জীবনানন্দের ১২৫ তম জন্মবর্ষকে সামনে রেখে সন্দেশখালিকে দেখে….

তোমার জন্মদিনে
তমাল সাহা

জারুল হিজল শিমুলের ছায়া
খুঁজিয়া পাই না আর।
অথচ এইসব গাছেদের কথা
তুমি লিখিয়াছ বারবার।
পরিবেশ দূষণে মাতিয়াছে কারা
রাষ্ট্রীয় মস্তানেরা দিতেছে পাহারা।

আলুথালু চুল কবেকার অন্ধকার—
ধর্ষিতা রক্তস্নাত পড়িয়া আছে
তোমার তিলোত্তমা রূপসী জন্মভূমি।
এইসব কথা লেখো নাই তুমি।

পৌষের আকাশের হিম, কুয়াশামাখা ভোর
এমন সৌন্দর্যের আর দেখিনা বাহার!
সোনালী ধান গমের চাষিরা এখন আন্দোলনে, পথে সারিতেছে আহার।

রাষ্ট্রীয় লাঠি টিয়ার গ্যাস জলকামানে পরিবেশ ভারি।
রাষ্ট্র বেচিতেছে দেশ,বিক্রয় নাকি খুবই জরুরি।

এখন শুধু কাগজের পাতা ভরিয়াছে সংবাদে–
মজুর চাষি লিখিতেছে আত্মহত্যার কাহিনি।
চতুর্দিকে গেরুয়া প্রবাহ ছোটে
রাজ্য জুড়ে হেঁটে চলে গেস্টাপো বাহিনি।

রূপশালী ধানের কথা বলিয়াছ তুমি
তুমি বলিয়াছ রূপসা জালঙ্গির কথা।
জলশূন্য তাহারা এখন
বালিচোরেরা লিখিতেছে অনন্য গাথা।

মিশর ব্যাবিলনের নারী তুমি দেখিয়াছ
রেশম কোমল তাহাদের অপূর্ব শরীর।
ফুলবতী সোরেন রোশনারা বিবি সোনালি ঘোষেরা খাদ্য এখন
সোনাগাছি হাড়কাটা গলিতে দেহ কেনাবেচা চলে পেটের দরে
রাত্রি নামে গভীর।

রাষ্ট্র নেতাদের কথা তুমি চিত্রকল্পে বলিয়াছ
রক্তপাত ও হিংস্রতার কথা কাব্যিক মহিমায়।
সময় দ্রুত চলিয়া যায়…
পরিবর্তনের ছবি আঁকি আমি
তোমার অনুকরণে ব্যর্থ প্রচেষ্টায়।

তুমি কি জানো কি কষ্ট যন্ত্রণায়
আমরা আছি বাংলার এই বারান্দায়?
মানুষ আর মানব, অন্ধকার ও আঁধারের পার্থক্য করিয়াছ তুমি
অস্ত্র খুন রক্তপাত আর আগুন
নাচিতেছে এখন আমাদের চোখের তারায়।

বাংলার রূপ দেখিয়াছি আমি
পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর—বলিয়াছিলে তুমি।
ভাটফুলের গন্ধ নাই, নাই গুলঞ্চলতার পেলবতা
নিহত ছড়ানো ছিটানো লাল বটফলের মতো
লাশগুলি খুঁজিয়া পাইবে তুমি।
তাহারা ক্রোড়ে জাগিয়া আছে তোমার জন্মভূমি।