অবতক খবর,সংবাদদাতা , মালদা:-    মাঝ বর্ষাতেও অমিল ফরাক্কার ইলিশের। হতাশ হয়ে পড়েছেন মৎজীবীরা। এই ইলিশের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁদের সংসার। সারা বছরের রোজগার এই ইলিশের ওপর। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও জালে একটিও ইলিশের দেখা নেই। কী করে সংসার চালাবেন দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। কেউ কেউ অন্য পেশায় যাওয়ার কথাও ভাবছেন। ইলিশের আকালের জন্য গঙ্গার নাব্যতাকেই দায়ী করছেন একাংশ মৎস্যজীবী। গঙ্গার স্রোতপ্রবাহ ধীরগতিতে। বাড়ছে দূষণও। ইলিশ তার অনুকূল পরিবেশ হারাচ্ছে। বছর চারেক আগে পর্যন্ত ব্যাপক হারে ইলিশের উঠছিল ধীবরদের জালে। তারপর থেকে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই মরশুমে একেবারের করুন অবস্থা। মৎজীবীরা অন্য ব্যবসায় যাওয়ার কথা ভাবছেন। কালিয়াচক-‌৩ নম্বর ব্লক ঘেঁষে চলে গেছে পুণ্যাত গঙ্গা। গঙ্গার পাড়ের সিংহভাগ মানুষ মাছ ধরার কাজে যুক্ত। সংশ্লিষ্ট ব্লকে একদিকে যখন ভাঙনে স্বর্বশান্ত হয়েছে পড়েছেন মানুষেরা, অন্যদিকে ভরা বর্ষাতেও জেগে উঠছে চর। ফলে গতিপ্রকৃতি স্লথ হয়ে আসছে।  ইলিশের দেখা পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তারমধ্যে গঙ্গায় দূষণের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। মৎস্যজীবীদের মধ্যে শ্রীপতি হালদার, দীলিপ হালদাররা বলেন,‘‌গঙ্গায় ভুটভুটি চালিত নৌকার চলাচল বাড়ছে। ফলে গঙ্গায় দূষণ বাড়ছে। দূষণের ফলে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ফরাক্কার ইলিশ।’‌ বীরেণ হালদার, সুকিত হালদাররা কেউ ৪০ বছর, কেউ ৩০ বছর ধরে মাছ ধরার কাজ করছেন। এই ইলিশ ধরার মরশুমে তাঁদের নাওয়া-‌খাওয়ার সময় থাকে না। নেশাও চেপে বসে। আর এই নেশার টানেই দিনভর গঙ্গাবক্ষে টিনের ডিঙি করে বসে থেকেও একটিও ইলিশের দেখা নেই। হতাশ হয়ে পড়েছেন তাঁরা। তাঁরা বলেন,‘‌ইলিশের আকাল। কোনও কোনও দিন হয়ত একটা মেলে। বেশির ভাগ দিনই মিলছে না।

অথচ ২০১৬ সালে মুড়ি মুরকির মতো ইলিশ ধরেছি। এই সময়ের কথা ভাবলে চোখে জল চলে আসে। এখন মজুরের কাজে যাওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনও উপায় নেই।’‌ নৌকায় নৌকায় মাছ সংগ্রের কাজ করে থাকেন দীপক হালদার, অরুণ হালদাররা। তাঁরা বলেন, ‘‌গঙ্গাবক্ষে ঘুরে ঘুরে দিনের শেষে ৫ কেজিও ইলিশ পাওয়া যায় না। অথচ বছর চারেক আগেই আমরা রোজ গড়ে ৩০ টন মতো মাছ কিনে নিয়েছি মৎস্যজীবীদের কাছে। কবে জালে ইলিশ উঠবে আশায় রয়েছেন মৎসজীবীরা। ফরাক্কা ইলিশের চাহিদা পদ্মার ইলিশের মতো। উৎপাদন নেই বলে দামও আকাশ ছোঁয়া। ৪০০-‌৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০-‌১০০০ টাকায়। ৬০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির মধ্যে দাম ১৩০০-‌১৪০০ টাকা। ১ কেজির ওপর দাম প্রায় ২ হাজার টাকা।