এবার তবে চোর বাদ যায় কেন?

রামপদ চোরের বাড়ি বিষ্ণুপুরে
তমাল সাহা

গাঁয়ের নাম বিষ্ণুপুর। জেলা বাঁকুড়া। এ গাঁয়ে থাকে এক নামজাদা চোর। নাম রামপদ।
সে বাড়ি বাড়ি চুরি করে না। তাই গাঁয়ের লোক তাকে কিছু বলে না।

রাস্তার ধারে চায়ের দোকানে আড্ডা— আলোচনা হচ্ছিল।
বিড়ি ধরিয়ে একটা জোর টান মেরে হরিহর সোরেন বলে, অদ্ভুত দেশ মাইরি! চোরেরা মন্ত্রী হয়, না মন্ত্রীরা চোর হয়? কাল সারা রাত্তির থেকে ভাবছি, কোনো উত্তর খুঁজেই পেলাম না. আশ্চর্য!
চিন্তাহরণ পাল্টা জবাব দেয়,তোরই তো চোর হবার কথা! তোর নামের মধ্যেই চোর হবার স্বীকৃতি আছে। তুই জিজ্ঞেস করলি, হরি? শূন্য থেকে আওয়াজ এলো, হর। তার মানে হরিহর, চুরি করো। চোরের নাম কি করে রামপদ হয়? রামপদ তো রাম যে পদ— রামপদ। পদ মানে পা।
পা আবার চুরি করে কি করে?

রামপদ’র বিরুদ্ধে অভিযোগ সে নাকি সরকারি দশ কোটি টাকা গায়েব করে দিয়েছে। রামপদ মুনিসিপালিটির চেয়ারম্যান পদে ছিল। পরে মন্ত্রী হয়েছিল।
হরিহর বলে,রাম মানে বড়ো। রাম দা শুনিস নি? বড়ো পদ পেয়ে চুরি করেছিল। রামচোর রামপদ।

চিন্তাচরণ বলে, ধরা পড়লো কেন?
হরিহর বলে, ও চোরেদের দলে ছিল। তাই কেউ কিছু বলেনি। এখন দল পাল্টে ফেলেছিল। চোরেদের সব অন্ধিসন্ধি ফাঁস হয়ে যাবে। তাই গ্রেপ্তার করে জেলে ঢুকিয়ে দিলো।

বিষ্ণুপুর! চোর তো থাকবেই। বিষ্ণু মানে নারায়ণ, শ্রীকৃষ্ণ। শ্রীকৃষ্ণ তো ছোটবেলা থেকেই নাড়ু ও ননী চুরি করা শিখেছিল।
রামপদ শুধু বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্য রেখেছে।

রামপদ ও বিষ্ণুপুর শব্দ দুটির মধ্যে ধর্মীয় গন্ধ আছে। তবে ধর্মের সঙ্গে চৌর্যবৃত্তির কোনো সুসম্পর্ক আছে কিনা গাঁয়ের মানুষ জানে না।