
তমাল সাহা

তুমি এমন কেন
আদিবাসী জনজাতি দলিতের
উপাখ্যান লেখো,
ঘনঘন ছুটে যাও তাদের কাছে?
ভাঙা চালা ভাঙা সানকি খিদের জ্বালা–
এ ছাড়া ওদের আর কি সম্বল আছে?

অরণ্য জঙ্গল জমি—
এসব নিয়ে লেখো কেন তুমি?
কে হয় ওরা তোমার
ওদের জন্য কাঁদে কি জন্মভূমি?

মারাংদাই হতে চাও তুমি
হতে চাও হাজার চুরাশির মা!
ওইটুকু তো গর্ভ তোমার
কত বার গর্ভবতী হবে
কত কত মানুষ করবে জমা?

কত তারুণ্য মরে গেল রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে
বিপ্লব! বিপ্লব! করে—
এই সমতটের মাটি করলো রক্তস্নান।
কোথায় হুল বিদ্রোহ উলগুলান!

পঁচাত্তর বছরের স্বাধীনতা
পতপত করে ওড়ে বিশাল পতাকা।
কি হলো দেশ-জাতির?
মেরা দেশ মহান! স্লোগান ওঠে
দেশজুড়ে তো ধনকুবেরদের খাতির!

অসহায় মানুষের চোখ ছল ছল
এতোদিন পুকুর ছিল, জলাশয় হলো
নদী হলো, এবার সমুদ্র হবে—
জমতেই থাকবে কি জল অতল?
সংক্ষুব্ধ ঢেউ আছড়ে পড়বে কবে বেলাভূমে
ভেঙে চুরমার হবে শোষণের জাঁতাকল!

মারাংদাই!
এবার তোমার লেখনীর সব শব্দস্বর
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নিক্ষেপ করুক আগ্নেয় শর।