অবতক খবর,৯ এপ্রিল,মৃন্ময় লাহিড়ী,কল্যাণী,নদীয়া: পরম্পরা শীর্ষক পুনর্মিলন উৎসবে মাতোয়ারা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকসংস্কৃতি বিভাগ। দীর্ঘ লকডাউনের ধারাবাহিকতা কাটিয়ে বিভাগ এখন উজ্জীবিত। নৃত্য-গীত নানান অভিকরণে বর্তমান এবং প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী-গবেষকরা মেতে ওঠেন। প্রাক্তনীদের উপস্থিতি ছিল নজর কাড়া। শেষ চার বছর নানা কারণে পুনর্মিলন উৎসব হয়ে ওঠেনি। পরম্পরার এবারের বিশেষ আকর্ষণ ছিল মাহালী আদিবাসী নৃত্য ও গান। শান্তিনিকেতনের এই মহালি আদিবাসী দলের নেতৃত্বে ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ভ. কালাচাঁদ মাহালি।

কাজি নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবার্ষিকী স্মরণে “চির উন্নত মম শির শীর্ষক” অনুষ্ঠান পরিবেশন করে কলকাতার ছায়ানট। শিল্পীরা কাজী নজরুল ইসলামের গান ও কবিতার আবৃত্তি পরিবেশন করেন। বিশেষভাবে নজর কেড়েছে বিভাগীয় ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষক এবং প্রাক্তনীদের বর্ণময় পরিবেশনা। অভিকরণে বাংলা-অসমিয়া পরম্পরার সম্মিলনে জাগজমকপূর্ণ হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাসাগর সভাগৃহ।

আজ প্রাক্তনীদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয় লোকসংস্কৃতি বিভাগের প্রাক্তনী সমিতি। সমগ্ৰ পুনর্মিলনী উৎসবটি বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সুজয়কুমার মণ্ডলের অভিভাবকত্বে এবং লোকসংস্কৃতি বিভাগের ছাত্র-ছাত্রী-গবেষকদের সক্রিয় উদ্যোগে সম্পন্ন হয়। সহযোগিতা করেন বিভাগের অধ্যাপিকা ড. দেবলীনা দেবনাথ। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইকিউএসি-র ডিরেক্টর অধ্যাপক নন্দকুমার ঘোষ এবং দূরবর্তী শিক্ষার অধিকর্তা অধ্যাপিকা তপতী চক্রবর্তী।

এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন প্রাপ্ত শান্তিপুর মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. কিংশুক চক্রবর্তী, সমাজকর্মী মৃন্ময় গুড়িয়া, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শংকর নারায়ণ সিনহা ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. পীযূষ পোদ্দার সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনেরা। বিভাগের প্রাক্তন গবেষক ও একাধিক লোকসংস্কৃতি গ্ৰন্থের প্রণেতা তপন রায় জানান, আমি ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত অভিভূত। বিভাগের সঙ্গে শিকড়ের সম্পর্কটা আরোও নিবিড় করে রাখে প্রতি বছরের পরম্পরা পুনর্মিলনী উৎসবটি। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত অভিভূত।

অন্যদিকে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর সুজয়কুমার মণ্ডল জানান, বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান গবেষক-ছাত্র-ছাত্রীদের একত্রিত দেখে অত্যন্ত ভালো লাগছে। প্রাক্তন-নবীনদের যোগসূত্রের অনবদ্য মাধ্যম হিসেবে পরম্পরা পুনর্মিলনী উৎসব হয়ে উঠুক বিভাগের কৃষ্টি প্রকাশের ও উৎকর্ষ সাধনের ভিত্তিভূমি। বিভাগের একজন প্রাক্তনী হিসেবেও আমরা অনুষ্ঠানটি যথেষ্ট উপভোগ করেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক মানসকুমার সান্যালের সর্বিক সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণায় লোকসংস্কৃতি বিভাগের কাজের পরিধি আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। আগামী দিনে আমাদের বহুমাত্রিক কর্মসূচি প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে।