অবতক খবর,২০ সেপ্টেম্বরঃ ঋণের সুযোগ বাড়াতে সংশোধন এলো আইনে। মঙ্গলবার বিধানসভায় পাস হ’ল আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (FRBM) আইনের ওপরে সংশোধনী বিল। তারফলে, এবার রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (GSDP) ৪ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে রাজ্য সরকার। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সরকারের আরও একটি অনুমোদনের সৌজন্যে ঋণের উর্ধসিমা বাড়ানো যাচ্ছে। এবং সেই লক্ষ্যে এই বিল আনা হয়েছে বলে1যুক্তি সরকার পক্ষের। সে যুক্তি খণ্ডন করে বিরোধীদের অভিযোগ, ঋণের ভারে এমনিতেই জর্জরিত রাজ্য। আরও আর্থিক বিশৃঙ্খলার দিকেই এগোবে রাজ্য বলে দাবি তাঁদের।

‛দ্য ওয়েস্টবেঙ্গল ফিসক্যাল রেস্পন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল ২০২২’ নিয়ে মঙ্গলবার দু’ঘণ্টার আলোচনা হয়। এই সংশোধনী বিলে বলা হয়েছে, সব মিলিয়ে ঋণের অনুপাত দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪ শতাংশ। এই পরিমাণ ঋণ নেওয়ার আইনি সংস্থানের জন্য FRBM আইনে বদল আনা হয়েছে। যদিও, তা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্যই করা হ’ল।

চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যর (অর্থ প্রতিমন্ত্রী স্বাধীন) মতে, অর্থ কমিশনের সুপারিশ আগেই ছিল। আমরা আমাদের বাজেটে সে কথা আগেই উল্লেখ করেছি। তবে, তার সঙ্গে প্রয়োজন ছিল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন। সেই লক্ষ্যেই ঋণের অনুপাত ৪ শতাংশ করার জন্যই এই বিল আনা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, আগেও ঋণ নিয়ে লাগামছাড়া খরচ করেছে রাজ্য। এখনও এই বাড়তি ঋণ নিয়েও সেই পথেই হাঁটতে পারে রাজ্য সরকার, এমনটাই দাবি তাদের।

রাজ্যে ঋণের পরিমাণ এই মুহূর্তে ৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হয়ে গিয়েছে। ঋণ নিয়েও গঠনমূলক কিছু এ রাজ্যে হয়নি বলে অভিযোগ বিরোধীদের। ফলে, এক্ষেত্রেও ঋণ নিয়ে রাজ্য সরকার একই কাজ করবে বলে আশঙ্কা বিরোধীদের।

‛দ্য ওয়েস্টবেঙ্গল ফিসক্যাল রেস্পন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল ২০২২’ ধ্বনী ভোটে পাস। ‛দ্য ওয়েস্টবেঙ্গল ফিসক্যাল রেস্পন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল ২০২২’ বিলের প্রেক্ষিতে আলোচনার সময় বিজেপির তরফে অশোক লাহিড়ী বলেন, ‛মুখ্যমন্ত্রী কাল সদনে প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা সবাই চোর? আমি বিশ্বাস করি, আপনারা সবাই চোর নন।’

অশোক লাহিড়ী: সরকার যেভাবে চলছে, তাতে করে কিছুদিন পর পেনশন দিতে অসুবিধা হবে। শিল্পায়ন ঘোষণা ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় বেশ কিছু প্রকল্প ঘোষণা করেছেন, যা কেন্দ্রের টাকায় চলে। আমি বিশ্বাস করি, বাঙালি সহজাতভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ নয়। চপ শিল্পের মধ্যেও কীভাবে শিল্পের উন্নতি হবে, আমি জানি না। কন্যাশ্রী প্রকল্প খুব ভালো। মধ্যপ্রদেশে লাডলি-লক্ষী প্রকল্প চালু হয়েছিল। এটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে, যে এটা আমরা প্রথম করেছি।’

চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য: অশোকবাবু চাকরি চুরির কথা বললে প্রমাণ করুন। প্রমাণ করতে হবে তো। কিন্তু, অন্য রাজ্যে চুরি হলে বলেন না কেন? কেন্দ্রের মাথায় বসে যিনি আছেন, বলেছিলেন, ১৫ লক্ষ টাকা দেবেন। চাকরি দেবেন। সেটা তো বললেন না। সেটা নিয়ে বলুন।― অশোক লাহিড়ী উদ্দেশে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বাংলাকে সে শেয়ার দেওয়ার কথা, সেটা কেন্দ্র দেয় না। কেন এত বলছেন না যে, কেন্দ্র প্রাপ্য টাকা দেয় না? কেন্দ্রের কাছে গিয়ে বলছেন ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দাও।

আপনি কেন চপ শিল্পকে ছোট করছেন? চপ ভেজে কেউ রোজগার করলে ছোট করবেন না।― চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।