অবতক খবর,২৩ মার্চ: কল্যাণী এবং কাঁচরাপাড়া পৌরসভা বিগত বছরের সামগ্রিক আর্থিক হিসেব জমা দেয়নি। সেই কারণে চলতি অর্থ বর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্যের প্রতিটি পৌরসভা। ২০২৩-২৪ অর্থ একেবারে অন্তিম পর্যায়ে চলতি অর্থবর্ষে ২৩০০ কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটি টাকাও আসেনি রাজ্যে। তার কারণ স্বরূপ বলা হয়েছে এই টাকার ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল দিল্লি। তার মধ্যে অন্যতম একটি রাজ্যের একশ শতাংশ ইউ এল বি’র অর্থাৎ প্রতিটি পৌরসভা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের আর্থিক হিসেব এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষের আভ্যন্তরীন হিসেবের অডিট রিপোর্ট জমা করা বাধ্যতামূলক।

সূত্রের খবর, রাজ্যের ১২৬টি পৌরসভা এই সমস্ত হিসেব নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করলেও কল্যাণী এবং কাঁচরাপাড়া সেটা করেনি। পৌরসভাগুলির আপলোড করা এই সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখবে পুরদপ্তর। তারপর জমা দেওয়া হয় কেন্দ্রের কাছে। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র এই দুটি পৌরসভার জন্যই রাজ্যের প্রাপ্য সমস্ত পৌরসভার টাকা আটকে গেল। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের শীর্ষকর্তারা। হিসেব কেন জমা পড়েনি তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল এই দুই পৌরসভার পৌরপ্রধানদের কাছে।

এ প্রসঙ্গে কল্যাণী পৌরসভার চেয়ারম্যান নিলীমেষ রায় চৌধুরী বলেন,২০১৫ সাল থেকে এই হিসেব বাকি ছিল। সেই কাজ গত দুই বছরে তা শেষ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। বর্তমানে ২১-২২ বর্ষের কাজ চলছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে ঠিক এই যুক্তিই দিয়েছেন কাঁচরাপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারী। তিনি বলেছেন,বিগত ৭ বছরের হিসেব বাকি ছিল। তিন বছরের কাজ শেষ হয়েছে এবং বাকি চার বছরের কাজ শেষ হতে আরও তিন চার মাস সময় লাগবে।

অন্যদিকে, সূত্রে জানা গেছে,অন্যান্য বেশ কয়েকটি পৌরসভার এইরকম বিগত বেশ কয়েক বছরের হিসাব দেওয়া বাকি ছিল। কিন্তু তাদের উপরে চাপ থাকায় প্রায় ১৫টি পৌরসভা ইতিমধ্যেই সেই হিসাব দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম হল এই দুটি পৌরসভার ক্ষেত্রে। যার জেরে টাকা পেলোনা গোটা রাজ্যের ১২৬টি পৌরসভা। শুক্রবার রাজ্যের ৩১টি পৌরসভাকে পঞ্চম রাজ্য অর্থ কমিশনের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় কিস্তির ৩৫ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা পুর দপ্তরের তরফে ছাড়া হয়েছে।

অন্যদিকে কলকাতা পৌরসভা সহ ১৭টি পৌরসভার চতুর্থ কিস্তি ছাড়ার জন্য অর্থ দপ্তরে প্রস্তাব পাঠিয়েছে পুরদপ্তর। তবে ৮০টি পৌরসভার প্রথম কিস্তির টাকার খরচের হিসেব এখনো দেয়নি। ফলত এই হিসেবে না দিলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া অসম্ভব।

অর্থাৎ এইসব দেখে বলাই বাহুল্য যে,মুখে শুধু উপরি মেকাপ,ভেতরে সব ফাঁপা। একটু রাস্তা ভাঙা থাকলে সেটি কোনরকম রিপেয়ারিং করে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে অনেক বড় রাস্তা করে দেওয়া হয়েছে।

এইসব দেখে বিরোধীরা বলছে, এইরকম অভিযোগে জর্জরিত এই পৌরসভা। কাজ করলে তো হিসেব দেবে,কাজ করেনি তাই হিসেব দিতে পারছে না।

কাঁচরাপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান বেশিরভাগই অনুপস্থিত থাকেন। তিনি মানুষের সেবায় কম নিজের সেবায় ব্যস্ত থাকেন বলেই তো তিনি হিসেব দিতে পারেননি, বলছেন বিরোধী নেতারা।