ফুলমণির নারীদিবস
তমাল সাহা

অ্যা ফুলমণি, ই কথাটো তু শুন তো বুট্যে…
ফুলমণি দিখে পঞ্চায়েতবাবু দলবল লিয়ে তার পাশে দাঁড়াইন গ্যাছে।
শুন ফুলমণি! ই যে কাইল বাদ পরশু আছে না উদিন আট তারিখ বুট্যে,
উদিন নারীদিবস হবেক। ইকটু ধামসা মাদল নাচ হবেক,ফূর্তিফার্তা হুবেক,
দিবসটো পালন হবেক।
কান খুইলে শুন,এটা তুদের মানে নারীদের দিবস।
উদিন কিছু টঙ্কা ভি তুদের মিলবে।
সে কি বিশাল দিবস,তুকে বুঝাইবার পারবেক লাই,
তামাম বিশ্ব জুড়ে উদিন নারী দিবস।

ফুলমণি হা কইরে পঞ্চায়েত বাবুর সব কথা ভালো কইরে শুনে।
ফুলমণি কি ছাইড়বার পাত্র!
সে বুলে, মুরা তো মেইয়া মানুষ,আবার নারী হলেম কবে?
আর দিবস তো আইজ কাইল পরশু হরদিনই দিবস। ইটা আবার লতুন কি?
রোজই তো সূর্য উঠ্যে বট্যে উ আকাশপানে,
গোল গোল চাঁদটি উঠ্যে,
উ আকাশের ভরা পেটে কুত্ত তারারা ঝিকমিক করে!
রোজই তো দিবস!
ভোট আইছ্যে বুঝি! মুদের একটু খুশি করতে হুবেক,তাই তো পঞ্চায়েত বাবু?

তো! উদিন তো মুদের কাম বাদ দিতে হবেক,
বিহাইনে মুরা শালপাতা কেন্দুপাতা কুড়াতে যাবেক, মরা গাছের ডাল ভাঙতে যাবেক জ্বালানির লিগ্যে।
ইসব কাম তো মাটি হইয়্যে যাবেক।
ইখন অবশ্য অত্ত শালপাতা কাঠকুটা মিলে না,
বন সাফাই হইয়ে যাইছে। পমোটারবাবুরা সব কেটে লিচ্ছে।
তু পঞ্চায়েত বাবু, ইসবের দিকে তুর কোন লজর লাই, আশ্চয্যি বুট্যে!

একদিন ফূর্তিফার্তা হুবেক, হাড়িয়া হবেক, মহুয়া হবেক,ধামসা মাদল বাজবেক,
কিন্তু মুদের রোজগার– কামকাইজের কি হুবেক?

ভোট আইসবে, ভোট যাবেক।
নারীদিবস কি রোজ আসবেক?
আট মার্চ কি রোজ আসবেক?
তো! পঞ্চায়েত বাবু তু কি রোজ ভালো খাওনদাওন দিবার পারবি?
হাতে টঙ্কা ধইরে দিতে পারবি?

আরে মুর কথাটো শুন,
আট মার্চ রোজ আইসতে পারে,
উর কোন ঝামেলা নাই।কারণ আট মার্চের তো কুনো পেট লাই, খিদা লাই।
মুদের তো পেট আছে, খিদা আছে…

নারীদিবস মারাইচ্ছ্যে!