অবতক খবর,২৮ মার্চ, অভিষেক দাস, মালদা:-দীর্ঘদিন ধরে গঙ্গা ভাঙ্গনের শিকার প্রচুর মানুষ সর্ব শান্ত হয়েছে। ঘরবাড়ি, জমি জায়গা গঙ্গায় তলিয়ে গেছেl রাজ্য সরকার কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার একে অপরের দোষারোপ করতেই ব্যস্ত । তাদের টানাপোড়নের জন্য স্থায়ীভাবে বিজ্ঞানসম্মতভাবে এই গঙ্গা ভাঙ্গনের কাজ এখনো হয়নি। মালদা জেলার পাঁচটি ব্লক গঙ্গা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা। বর্ষার মরশুম কেবলমাত্র অস্থায়ীভাবে কিছু বালির বস্তা ফেলে গঙ্গার ভাঙ্গন আটকানোর চেষ্টা করা হয় ।কিন্তু সেটাও বিফলে যায়l

গঙ্গা ভাঙনের জন্য কোন সরকারই এখনো স্থায়ীভাবে পদক্ষেপ নাইনি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এবার গঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ অ্যাকশন নাগরিক কমিটি তরফে জন আন্দোলন খোলা চিঠি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের দিতে চলেছেl সংগঠন চাইছে নির্বাচনের যেই দলের প্রার্থী জিতুক না কেন সেই প্রার্থী যাতে সংসদে গঙ্গা ভাঙনের বিষয়টি তুলে ধরে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেl

 

গঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ একশন নাগরিক কমিটির সদস্য মুসারেফুল আনোয়ার জানান ১৯৭১ সালের পর থেকে মালদা জেলায় গঙ্গা ভাঙন হয়েই চলেছে। মালদা জেলায় ইতিমধ্যে ৭৬ খানা মৌজা, গঙ্গা নদীতে ভেঙে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এই ৭৬ খানা মৌজা বসবাস করতেন প্রায় সাত লাখ মানুষ আজকে তাদের বাড়িঘর জমি জায়গা সর্বোচ্চ হারিয়ে তারা আজ নিঃস্ব। ভাঙ্গন কিছুদিন বন্ধ থাকার পর আবার ভাঙ্গন নতুন করে শুরু হয় এতে মালদা জেলার পাঁচটি ব্লক মহানন্দাটোলা ,বিলাই মারি, ভূতনি ,গোপালপুর, মানিকচক ঘাট, বীরনগর এই সমস্ত জায়গায় নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হয়। নতুন ভাঙ্গনে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ আজকে তাদের বাড়িঘর বসতভিটা হারিয়ে ফেলেছে। আমরা চাই কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার তারা যৌথ উদ্যোগে এই গঙ্গা ভাঙ্গন সমস্যাকে সমাধান করুক। অনেকেই এখনো খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছে তাদের পুনর্বাসন এখনো হয়নি। কার্যত স্থায়ীভাবে বিজ্ঞানসম্মত করে গঙ্গা ভাঙ্গনের সমাধান হোক। নতুন করে ২৬ খানা মৌজায় নতুন চর গড়ে উঠেছে। আমরা চাই সামনে যে লোকসভা নির্বাচন এই নির্বাচনের দুই যে লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে সেখানে রাজনৈতিক দলের যারা প্রতিনিধি হিসাবে দাঁড়িয়েছেন তাদেরকে আমরা আমাদের দাবি নিয়ে খোলা চিঠি দিব।

এ বিষয়ে দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শিরূপা মিত্র চৌধুরী জানান গঙ্গা ভাঙ্গন এক্সন কমিটি যেটা করছেন সেটা সঠিক করছেন। আমি তাদের সাথে আছি। আমি তাদের সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করব। আমার লোকসভা কেন্দ্রে মানিকচক, শামসেরগঞ্জ , সমস্ত এলাকায় গঙ্গা ভাঙন হচ্ছে। রাজ্য সরকার বা এখানকার জেলা প্রশাসন তাদের কিছু সহযোগিতা করে কিন্তু তাদেরকে এখনো অব্দি কোনরকম ভাবে স্থায়ী পুনর্বাসন বা সহযোগিতা করেনি। আমার এই গঙ্গা ভাঙ্গন এলাকার মানুষদের যাতে স্থায়ী সমাধান হয় সেটাই আমার মূল লক্ষ্য।

ভাঙ্গনের বিষয় নিয়ে আমি সমস্ত রাজনৈতিক দলকে বলবো সবাই একসাথে হয়ে মালদার মানুষকে বাঁচানোর জন্য এই গঙ্গা ভাঙ্গন বিষয় নিয়ে এগিয়ে আসুন।।

রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন জলপথ ও সেচ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানান গঙ্গা ভাঙ্গন এলাকায় এখনো পর্যন্ত যা কাজ করেছে সেটি আমাদের সরকারই করেছে কেন্দ্রীয় সরকার কোন রকম ভাবে সহযোগিতা করেনি একটা টাকাও দেয়নি। সেখানে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পূর্ণ সহযোগিতা দরকার না হলে এই গঙ্গা ভাঙ্গন স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব নয়। আমরা ইতিমধ্যে একটি সার্ভেও করেছি। বিহার ,ঝাড়খন্ড, এবং আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে একসাথে মিলে এই কাজ করতে হবে। গঙ্গা ভাঙ্গন একশন কমিটি যে খোলা চিঠি দেওয়ার কথা ভাবছে সেটি তাদের কেউ ভাবতে হবে যে আমাদের এই বিষয়ে যা করার আমরা ঠিকই করছি।।

গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে উন্নয়ন আজকে বিজেপি সরকার ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে আমরা উন্নয়ন করছি।

গঙ্গা ভাঙ্গন বিষয় নিয়ে রীতিমত সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন দক্ষিণ মালদা লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইসা খান চৌধুরীও।