এই বেলা করে বাজারে গেলাম। আজ রথ হবে তো দাদা! আপনার চোখে রথ, সে তো এক মজা!

রথের কবিতা
তমাল সাহা

রথের অনেক উঁচুতে বসে আছে সে,
নাম তার জগন্নাথ।
দুটো হাত-ই নেই তার
এই দুনিয়াটা চালানো নাকি তার কারবার!
লোকে বলে ঠূঁটো জগন্নাথ,নুলো
পিঠে নিশ্চিত বাঁধা আছে কুলো।

বারবার বলছি, লোকে বলে,
আমি বলছি না, বাপ!
বড় ভয়,হয় যদি কোনো পাপ।

পুরীর রথের আমদানি কতো জানো
ভক্তের এতো মুদ্রা এতো দান
কোথায় যায় কোনখানে?
দুই ভাইয়ের স্বজনপোষণ দেখো–
ভগ্নী সুভদ্রাকে নিয়ে বসে আছে মাঝখানে।
তারা কি জানে
দুনিয়ার আর সব বোনেরা কোথায়
কেমন আছে তারা কোনখানে?

জগন্নাথ জগতের নাথ—
জগত চালায় সে রথে বসে।
রাষ্ট্রের হাতের পুতুল নাকি সে?
রাষ্ট্রের অত্যাচার শোষণ দেখতে পায়না?
বিক্রি হয়ে যাচ্ছে দেশ।
প্রতিবাদীরা খাটছে জেল
বসে বসে সে দেখছে বেশ!

বড় ভাই, তার নাকি বিশাল বিক্রম!
কাঁধে লাঙল হলধর মানে চাষি বলরাম।
সে কি দেখে না
রাজধানীতে বসে আছে দুরন্ত কৃষকরা
তাদের কী দুর্বার সংগ্রাম!

রাজারা বানায় রথ
তারা সুকৌশলে রথ পুজো করে।
কলকারখানায় তালা ঝোলে
শ্রমশক্তি লৌহ-রথচক্র টেনে মরে।
তাদের কণ্ঠে সুর, হেই মারো টান
আমি ভাবি, মূর্তি পড়ে হবে কখন খানখান!

তুমি তাকিয়ে দেখতো, মজবুত কেমন রথের রশি!
ফাঁসূড়ের হাতের দড়ি এর চেয়েও কি শক্ত বেশি?

পুনঃ কবিতার নাম দিচ্ছিলাম, ‘এক হারামির রথের কবিতা’। বাড়ির সেই জনৈকা বললেন, অমন নাম দিও না। আজ রথের দিন। আমি বলি, হায়! এ লেখা আর তবে কতদূর যায়!