জোড়াসাঁকোয় রাজনৈতিক দখলদারি
ধুর, তোর রবীন্দ্রনাথ!জোড়াসাঁকো!
তমাল সাহা
তুমি কতদূর যাবে? হাঁটতে হাঁটতে চলে যাও ভাগীরথী পাড়ে। জোড়াসাঁকো নাম শুনেছ কোনোদিন? ওই যে রবীন্দ্রনাথ– পঁচিশে বৈশাখ জন্মদিন আর বাইশে শ্রাবণ মৃত্যুদিন! এসব অবশ্যই অনেক সেকেলে প্রাচীন এবং
বাতিলের খাতায়। এসব নাম আর মুখে না তোলাই ভালো।
ঐতিহ্য? জোড়াসাঁকো বিল্ডিং এবং রবীন্দ্রনাথ দুটোই এখন অসহ্য। এতো পুরনো বিল্ডিং ভেঙে পড়তে পারে। ওখানে কিছু অংশে ওইসব রাজনৈতিক দপ্তর করে দাও। বিল্ডিংটি থাকবে সরগরম। উজ্জ্বল শব্দ ব্যক্তিদের ঘটবে পদার্পণ।
ওই বিল্ডিংয়ে তো রবীন্দ্রনাথ ও বঙ্কিমচন্দ্রের সাক্ষাৎ হয়েছিল! একজন বিশ্বকবি, অন্যজন সাহিত্য সম্রাট। এটা কি এমন ঘটনা বিরাট?
ভাঙো, ভাঙো। ব্যর্থ প্রাণের আবর্জনা পুড়িয়ে ফেলো।
বেনারস ইউনিভার্সিটি, হরিদ্বারে প্রদীপ ভাসান, বেনারস ঘাট, বিধবা আশ্রম, অলিগলি, সত্যজিৎ রায়– এসব ঘটনার কথা তুমি জানো? তাহলে এবার চলো গঙ্গাপারে। উত্তর প্রদেশ, যোগী রাজ্যে। যে যোগ জানে সেই তো যোগী।
শাসক? তিনি তো আমাদের প্রজাপালক। পালক আমাদের তো ভালই লালন করে থাকেন। রবীন্দ্রনাথ? তার ওসব লেখা পুরনো। উন্নয়নে বাধা। বাতিল করো। ওসব চলে নাকি! হটিয়ে দাও। ওই যে বিশ্বভারতী! কতসব দেশ-বিদেশের মনীষীরা এসেছিল সেখানে! সেসব তো এখন মৃত!
শিক্ষায় সিলেবাসে ঢুকিয়ে দাও পতঞ্জলি মার্কা রামদেব, যোগেশ্বর দলিত সংখ্যালঘু অত্যাচারী যোগীর লিখন।
আরে এখন প্রয়োজন ধর্মীয় উত্থান, ব্রাহ্মণ্যবাদের জাগরণ
এখানে এখন নীল সাদা-র দৌরাত্ম্য ভীষণ, ওখানে গেরুয়া প্রবাহের প্রবল আক্রমণ।