অবতক খবর,২৬ আগস্ট,মালদা: জলের তলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র। ভবনের চারিপাশ জল থৈ থৈ করছে।

পরিষেবা দিতে কার্যত প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে করোনা যোদ্ধা স্বাস্থ্যকর্মীদের বলে অভিযোগ। বর্ষার তিন মাস এই অবস্থায় স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ চালিয়ে যেতে হয়। এমনই ঘটনা সামনে এসেছে মালদার মানিকচক থানার মথুরাপুর এলাকায়।তবে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছে এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মথরাপুর ক্লাব এন্ড লাইব্রেরীর কর্তৃপক্ষ নিজেদের ক্লাব ভবনকেই তুলে দিয়েছে স্বাস্থ্য কর্মীদের হাতে।এই ক্লাব ভবন থেকেই আগামী তিন মাস পরিষেবা দিতে হবে এমনটাই বলছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। গোটা পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ও ব্লক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্মীদের।দ্রুত ব্লক প্রশাসনকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পঞ্চায়েত প্রধানের।

মথুরাপুর এলাকায় অবস্থিত খৈরাবাদ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র।পাশেই অবস্থিত একটি আইসিডিএস কেন্দ্র ও একটি ভূমি দপ্তরের অফিস।বর্তমানে তিনটি দপ্তরই জলের তলায়।ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জল ঢুকে থৈথৈ করছে সমস্ত দপ্তর অফিস। এই পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দুটি অফিস বন্ধ থাকলেও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ করা কার্যত দুস্কর হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে মথুরাপুর অঞ্চল এলাকার গর্ভবতী মহিলা সহ শিশুদের টিকা থেকে শুরু করে সমস্ত রকম কাজ করা হয়। জল প্লাবিত হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য ভবন পরিষেবা দেয়া অসম্ভব হয়েছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। আর এই কি পরিস্থিতিতে গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্মীদের।

এ প্রসঙ্গে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী সান্তনা দাস জানান, প্রতিবছরই বর্ষার সময় প্লাবিত হয়ে যায় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র। পরিকাঠামোগত সমস্যার কারণে জলে ডুবে থাকছে স্বাস্থ্য ভবন। পাশে যে সমস্ত অফিস রয়েছে তারা নিজেদের পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি অনুষ্কা পরিষেবা দেওয়া আমাদের পক্ষে বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষার এই জলের তলায় থাকা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছে পরিষেবা দিতে হচ্ছে। জলে সাপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়েছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভিতর সাপের দেখা মিলছে। গোটা পরিস্থিতির কথা পঞ্চায়েত প্রশাসনকে জানানো হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তারা। বছরের বর্ষার সময় তিন মাস চরম সমস্যায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিতে হয়।

কিন্তু পাশে থাকা ক্লাব কর্তৃপক্ষ এগিয়ে এসে নিজেদের ভবনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। সমস্ত ওষুধ পত্র নথিপত্র সমস্ত কিছুই ক্লাব ভবনে রেখে যতটা পারা যায় গর্ভবতী মহিলা থেকে শিশুদের পরিষেবা দিতে হচ্ছে।

সস্তা প্রথম ভবনের পাশে রয়েছে মথুরাপুর ক্লাব এন্ড লাইব্রেরীর একটি ভবন। উঁচু স্থানে ভবন থাকায় স্বাস্থ্যকর্মীদের দুরবস্থার কথা মাথায় রেখে ক্লাব ভবনকে অস্থায়ী স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষ ভবন কে হস্তান্তর করে দিয়েছে স্বাস্থ্য কর্মীদের হাতে। এ প্রসঙ্গে ক্লাব সম্পাদক সৌরভ মালাকার জানান, প্রতিনিয়ত গর্ভবতী মায়েরা ও শিশুরা পরিষেবা নিতেই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসে। কিন্তু বর্তমানের স্বাস্থ্যকেন্দ্র জলের তলায় থাকায় পরিষেবা দেওয়াটা দুস্কর হয়ে উঠেছে।তাই ক্লাব ভবনকে আপাতত জল না কমা পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে। সত্যিই খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে পাশাপাশি তিনটি সরকারি দপ্তরের ভবন গুলির। দ্রুত যাতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় তাই গ্রাম পঞ্চায়েত কে বিষয়টি জানানো হয়েছে ক্লাবের তরফে।

এ প্রসঙ্গে মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মিলন মন্ডল জানান, জলে প্লাবিত হয়ে যাওয়ার স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘটনা তিনি শুনেছেন। বিগত দিনে ব্লক প্রশাসনকে তিনি জানিয়েছিলেন তারপর কোন ব্যবস্থা হয়নি। অবরোধ ব্লক প্রশাসনের আধিকারিক কে জানিয়ে যাতে দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেই আশ্বাস দেন তিনি।