রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রাস্তায় নেমে পড়েছে ডোমকলের মানুষ

পেটের জ্বালা বড় জ্বালা, কোন আইন নিয়ম বাধা মানে না

বিনয় ভরদ্বাজ ,অবতক খবর, সংবাদদাতা ১৬ই এপ্রিল :: দেশজুড়ে চলছে লকডাউন করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রথমে 21 দিনের লকডাউনের পর দ্বিতীয় ধাপে আবার 19 দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে এই লকডাউনে করোনার সংক্রমণের মৃত্যুর আগে না খেয়ে মারা যাওয়ার ভয়ে এবার লকডাউন 23 দিন। এরপর মুর্শিদাবাদ জেলার ডোমকলের মানুষ খাদ্যের দাবিতে রাস্তায় নেমে এলেন।

সরকারের সমস্ত নির্দেশ ও আইনকে অমান্য করে প্রায় 300 পরিবারের বুড়ো বাচ্চা বয়স্ক মহিলা পুরুষ সকলেই প্লাকার্ড হাতে নিয়ে খাবারের দাবিতে সোচ্চার হন। ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের মুখে খাবার তুলতে না পেরে তাদের নিয়েই করোনা সংক্রমণের আতঙ্ককে পরোয়া না করে রাস্তায় নেমে পড়েন মায়েরা। আন্দোলনরত প্রত্যেকের দাবি প্রশাসন, মন্ত্রী, রাষ্ট্র তুমি কোথায়? খাবার দাও! খাবার দাও!

লকডাউন আইনকে আরো বেশি করে শক্ত-পোক্ত করার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আইন ভাঙলে জেল ও জরিমানা দুটির বিধান দিয়েছে প্রশাসন কিন্তু ডোমকলের 300 পরিবারের মানুষ জেল ও জরিমানার পরোয়া না করে রাস্তায় বসে পড়েন । খাবারের দাবিতে অনড় জনতার খাদ্য ব্যবস্থা না করে এলাকার কাউন্সিলর নেতা দুলাল সাহা পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের অবরোধ তুলতে গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা।

প্রকাশ্যে লকডাউনের বিধি ভাঙলেও আন্দোলনরত হাজারের বেশি মানুষের খাদ্যের দাবি পূরণ না করতে পেরে পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশ প্রশাসন । অবরোধকারীদের দাবি পুলিশ তাদের জেলে পুরে দিক। অন্তত সেখানে দু’মুঠো খেয়ে বাঁচতে পারবেন তারা। তাদের দাবি 23 দিন ধরে কোনমতে তারা না খেয়ে দিন কাটিয়েছেন আর তারা থাকতে পারছেন না। কোনো প্রশাসনিক রাজনৈতিক মদতও পাচ্ছেন না তারা।

প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি থেকে শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্যেকেই দাবি করে চলেছেন লকডাউন মানতে হবে, ঘরে থাকতে হবে কিন্তু পেটের জ্বালা বড় জ্বালা, কোন আইন নিয়ম বাধা মানে না। তাই ডোমকলের মানুষ দেশের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে নেমে পড়েছে রাস্তায়। কোথায় সেই নেতা-নেত্রীরা? কোথায় সেই গালভরা আশ্বাস ? কোথায়ে প্রধানমন্ত্রীর সেই খাদ্য ভান্ডার?  কোথায় দিদির অভুক্তদের খাদ্য যোগানের প্রতিশ্রুতি? প্রশ্ন তুলছে শিশুরা।