অবতক খবর,১৮ সেপ্টেম্বর: বেকারত্ব এখন ভারতবর্ষে জাঁকিয়ে বসেছে। দেশের যুবক-যুবতীরা কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তাদের ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিনের দিন দেশের যুবক-যুবতীরা জাতীয় বেরোজগার দিবস পালন করে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আর এই সব কিছুর মধ্যেও রাঁচির নামকুমের বাসিন্দা ঋদ্ধি শর্মার খবরও আপনাদের জানা উচিত।

মোদিজীর সবথেকে বড় ফ্যান বলা যায় ঋদ্ধিকে। এই ঋদ্ধি শর্মা একসময় সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে ছিলেন। ২০১৯ সালে যখন কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা যখন প্রত্যাহার করা হয়, তখন আনন্দে আত্মহারা হয়ে ঋদ্ধি তার পিঠ জুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ট্যাটু করে নেন। এই কাজের জন্য সেই সময়ে ঋদ্ধি বহুল চর্চিত হন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই ঘটনা মানুষ ভুলে গেছেন। আর ঋদ্ধিও সাধারণ জীবন যাপন করতে থাকেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সবচেয়ে বড় ফ্যান ঋদ্ধি শর্মা নিজের একমাসের রোজগারের সমস্ত টাকা এই ট্যাটু তৈরিতে খরচ করেন।
সেইসময় ঋদ্ধি একটি দোকানে চাকরি করতেন এবং মাসিক ৬ হাজার টাকা তিনি পেতেন। মোদিজীর ট্যাটু করার জন্য তিনি তার বন্ধু-বান্ধবদের কাছ থেকেও আর্থিক সাহায্য নিয়েছিলেন। প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা লেগেছিল সেই ট্যাটু করতে। কিন্তু এই বছর লকডাউনের জেরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ওলট-পালট হয়ে যায় আর ঋদ্ধি নিজের কাজ হারান। কিন্তু ঋদ্ধি এই পরিস্থিতিতেও ভেঙে পড়েননি তিনি ফুটপাথে জুতো-চটি বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে ঋদ্ধির ব্যবসায় লোকসান হয়। আপাতত ঋদ্ধি বেকার। সে কাজের জন্য অনেক জায়গায় আবেদন করেছেন, কিন্তু কোথাও সদুত্তর পাননি।

রাঁচির নামকুমের কৈলাশনগরের একটি ছোট্ট বাড়িতে ঋদ্ধি এবং তার পরিবার বসবাস করেন। মা-বাবা এবং ভাইকে নিয়ে তার ছোট্ট পরিবার। ঋদ্ধির বাবা নরেশ শর্মা নামকুম স্টেশন সংলগ্ন অঞ্চলের ত্রিপল টানিয়ে ছোটখাটো একটি দোকান চালান। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। নরেশবাবু পেশায় নাপিত এবং লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন তার দোকান বন্ধ। আর্থিক অনটন তাদের ঘিরে ধরে। আনলক শুরু হতেই তার বাবা আবার কাজ শুরু করেন। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে কোনরকমে সংসার চলছে তাদের। নরেশ বাবু জানান, এই ট্যাটু করার সিদ্ধান্ত তিনি কোনদিনই মেনে নেননি। ঋদ্ধির তার বাবার বিরুদ্ধে গিয়ে পিঠে ট্যাটু করিয়েছেন।

কিন্তু ঋদ্ধি মোদিজীর এত বড় ফ্যান হওয়া সত্ত্বেও বিজেপির কোন কর্মকর্তা তার খোঁজ নেননি। এমনকি ঋদ্ধি যখন খবরের শিরোনামে ছিল তখন বিজেপির কোন নেতা মন্ত্রী বা সামান্য কর্মীও তার সাথে এবং তার পরিবারের সাথে দেখা পর্যন্ত করেনি। লকডাউনে তাদের আর্থিক অবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়ে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী নরেশ বাবু। ঋদ্ধির ভাই ছোটখাটো পার্টটাইম কাজ করে। যার ফলে ছোটখাটো খরচ তাদের চলে যাচ্ছে। নরেশ বাবু বলেন, যারা রাজনীতি করেন তারা শুধু নিজের লাভ দেখেন। কোনো নেতাই কারোর নয়। যদি সত্যি সত্যিই নেতারা মানুষের পাশে থাকতেন তবে ঋদ্ধিকে হয়তো আজ বেকার বসে থাকতে হত না।