অবতক খবর, হক জাফর ইমাম, মালদা :: কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি’র (ইনটাক) সভাপতির পদ নিয়ে সরগরম হয়ে উঠলো মালদা। এক পদে দুইজন দাবিদার, এনিয়ে গত কয়েক মাসের ব্যবধানে চার থেকে পাঁচবার ইনটাকের সভাপতির পদে রদবদল করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর যাকে ঘিরে মঙ্গলবার মালদা শহরের রথবাড়ি এলাকায় কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের ওই অফিসে তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়।এমনকি ওই সংগঠনের কয়েকজন সমর্থকেরাও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মারমুখী হয়ে ওঠেন। কিন্তু ওই শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব জেলার সভাপতি পদে নতুন করে লক্ষ্মী গুহকে দায়িত্ব দিয়েছে বলে দাবি করায় ব্যাপক গোলমাল শুরু হয়। নিজেকে এখনও সংগঠনের সভাপতি বলে দাবি করে অফিস ঘরের মধ্যেই চেঁচামেচি শুরু করে দেন কাজী নজরুল ইসলাম ।

এই সভাপতির পদের দায়িত্ব পাওয়ার রাজ্য নেতৃত্বের চিঠি দেখিয়ে লক্ষ্মী গ্রহ এবং কাজী নজরুল ইসলাম একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করে। যদিও এদিন ওই সংগঠনের উপস্থিত কর্মীদের সাফ কথা রাজ্য নেতৃত্ব বর্তমান যাকে ইনটাকের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন, তাকেই মানতে হবে।মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে সাংবাদিক বৈঠক ডাকা হয় মালদা শহরের রথবাড়ি এলাকায় কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি ভবনে। এই সাংবাদিক বৈঠকটি ডাকেন প্রয়াত ওই শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি  বিশ্বনাথ গুহের স্ত্রী লক্ষ গুহ। তিনি সাংবাদিকদের সামনে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মহম্মদ কামারুজ্জামানের নিয়োগ পত্রের চিঠি দেখিয়ে নিজেকে জেলা সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করেন। ২৬  অক্টোবর পাঠানো সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয় অবিলম্বে কাজী নজরুল ইসলাম যিনি প্রেসিডেন্ট বলে দাবি করছেন, তাঁকে এই পদ থেকে বরখাস্ত করা হলো।

এই সাংবাদিক বৈঠকের সময় উপস্থিত আরেক সভাপতির দাবিদার কাজী নজরুল ইসলাম বেজায় চটে ওঠেন। এরপর দুই পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে গোলমাল শুরু হয়। কাজী নজরুল ইসলামের বক্তব্য, ৬ অক্টোবর আমাকে রাজ্য নেতৃত্ব জেলার আইএনটিইউসি সভাপতি পদের দায়িত্ব দিয়েছিলো। হঠাৎ করে এখন আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হচ্ছে। কিন্তু রাজ্য নেতৃত্ব এরকম কোনো নির্দেশ আমাকে দেয় নি। অন্যদিকে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে লক্ষ্মী গুহ বলেন, আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরেই আইএনটিইউসি’র মালদা জেলার সভাপতি ছিলেন। উনার অবর্তমানে রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে এই পদের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু বারবার নানান জটিলতা তৈরি করে এবং বিতর্ক সৃষ্টি করে কাজী নজরুল ইসলাম গোলমাল পাকাচ্ছে নিজেকে এই সংগঠনের সভাপতি বলে দাবি করছে। এ ব্যাপারে আমি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম ।ওনার কথামতো সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মহম্মদ কামরুজ্জামান আমাকে আইএনটিইউসি’র জেলা সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছে।

এদিকে সভাপতির পদ নিয়ে দুইজনের দাবিদারের ঘটনায় এদিন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের ভবনে  উপস্থিত দুই পক্ষের অনুগামীদের মধ্যে ব্যাপক গোলমাল বেঁধে যায়। এক পদে দুইজন দাবিদার এরকম চলতে থাকলে জেলার এই সংগঠনের নাম বদনাম হবে এমনও অভিযোগ করতে শোনা যায় কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু পরিস্থিতি কোন রকম ভাবেই বদলায় নি। দুজনেই নিজেদের সভাপতি বলে দাবি করতে থাকেন।এরই মধ্যে এক কর্মীর মাধ্যমে মোবাইলে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মহম্মদ কামরুজ্জামান জানিয়ে দেন নতুন করে মালদার সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লক্ষ্মী গুহকে। তাতেই সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থামলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ে নি।