এ কোন দীপাবলি? এ কোন নগ্ন ধর্ষিতা শ‍্যামারা মাটিতে পড়ে আর্তনাদে ভারি করে গাঙ্গেয় বাতাস? অমাবস্যায় এ কোন আলোর আভাস?

দীপাবলি / তমাল সাহা

চক্রবাল ঘিরে
অমাবস্যা ঘন হয়ে আসে এই উপত্যকায়।
আমি দেখিতেছি
দিনের পর দিন ঘন তমসার ভিতরে
উজ্জ্বল নক্ষত্রগুলি দীপ্র হয়ে জ্বলে
তারও নীচে মাটির উপরে জীবনযাপন
ক্রমাগত কঠিন হয়ে পড়ে।

দিন দিনের মত যায়,রাত রাতের মত।
হিমেল রাতে শিশির ঝরে এই মাটির উপর
রক্তও ঝরে অবিরত।

ধর্ম এখানে বাজার খোলে—
পূর্ণিমা, অমাবস্যা সব তিথিতেই
দেবদেবীরা পূজা পায়।
রাজনীতির নেতারা মন্ডপ
উদ্বোধন করে পাড়ায় পাড়ায়।

চতুর্দিকে দেখি মুখোশপরা ভেক।
নেতা যদি অসুর হয় তার সঙ্গে থাকে নন্দীভৃঙ্গি অনেক।
কালী ও দুর্গা দুই দেবীই নাকি
অসুর বধে রণরঙ্গী,
তাদের মা বলে ডেকে ওঠে অসুর নেতা
আর তার অসংখ্য সঙ্গী।

দেবী পূর্ণ নগ্নিকা উন্মুক্ত স্হূল বক্ষ—
প্রতিবার হেমন্ত বাতাসে তাকে করি লক্ষ্য।
মদ মাংসে চলে তার পূজা—
রাজনীতিতে পক্ষপাত থাকে,
তবে এ কোন দেবীপক্ষ?

এই ধর্ষণ উপত্যকায়
প্রতিদিন ঝোপেঝাড়ে মাঠেপ্রান্তরে
জলার ধারে পড়ে থাকে
ধ্বস্ত-বিধ্বস্ত বক্ষ,যোনি রক্তাক্ত—
এ কোন প্রতিমা নারী?
মাটিতে শয়ান এরা কোন কালী ভুবনেশ্বরী!
তুমি তো মন্ত্রোচ্চারণ করো,
জাগরণে যায় বিভাবরী।

অমাবস্যায় প্রদীপ জ্বালো—
চতুর্দিকে আলোর রোশনাই।
অন্ধকার ভেঙে কৃষ্ণপক্ষের রাতে
ঘর থেকে বারান্দায় ছুটে আসে মা—
আর্তনাদ করে ওঠে, শ্যামলী! শ্যামলী!
কোথায় শ‍্যামলী? শ‍্যামলী নাই।

অন্ধ রাত আরও অন্ধ হয়।
যজ্ঞের আগুন জ্বলে ওঠে,ওঠে মন্ত্রধ্বনি—
ক্রিং ক্রিং ফট স্বাহা
ক্রিং ক্রিং হুঁ হ্রীঁ স্বাহা… কান পেতে শুনি।
জঙ্গলের ভেতর পড়ে থাকে নগ্ন শ্যামলী।
ছায়া সরে যায়—
বহুল পেশী দেখিয়ে হেঁটে যায় এ কোন বাহুবলী?

সমিধ জ্বলে ওঠে —
উত্তোলিত খড়্গ নেমে আসে হাঁড়িকাঠে।
চলে একের পর এক জান্তব বলি,
জয় মা কালী!
চতুর্দিকে রব ওঠে— আজ শুভ দীপাবলি!