বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর, 11ই এপ্রিল 21 :: দেশে জুড়ে ফের হু হু করে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। গত 24 ঘন্টায় দেশে রেকর্ড করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছে। 24 ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এক লক্ষ 52 হাজার 565 জন, তা অবশ্যই একটি বড় রেকর্ড। তাছাড়া গত 24 ঘন্টায় করোনায় মৃত্যু হয়েছে 794 জনের । দেশে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তাতে প্রথমেই নাম রয়েছে মহারাষ্ট্রের।

গত 24 ঘন্টায় মহারাষ্ট্রে করোনাা আক্রান্ত হয়েছেন 55 হাজার 411 জন। তার চেয়ে পিছিয়ে নেই ছত্তিশগড় ও উত্তর প্রদেশও। সেখানেও গত 24 ঘন্টায় যথাক্রমে 14 হাজার ও 12 হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

দিল্লিতে গত 24 ঘন্টায় 7897 জন আক্রান্ত হয়েছেন। দিল্লি সরকার করোনা নিয়ে নতুন গাইডলাইন জারি করেছে। তারা পাবলিক প্লেসে মানুষকে তেমনভাবে জমায়েত না হওয়ার জন্য বিধি জারি করেছে। এছাড়াও তারা মল, থিয়েটার, সিনেমা হল ও অন্যান্য বাজার ঘাটে কর্মবিধিকে মেনে চলার নির্দেশিকা জারি করেছে।

হু হু করে বাড়তে থাকা করোনা রোগীদের সংখ্যা দেখে লকডাউন ঘোষণা করেছে ছত্রিশগড় সরকার। তারা রাজ্য রাজধানী রায়পুর , দুর্গ, যশপুর  সহ আঠ টি  জেলায় লকডাউন ঘোষণা করেছে। কোভিড নাইনটিন ইন্ডিয়া ওআরজি তথ্য অনুযায়ী গত 24 ঘন্টায় করোনায় ছত্রিশগডে মৃত্যু হয়েছে 63 জনের।

তাছাড়াও মহারাষ্ট্র সরকার গত 24 ঘন্টায় নাইট কারফিউ জারি করেছে। এবার তারা আগামী 12 এপ্রিল থেকে সম্পূর্ণ 15 দিনের লকডাউন এর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বলে জানা গেছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বৈঠকের পর আজ এই নির্দেশিকা জারি করতে চলেছেন বলে জানা গেছে।

শুধু তাই নয় মধ্যপ্রদেশ সরকারও লকডাউন বৃদ্ধি করেছে। তারা তাদের রাজ্যের মানুষের চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে । করোনার বাড়বাড়ন্ত দেখে নাইট কারফিউ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ডও ।

প্রত্যেক রাজ্য তাদের নাগরিকদের নিয়ে বেশ ভালই চিন্তায় রয়েছেন ।তারা কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিন্তু ব্যতিক্রম বাংলা অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ। গত 24 ঘন্টায় পশ্চিমবঙ্গ 4 হাজার 33 জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কলকাতাতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন 997 জন, উত্তর 24 পরগনা জেলায় আক্রান্ত 887 জন, দক্ষিণ 24 পরগনায় 291 জন, হাওড়াতে 289 জন, বীরভূমে গত 24 ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন 271 জন এবং পশ্চিম বর্ধমানে 265 জন। তাছাড়াও নদিয়ায় গত 24 ঘন্টায় আক্রান্ত হয়েছেন 103 জন, মুর্শিদাবাদে 173 জন এবং মালদাতে 153 জন কিন্তু এত দ্রুত গতিতে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি হলেও কোনো হেলদোল নেই প্রশাসনের। এই মুহূর্তে কোন উচ্চবাচ্য করছেনা কেন্দ্র সরকার অথবা নির্বাচন কমিশনও। করোনা নিয়ে আতঙ্কে সারা দেশের মানুষ। করোনা নিয়ে আতঙ্কে যখন সমগ্র বাংলার মানুষ তখন এই ঘটনাকে কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন বা কেন্দ্র সরকার বা কোন স্থানীয় প্রশাসন ।

করোনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সকলে কিন্তু আতঙ্কে রয়েছেন সাধারণ আপামর বাংলার মানুষ। পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে নির্বাচন চলছে চতুর্থ দফার নির্বাচন শেষ হয়েছে কিন্তু দ্রুত হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা। সাধারণ মানুষ থেকে চিকিৎসক মহল প্রত্যেকেই বলছেন ,দাবি করছেন তাহলে কি “মানুষের জীবন থেকে নির্বাচন বেশি জরুরি” । কারণ  বিভিন্ন দলের নির্বাচনী সভা ও রেলিতে হাজার হাজার মানুষ একসঙ্গে যোগদান করছেন কোন করোনা গাইড লাইনকে তোয়াক্কা না করেই।

চিকিৎসক মহলের দাবি আগের থেকে বেশি ভয়ঙ্কর রূপে এসেছে এই নতুন করোনা। আরো ভয়ঙ্কর অবস্থা নিতে পারে কিন্তু এসব নিয়ে কেউ কোনো কিছুই ভাবছেন না। সভাগুলিতে যেভাবে মানুষের ঢল নামছে তাতে গ্রুপ সংক্রমণ যেকোনো সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে রাজ্যে ।

পশ্চিমবঙ্গের মানুষের দাবী অধিকার নিয়ে মাঝে মাঝেই মানুষের চিন্তা করে সরব হয়েছেন রাজ্যের রাজ্যপাল।তিনি বহুবার দাবি করেছেন যে তিনি এই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। মানুষের সব ধরনের নিরাপত্তা চিন্তা করা তার ধর্ম কিন্তূ রাজ্যে করোনার যে হারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, মৃত্যুর মুখে চলেযাচ্ছেন নাগরিকরা তার পরেও আজ মুখে কেন কুলুপ এঁটেছেন রাজ্যপাল তা বুঝে উঠতে পারছেন না জনগণ। বাংলার মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে কেন তার অন্তর আত্মা এখন জেগে উঠছে না সেটাই কিন্তু এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের হিংসার বলি নিয়ে তথ্য তৈরি হবে নির্বাচন কমিশন এসব নিয়ে রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ওপর এছাড়া প্রশাসনিক কর্তাদের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়া হবে কিন্তু এই নির্বাচনে করোনার বলি হবেন বা যারা প্রাণ হারাবেন তাদের দায় কে নেবে ? নির্বাচন কমিশন তাদের দায় নেবে তো ?