অবতক খবর: তোলাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গিয়ে প্রাণ গেল এক বিজেপির যুব মোর্চার নেতা অসিত সাহা (২৩)। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর শহরের শিবডাঙ্গি এলাকায়। সকালে তিন দুষ্কৃতী এলাকার এক কাপড়ের দোকানে তোলাবাজি করতে আসে বলে অভিযোগ। রুখে দাঁড়ান ওই যুবনেতা। পালটা তাঁকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়। শনিবার সন্ধ্যেতে মৃত্যু হয় যুবকের। এর প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ ইসলামপুর বাজারের বীজহাটি এলাকার একটি কাপড়ের দোকানে হামলা চালায় তিন দুষ্কৃতী। জোর করে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা আদায়ের প্রতিবাদ করায় দুষ্কৃতীদের ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হন বিজেপির যুব মোর্চার নেতা সহ দুই যুবক। ঘটনার পরই এলাকা থেকে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। জখম তিনজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে যুব নেতাকে শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাঠানো হয়। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে সন্ধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ওই বিজেপি নেতা।

নিহতের মামা কাপর ব্যবসায়ী রতন সাহার অভিযোগ, “দীর্ঘদিন ধরেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে টাকার দাবি করছিল বলে স্থানীয় তোফিক নামে এক যুবক। গত চারদিন আগেও টাকার দাবিতে দোকানে গোলমালের চেষ্টা করে ওই দুষ্কৃতীরা। এরপর সকালে দুই সঙ্গীকে নিয়ে সাহিল নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ও দোকানে এসে ফের টাকার দাবি করেন। হুমকি দিয়ে অশান্তি সৃষ্টি করে। প্রতিবাদ করায় সেসময় দোকানে বসে থাকা আমার ভাগ্নার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছুরি চালিয়ে দেয় ওই দুষ্কৃতী। তাঁকে রক্ষা করতে গিয়ে আরও এক যুবক ছুরিকাহত হন।” জানা গিয়েছে, বিজেপির যুব মোর্চার ইসলামপুর শহর মন্ডল সম্পাদক পদের দায়িত্বে ছিলেন।
মৃত্যুর খবর ইসলামপুরে পৌঁছতেই বিজেপির যুবকর্মীরা শিবডাঙ্গি এলাকার জাতীয় সড়কে টায়ারে জ্বালিয়ে অবরোধ করে। ক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা। অবরোধ তুলতে এসে ঘটনাস্থলে পুলিশের সঙ্গে তীব্র বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।

বিক্ষোভের প্রায় একঘন্টা পর ইসলামপুর থানার আইসি সন্দীপ চক্রবর্তী ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। অবশেষে যুব মোর্চার কর্মীরা অবরোধ তুলে নেন। খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত মহম্মদ শাহী ইসলামপুরের মেলারমাঠ এলাকার বাসিন্দা। ইসলামপুর পুলিশ সুপার যশপ্রীত সিংহ বলেন,”সকালে এক যুবক ছুরিতে জখম হন। তারপর তাঁকে শিলিগুড়িতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যার পর ওই যুবক মারা যান। ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভজিৎ চক্রবর্ত্তীর অভিযোগ,”ইসলামপুরে একের পর খুন হচ্ছে। আজ যুব মোর্চার নেতাকে তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় খুন হতে হল। খুন আটকানোর চেষ্টা করেছে না প্রশাসন। শুধু একজন অপরাধীকে গ্রেফতার করলেই চলবে না, মূল মাথাকে ধরতে হবে।”