অবতক খবর, রাজীব মুখার্জী, হাওড়া :   চায়ের দোকানে সামান্য কথাকাটাকাটি কে কেন্দ্র করে এক নিরীহ যুবক কে অমানুষিকভাবে মারধরের ঘটনা ।চূড়ান্ত অমানবিক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার দুপুরে। পেশায় দর্জি শেখ আবু সাহিদ (২২) বাড়ি সাঁকরাইল থানারআরগরি হালদার পাড়াতে।

ঘটনার দিন ওই যুবক তার এক বন্ধুর সাথে রানীহাটির কাছে একটি বাইকের শোরুমে যায় বাইক কেনার জন্য। সেখান থেকে তাদের বলা হয় লাঞ্চ টাইম চলছে তাই কিছুক্ষন বাদে আসার জন্য। সেখান থেকে বেরিয়ে তারা মৌরি রথতলায় একটি চায়ের দোকানে পৌঁছয়। ঘটনাচক্রে তার বাইকে হ্যান্ডেল ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির গায়ে লেগে। সেই থেকে শুরু হয় বচসা। সেই বচসা থেকেই তাদের দুজনকেই ধাক্কাধাক্কি ও মারধর করা শুরু করে ওখানে উপস্থিত লোকেরা। তারা ওই যুবক ও তার বন্ধুকে প্রচন্ড মারধর করে।

এরপর তার বন্ধুকে ছেড়ে ওই যুবক কে বাইকে বসিয়ে আনা হয় নিব্রা মল্লিকপাড়ায়। সেখানে তাকে ল্যাম্পস্টের সাথে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। তার পরনের কাপড় অব্দি খুলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তাকে বেশ কিছুক্ষণ ঐভাবে গণপিটুনি দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি দেখে তখন তাকে চোর অপবাদ দিয়ে ওই অবস্থায় ফেলে রাখা হয় দীর্ঘক্ষণ। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হয় ডোমজুর থানার পুলিশ। ঘটনাস্থলে এসেও কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকায় দাঁড়িয়ে থাকে পুলিশ। পুলিশের সামনেই তাকে আবার হেনস্থা ও মারধর করা হয়। এরপরে তাকে ওখান থেকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

এই প্রসঙ্গে তার বন্ধু, বাড়ির লোক সহ এলাকার বাসিন্দারাও ধোঁয়াশায় ঠিক কি কারণে তাকে এভাবে মারধর করা হলো। আপাতত তার চিকিৎসার টাকা এলাকার লোকেরাই জোগাড় করে চলেছেন। ইতিমধ্যেই তার চিকিৎসার খরচ প্রায় ২ লাখ টাকার মতো দাঁড়িয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। এই পরিমাণ অর্থ দেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা তার পরিবারের নেই। তাই এলাকার মানুষ সকলে মিলে সেই অর্থের ব্যবস্থা করছেন বলেই দাবি এলাকাবাসীর। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কিন্তু এই ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি ডোমজুড় থানার পুলিশ। পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাব নিয়েও অসন্তোষ রয়েছে এলাকাবাসীর কাছে।