অবতক খবর,১৪ এপ্রিল,মলয় দে,নদীয়া:- কেউ ব্যস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউবা খবর কাগজ পড়ছেন, অনেকে আবার ভ্যাপসা গরম থেকে রেহাই পেতে পাখার হাওয়ায় জুড়াচ্ছেন শরীর। এসেছেন অন্ধকার রাত ভোরে , যাবেন সন্ধ্যে হলে। লকডাউনে সমস্ত পুঁজি সংসার খরচেই শেষ হয়ে গেছে, করোনার দীর্ঘ কর্মহীনতা কাটিয়ে সাধ্যমত টাকা পয়সা ধার করে আবারও নব উদ্যমে কাজে নেবে ছিলেন হাট ব্যবসায়ীরা। ভেবেছিলেন চৈত্র মাসে সমস্ত পোশাক বিক্রি হয়ে গেলে পুঁজি বাড়বে অনেক টাই, শোধ হয়ে যাবে মহাজনে ঋণ। সমস্ত আশা-ভরসা জল নয় তেল ঢাললো এবারে।

পেট্রোল-ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে ক্রেতারা দূর-দূরান্ত থেকে আসতে পারছেন না অন্যদিকে মহাজনের কাছ থেকে মাল নিয়ে আসা যাওয়ার খরচও বেড়েছে বেশ খানিকটা। নিত্য প্রয়োজনীয় দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের হুড়োহুড়ি নেই চৈত্র মাসের সেলের বাজারে। একশর মাল খালি পঞ্চাস, কিংবা তিনটে বা চারটে একত্রে অবিশ্বাস্য দামে এসব এখন ইতিহাস। বুধবার এবং শনিবার করে বসে শান্তিপুর স্টেশন সংলগ্ন বাগচীর বাগান নীল মনিহাট। করোনার আগেও সেখানে এত মানুষের সমাগম হত পুলিশের ব্যবস্থা পর্যন্ত রাখতে হতো শান্তিপুর থানা থেকে। তবে এবার ফাঁকা ধুধু করছে হাট প্রাঙ্গণ।

আশেপাশে বিভিন্ন হাট বৃদ্ধি এবং দোকানদার বেড়ে যাওয়ার কারণে বেচাকেনা কম এমনটা মানতে রাজি নন বিক্রেতারা, তারা বলেন, তেমনি ক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে অনেকটা কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির কারণেই এ বছর এই অবস্থা। শান্তিপুর থানার মোড়, সুত্রাগড় চারটি কাপড়ের হাট কিংবা শান্তিপুর পেরিয়ে চাকদহ, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট আইসতলা, বেথুয়া সর্বত্রই এই অবস্থা এমনটাই জানাচ্ছেন বিভিন্ন হাটে বিক্রির জন্য পৌঁছানো বিক্রেতারা।

তাদের অভিজ্ঞতায় জানা যায় একসময় যে কারণেই হোক না কেনো দোকানের সারা বছরের অবিকৃত পোশাক-পরিচ্ছদ কম দামে বিক্রি করে দেওয়া হতো এই সময়। উদ্দেশ্য ছিলো মহাজনের টাকা পরিশোধ করা। নতুনভাবে আবারো শুরু হতো নতুন ব্যবসা। কিন্তু এখন সরকারি টেক্স এর পরিমাণ বৃদ্ধি হওয়া ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করা ইনকাম ট্যাক্স এর ফাইল প্রস্তুত করা এবং অন্যান্য আইন সংক্রান্ত খরচ বেড়েছে অনেকটা, সেই তুলনায় বিক্রি নেই। আগে এসব কিছুই ছিল না কিন্তু হুড়িয়ে বিক্রি ছিলো। বিশেষত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সারা বছরের সংসারে ব্যবহৃত নানান পোশাক-পরিচ্ছদ কিনে রাখতেন এ সময়ে, এ বছরে মানুষের হাতে অর্থই নেই তাই কিনবে কি করে?