অবতক খবর, সংবাদদাতা ::  মুকুল রায়কে ছক করে রাজ্য কমিটি থেকে ছেঁটে ফেলা ও মুকুল পন্থীদের কোর কমিটিতে এনে তাঁকে দূরে সরিয়ে রাখার এই খবর অবতক খবরে প্রকাশিত হতেই হইচই পড়ে যায় বঙ্গ বিজেপিতে। মুকুল রায়ের ছেলে শুভ্রাংশু রায়কেও কোন পদ দেওয়া হয়নি। বরঞ্চ তাঁকে কায়দা করে ছেঁটে ফেলা হয় মুকুলবাবুর অনুগামী যুব সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-কে সামনে এনে।

এই খবর পাওয়ার পর মুকুল পন্থীরা বুঝতে পারেন যে তাদের পদাভিষেক করে মুকুল রায়কে অর্থাৎ তাদের নেতাকেই দুর্বল করে ফেলার চেষ্টা হয়েছে বিজেপিতে। ‌অবশেষে এর প্রতিবাদ জোরালো হতে শুরু করে দেয় দলের ভেতরেই। প্রতিবাদের সুর রাজ্য ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় কেন্দ্রে।

‌বঙ্গ বিজেপির যুবদের দাবি মুকুল রায়কে ছেঁটে বঙ্গে বিজেপি কখনোই ক্ষমতায় আসতে পারবে না। তারা পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, গত লোকসভা নির্বাচনে মুকুল রায়ের কৌশলের জেরেই বাংলায় বিজেপি সাংসদদের সংখ্যা ২ থেকে ১৮ হয়েছে। এখন তারা সেমিফাইনাল জিতে ফাইনাল খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সময় কোচকে সরিয়ে দিয়ে পুরো দলটাকেই অর্থাৎ পুরো জয়টাকেই ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাই তাদের ভেতরে আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে যে, “বিজেপি করতে জয় মুকুল ছাড়া বাংলা নয়।”

এই প্রতিবাদের খবর পৌঁছে যায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। ‌ প্রধানমন্ত্রী অবশেষে মুকুল রায়ের গুরুত্ব কোথায় তা বুঝতে পেরেছেন, অন্দরমহলের এমনই খবর। অন্য দিকে নির্বাচনে তৃণমূলকে পরাস্ত করতে সবরকম চেষ্টা চালাবেন বলে আগেই ঘোষণা করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সভাপতি অমিত শাহ। তাই নবাগত ও প্রবীনদের মিলিয়েই রাজ্য কমিটি তৈরি করে ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন। তবে মুকুল রায় কে যেভাবে ছেঁটে ফেলার চেষ্টা চলছিল সেটা ভালোভাবে নেননি প্রধানমন্ত্রী। মুকুল রায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর দলের সেনাপতি ও চাণক্য বলে পরিচিত অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলেন বলে খবর।

অমিত শাহ বাংলার বুকে দাঁড়িয়ে বলে দিয়ে গেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে কটাক্ষ করে বলেছিলেন যে ‘বাংলার দায়িত্বটাও সামলে নিন’ তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই ইচ্ছা পূরণ করা হবে। অমিত শাহ দাবি করেছেন যে, কমপক্ষে ২০০টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি। ‌তাই সেই দাবি পূরণ করতে মুকুল রায়কে বিশেষ প্রয়োজন বলে তাঁকে বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

রাজ্যের যুব মোর্চার দাবি পরপর কেন্দ্রের দুই মহারথীর এভাবে চর্চার ও তার পর মুকুল রায়কে দিল্লি তলব করা হয়েছে। আর তাকে এভাবে দিল্লিতে তলব করার জন্য গুঞ্জন শুরু হয়ে গেছে রাজ্য রাজনীতিতে।

বঙ্গ বিজেপিতে মুকুল রায় কোন ভূমিকায় থাকবেন তা হয়তো আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে। ‌তবে এভাবে হঠাৎ করে তাঁকে দিল্লিতে তলব করাকে ভালো চোখে দেখছেন মুকুল পন্থীরা।