অবতক খবর,১৪ সেপ্টেম্বরঃ শুনতে অবাক লাগলেও এমনই ঘটনা ঘটেছে শহর কল্যাণীর বি ব্লকে, বি-৭/৩১৭ নম্বর বাড়িতে। শহরের অভিজাত অঞ্চলে বাড়ি ভাড়া নিয়ে গড়ে উঠেছিলো আলোর দিশা নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। যার সভাপতি সুব্রত সরকার এবং সম্পাদক সৌমিতা দে। যাঁরা আবার স্বামী-স্ত্রীও বটে। সেই আলোর দিশা-র নিচেই জমে রয়েছে অন্ধকার! সিআইডি-র হানায় সামনে এসেছে আলোর দিশা-র অন্দরের অন্ধকারময় সেই ছবি।

জানা গেছে, আলোর দিশা-র আড়ালে চলতো আর্থিক নানা কেলেঙ্কারি ও প্রতারণা। মূলত, ব্যাঙ্কের লোন পাইয়ে দেওয়ার নাম করেই চলতো এই প্রতারণা। বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ পেয়ে বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ সিআইডি-র ১৭-১৮ জনের প্রতিনিধি দল ও গোয়েন্দা পুলিশ ঘিরে ফেলে বাড়িটি।

সূত্রের খবর, বাড়িতে মিলেছে বেশ কিছু ব্যাঙ্কের রাবার স্ট্যাম্প, লোনের জন্য আবেদনপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম।সবশেষ পাওয়া খবর, সিআইডি-র এই তল্লাশি শেষ হতে রাত গড়িয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে উৎসুক মানুষের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কল্যাণী থানার পুলিশবাহিনী। সিআইডি সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সুব্রত সরকার এবং সম্পাদক সৌমিতা দে-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে সাতজনকে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে দুটি ল্যাপটপ। মিলেছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৭০টি পাশবই। এই খবর সম্প্রচার করা অবধি তল্লাশি চলছে।

প্রসঙ্গত, এই আলোর দিশা-য় সপ্তাহে তিনদিন বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণও দেওয়া হতো। ছিলো বিনামূল্যে দুঃস্থদের টিউশন দেওয়া, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, অঙ্কন শিক্ষা থেকে শুরু করে নানাবিধ কর্মকাণ্ড। দস্তুরমতো লিফলেট ছেপে তা প্রচারও করা হতো। তাঁদের একটি বিলাসবহুল গাড়িও রয়েছে, যাতে রাজ্য সরকারের স্টিকার লাগানো আছে।

স্বভাবতই সেই প্রতিষ্ঠানে ছিলো বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির আনাগোনাও। সেইসব ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের ছবি তুলে তা আপলোড করা হতো সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইটে। তাই মানুষের বিশ্বাস অর্জনে বেশি সময় লাগেনি। বছর দুয়েকের মধ্যেই ফুলেফেঁপে ওঠে আলোর দিশা।

অভিযোগ পাওয়ার পর প্রায় মাসখানেক ধরে ওই বাড়িরই উল্টো দিকের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ওৎ পেতে ছিলেন সিআইডির এক আধিকারিক। যার জেরে এদিন দুপুরে পর্দা ফাঁস হয় স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের আড়ালে চলা আর্থিক প্রতারণার।