অবতক খবর,২৯ মেঃ অসহায় ভবঘুরে পাগলের সেবাযত্ন করে মানবীকতার পরিচয় দিলেন ওসি স্বপন রায়।

ময়লা, ছেড়া, জামা কাপুড় , শরীর থেকে বেরুচ্ছে পচা দূর গন্ধ ওদের দেখার কেউ নেই! ওরা যে পাগল, রাস্তার পাগল, তার উপরে শহর বহরমপুর ব্যস্ত শহররের মানুষ। কে খাচ্ছে কে খাচ্ছে না দেখার কেউ যে নেই। তার উপরে পাগল। হ্যাঁ সত্যি শুনছে রাস্তার ধারে বসে থাকা আস্ত একটা পাগলকে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে মানুষ করে তুললেন বহরমপুরের ওসি ( NH34) স্বপন রায়।

কী হয়েছিল ঘটনাটা আসুন জেনে নিই রবিবার ছিল অঙ্গনওয়াড়ী পরীক্ষা , বহরমপুর যানযট মুক্ত করতে ভোর থেকেই চলছে বাস্ততা। কখনো গির্জারমোড় কখনো বা বাসস্ট্যান্ড থেকে গঙ্গার ওভার ব্রিজ বিভিন্ন প্রান্ত ছুটে চলেছেন। সকাল সাড়ে ১০ টা নাগাদ গির্জার মোড়ে দাড়িয়ে অসহায় চারজন ভিখারী সাহায্যের জন্য হাত বাড়ালেন ওসি স্বপন স্যারের কাছে । ব্যস্ততার মধ্যেও ওদের জন্য সাধ্যমতো ডিম রুটির খাবারের ব্যবস্থা করেন। জানা গিয়েছে এমন অসহায় মানুষ কিংবা ভিখারি স্যারের কাছে মাঝে মধ্যেই আসেন। কিন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কিছুটা দূরে আস্ত একটা পাগল রাস্তার ধারে আনমনে বসে আছে। ওসির চোখ পড়ে তার দিকে, সঙ্গে থাকা সিভিকে ওসি স্বপন রায় বলেন ওকে ডেকে নিয়ে এসো। তাতে লাভ হয়নি । তখন ওসি স্বপন বাবু নিজে গিয়ে পাগলটিকে ডেকে খাওয়ার জন্য বললে প্রথমে খেতে রাজী না হলেও পরে সিদ্ধ ডিম দিয়ে রুটি খান।

এখানেই শেষ নয় স্বপন বাবুর চোখ পড়ে পাগলটির চেহারার উপর ছেড়া জামা প্যান্ট তার উপরে সারা শরীর জুড়ে ময়লা, কতদিন যে স্নান করে নি, ময়লা জমতে জমতে চুলে জটলা পেকে গেছে। এইভাবে থাকলে যে অসুস্থ হয়ে মারা যাবে ! এই দেখে মন খারাপ ওসি স্বপন বাবুর। খাওয়ার পরেই শুরু পাগলের সেবা যত্ন । চুল কাটতে নিয়ে আসা হল নাপিত। সাবান শ্যাম্পু দিয়ে যত্ন করে স্নান করিয়ে দেন। ছেড়া ময়লা পোষাক তো আর পরানো যায়না, কিনে নিয়ে আসেন নতুন জামা এমন কী পায়ের জুতো পর্যন্ত কিনে দেন NH34 এর ওসি স্বপন রায়। এমই মানবীক চিত্র দেখল ব্যস্তময় বহরমপুর শহর।

পাগলের মুখে ফুটল হাসি, আনন্দময় চোখ নিয়ে পাগলটি ধন্যবাদ জানাতে ভুল করেননি ওসি স্বপন স্যারকে। এই মানবিক মনের মানুষটি আমরাও অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। স্যার আপনি এভাবেই মানুষের পাশে থাকুন , হয়তো আপনার দেখে আর অনেকেই এভাবেই সাহায্যের হাত বাড়াবেন।