যৎ দৃষ্টং তৎ লিখিতং….
বিক্রি বেড়ে গেল
তমাল সাহা
বিক্রি বেড়ে গেল। এখানে যত গেরস্থালি জিনিসপত্র বিক্রির দোকান আছে সেখানে একটাও অ্যালুমিনিয়ামের কেটলি আর অবশিষ্ট নেই, সব বিক্রি হয়ে গেছে।
এখানে যত দশকর্ম ভাণ্ডার ছিল, সংখ্যায় ১১ টি যারা মাটির ভাড় বিক্রি করতো সেখানে একটাও মাটির ভাড় পড়ে নেই, সব শেষ।
কুমোরপাড়ায় গিয়ে দেখি কুমোরের চাকা অনবরত ঘুরছে। কুমোরের ছেলেমেয়ে বউ সবাই তাল তাল মাটি মাখছে। সেখানে শুধু মাটির ভাড় তৈরি হচ্ছে।
এখানে পাঁচটা বেকারিতে রাত দিন নিমকি বিস্কুট তৈরি হচ্ছে। বিস্কুটের দোকানে কোন বিস্কুট নেই। বেকারি মালিককে জিজ্ঞেস করি, মুখ ভার করে বসে আছেন কেন? আরে ফ্লাওয়ার মিল ময়দা সাপ্লাই দিতে পারছে না!
চা পাতা বিক্রির দোকানে লাইন পড়ে গেছে। কয়েকজন দোকানি বলল, পুলিশ এসে বলে গেছে, এত ভিড় আর আমরা সামাল দিতে পারবো না। কিছুক্ষণ পরেই ঝাঁপ বন্ধ করে দিন। একজন দোকানী বললেন, দাদা! আপনি তো শিক্ষিত। চা সাপ্লাইয়ের জন্য ওই যে লালবাজারের পেছনে টি-বোর্ড আছে না, সেখানে কি যোগাযোগ করতে হবে?
বাজারে গিয়ে দেখি আলু বেগুন নেই। আমি যার কাছ থেকে সবজি কিনি তার নাম রতন। কিরে রতন! কি ব্যাপার তোর দোকান তো ফাঁকা দেখছি!!
ও বলে, বেকার ছেলেরা সব কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্টক করছে। পুজোয় চপের দোকান দেবে তো!
আর মুড়ির দোকানে গিয়ে দেখি, বোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে– মুড়ি নেই, খই চিঁড়ে, নকুল দানা, বাতাসা আছে।
মাসিক ফর্দ নিয়ে মুদির দোকানে গেলুম। অনেক ঘোরাঘুরি করেও কোনো দোকানে পাঁচটি জিনিস পেলুম না– সর্ষের তেল, আস্ত মটর, ছোলা, বাদাম আর নুন।
দোকানী বললেন, বেকার ছেলেরা সব কিনে নিয়ে গিয়েছে। এবার পুজোয় ঘুগনি বানাবে আর চপ ভাজবে।
পাড়ার ছেলে সবচেয়ে শিক্ষিত নাম রবীন্দ্রনাথ, ডাকনাম রবি।
কাল রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মরার খাট কিনতে গিয়েছি, ছুতোর মিস্তিরি বলে, একটাও মরার খাট নেই। দিনরাত টুল আর টেবিল বানাচ্ছি। ফুরসত নেই। অর্ডারের পর অর্ডার আসছে।
আজ ভাদ্র মাসের সংক্রান্তি, বিশ্বকর্মা পুজো!
জয় মা দুর্গা, দুর্গতিনাশিনী!
মা! মা গো! সালঙ্কারা হয়ে এসো।