রক্তকরবী রচনার শতবর্ষ। ১৯২৩ সালের মে মাসে শিলংয়ে রবীন্দ্রনাথ রক্তকরবী নাটকটি রচনা শুরু করেন। এ বছর ২০২৩ মে মাস রক্তকরবী রচনার শতবর্ষ। শত রক্তকরবী চারা রোপন করে গয়েশপুরের নবারুণ সংঘ রবীন্দ্রনাথকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছে। এবং বিশ্ব পরিবেশ গড়ে তুলবার অন্য বার্তা দিয়েছে।

যেদিকে বাড়াই হাত সেদিকেই রবীন্দ্রনাথ। মে মাস রবীন্দ্রনাথের জন্মমাস। এই মে মাসেই রচিত বহু আলোচিত এবং বিতর্কিত এই নাটকটি বিদগ্ধ মহলে বিভিন্ন কৌণিকে বৌদ্ধিক চিন্তায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

রক্তকরবী
তমাল সাহা

আরেকটি যুদ্ধ সমাসন্ন হয়ে পড়ে। শতাব্দি পার হয়ে গেলেও কি রক্তকরবী ফোটে? কেন ফোটে না, কিভাবে ফুটবে সে কি বলে গিয়েছিল কোনোদিন এই রক্ত পলাশের মাসে?

রাজার এঁটোকাঁটা কারা খায়, লালটুপি-পরা লোকেরা কি করে, সোনার খনির কুলিমজুরের হাড়ভাঙা খাটুনি, সর্দার কোন ভূমিকায়, ধর্মের পুরোহিত ঘুরে ফিরে বেড়ায়–
সেই কোন কালের কথা! পুরানো হয়ে গেছে কি দৃশ্যাবলী?

দুর্গম দুর্গে লোহার অর্গল ছিল, ছিল ধনতন্ত্রের জাল, রাজার শোষণ ছিল আর কি ছিল? ছিল কুবের গড় ও বজ্রগড়ের কথা।
মরা ব্যাঙ, নীল নীলকন্ঠ পাখির পালক এসব রূপক ছিল‌, সোজাসুজি ছিল পৌষের গান-নবান্নের কথা। বর্শায় পরানো ছিল কুন্দফুলের মালা। কি করে বুদ্ধিজীবী প্রফেসর মশাই, কিশোরেরা কেন চলে আসে নাটকে— সবই সে বলে গিয়েছিল কোনোদিন শতাব্দি আগে কিন্তু এখনো কি কেউ জাগে?

গোধূলি মেঘ এঁকেছিল সে কোন উৎসবের আয়োজনে! দুঃখ জাগানিয়া, ঘুম ভাঙানিয়া মহাসংগীত উঠেছিল বেজে।
প্রেম সৌন্দর্যে নন্দিত হয়ে রঞ্জন নন্দিনীরা গেল কোথায়?

দক্ষিণ মহাসাগরের দেশে ক্রান্তীয় মৌসুমী হাওয়ায় লোকচক্ষুর অন্তরালে কোন গভীর গোপন আকাঙ্ক্ষায় রক্তকরবী গাছ কারা রোপন করে যায়!