অবতক খবর,৯ আগস্ট,নদীয়া :-নকল বাবা সাজিয়ে ভোটার কার্ড বানিয়ে এবং পরবর্তীতে S C শংসাপত্রের মাধ্যমে ভোটে দাঁড়ানোর অভিযোগ উঠল বিজেপির জয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এমনই গুরুতর অভিযোগ তোলা হলো তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। ঘটনাটি শান্তিপুর ব্লকের আরবান্দি দুই নং পঞ্চায়েতের ডংক্ষিরা এলাকার ঘটনা। জানা যায় ওই বুথের ১৮ নম্বর সিট থেকে বিজেপি প্রার্থী বৈদ্যনাথ সরকার ২৩৪ ভোটে জয়লাভ করে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো ওই আসনটি ছিল তপশিলি সংরক্ষিত আসন। এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের মিঠুন সরকার। এবং অন্য এক প্রার্থী ছিলেন সিপিআই পার্টির, যিনি পান ৬০ টি ভোট।

গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বিডিও এসডিও এবং ডিএম এর কাছে। তাদের অভিযোগ, বিজেপির জয়ী প্রার্থী বৈদ্যনাথ সরকার ওই একই এলাকায় বসবাসকারী নিরঞ্জন সরকার এবং উৎপল সরকারের মৃত বাবা স্বর্গীয় অক্ষয় সরকারকে আইনি বাবা বানিয়ে তিনি ভোটে দাঁড়ান। তবে ধরা পড়ে যান ভোটার তালিকায় থাকা বাড়ির নম্বর মেলানোর সময়, মৃত অক্ষয় সরকারের ভোটার তালিকায় থাকা নম্বর অনুযায়ী n0049 , কিন্তু বৈদ্যনাথ সরকারের বাবা এবং মা দুজনেই জীবিত রয়েছেন এবং তাদের দুজনের কারো নির্বাচন তালিকায় নাম নথিভুক্ত নেই, তার ভোটার কার্ড এবং এসসি সার্টিফিকেট দুটোই অবৈধ।

এই গুরুতর অভিযোগ নিয়েই রীতিমতো রাজনৈতিক চাপানোতোর শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো শান্তিপুর ব্লক এর আরবান্দি ২ নং পঞ্চায়েতের ডংক্ষিরা ১৬ নং বুথে মোট ২০ টি আসন রয়েছে। যার মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি পায় ১০ টি আসন, তৃণমূল পায় ৯ টি আসন, এবং একটি আসন পায় নির্দল প্রার্থী। যদিও পরবর্তীতে ওই নির্দল প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেসেই যোগদান করে। এখন ২০ টি আসন বিশিষ্ট এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল ও বিজেপির হাতে রয়েছে ১০ টি করে আসন। বেশ কিছুদিন ধরেই পঞ্চায়েত দখল কোন পার্টি করবে সেই নিয়েই চলছিল রাজনৈতিক মহলে জল্পনা। আর তারপরবর্তীতেই এমন গুরুতর অভিযোগ উঠে এল জয়ী বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে।

এছাড়াও তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে সপরিবারে আসার পর প্রার্থী বৈদ্যনাথ সরকারের বাবা এবং মায়ের ভোটার কার্ড করা সম্ভব হয়নি। এর পরেই বৈদ্যনাথ সরকার তার স্থানীয় এলাকারই নিরঞ্জন সরকার ও উৎপল সরকারের বাবা বর্তমানে মৃত অক্ষয় সরকারের বাবাকে নিজের বাবা সাজিয়ে এস সি শংসাপত্র বের করে ভোটের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ায়।

স্থানীয় বাসিন্দারাও জানান, বিজেপি প্রার্থী বৈদ্যনাথ সরকারের প্রকৃত যিনি বাবা, তাকে তারা ওই এলাকায় নিত্যদিন কৃষিকাজ এবং আনাজ বিক্রি করতে দেখেন। কিন্তু তারা কোনরকম পরিচয় পত্র দেখাতে পারেনি।

যদিও বিজেপি প্রার্থী বৈদ্যনাথ সরকারের বাবা-মায়ের দাবি, যেহেতু তৃণমূল এবং কংগ্রেসের আসন বর্তমানে রয়েছে সমান সমান। সেই কারণেই এমন গুরুতর অভিযোগ তাদের ছেলের বিরুদ্ধে আনা হচ্ছে। যাতে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত দখলে সুবিধা হয়। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি, তদন্ত হোক প্রমাণ দেওয়া হবে কোর্টেই।

বর্তমানে এই জল্পনা ঘিরেই চলছে রাজনৈতিক মহলে চাপানো তোর। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এদিন বিডিও অফিসের সামনে অঞ্চল নেতৃত্ব লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পাশাপাশি বিক্ষোভ অবস্থান করেন । যদিও কিছু সময় বাদে, বি ডি ও তাদের আশ্বস্ত করেন, যাবতীয় প্রমাণাদি অনুযায়ী খতিয়ে দেখার।