তোমরা স্বপ্ন দেখেছিলে রোদের। কি করে ভুলে যাই তোমাদের?

কারাবন্দী লেখক দিবসকে সামনে রেখে দুনিয়ার সমস্ত বন্দী লেখকের প্রতি বিদ্রোহী সেলাম

পনেরো নভেম্বরের কবিতা
তমাল সাহা

আজ দুনিয়ার সমস্ত জেলখানার ঘুলঘুলি জানালা দরজার শিকের ফাঁক ফোকর দিয়ে, রাষ্ট্রীয় চোখরাঙানি উপেক্ষা করে সূর্যবলয় থেকে নির্গত আলোক শক্তি তীব্র বেগে ঢুকে পড়ে বন্দী লেখকের অন্ধকার কুঠির ভিতরে

কারাবন্দী—
কারা বন্দী? বন্দী কারা? কারা কারাবন্দী লেখক?
যারা শাসকের বিপক্ষে লেখে যাদের বিপক্ষে শাসক

যে লেখকরা শাসকের পক্ষে লেখে তারাও তো শাসকের হাতে বন্দী!
তফাৎ তারা শুধু কারাগারের বাইরে। শাসকের মুদ্রা ও মোহর নেয় হাত পেতে। জনতা ঘৃণা ছোড়ে তাদের দিকে প্রহরে প্রহরে

লেখক তো তীরন্দাজ! তার স্কন্ধে ঝোলে তূণ।তাতে পূর্ণ শব্দভেদী বাণ। মানুষের লিপিকার জন অরণ্যে বিচরণকারী এক নিষাদ। তাকে কি বন্দী করা যায়?
তার শব্দনির্মাণ ছিন্ন করে সমস্ত বেড়াজাল।
সশব্দে শব্দেরা বেরিয়ে পড়ে। বিদ্রোহ! বিদ্রোহ!
চতুর্দিকে জ্বলে ওঠে আগ্নেয় মশাল।

জেগে থাকো বন্দী, হে শাব্দিক সন্ন্যাসী!
আমাদের জাগিয়ে রাখো চিরকাল।

একজন মানুষের কথা আমার খুব মনে পড়ে আজ।
নাজিমের কথা, কী দারুণ প্রেমিকার পেয়েছিল সে সন্ধান! আহা! ভালোবাসার কী কারুকাজ।
ফাঁসির মঞ্চ থেকে যা যা বলতে চেয়েছিল,তা লিখেছিল সিগারেটের চিরকুটে জেলখাটা জুলিয়াস ফুচিক।
প্রেমিকা সমস্ত চিরকুট জড়ো করে আগলে রেখেছিল বুকে, প্রকাশ করেছিল শাব্দিক অক্ষরে।
সুদূর প্রাচ্য থেকে তার দিকে চুম্বন দিই ছুঁড়ে!

বন্দীরা জেগে থাকো, জেগে থাকো আমার অন্তরে।