হাতে সময় নেই আর
তমাল সাহা

আমি আর ইনিয়ে বিনিয়ে
কোনো অক্ষর সাজাচ্ছি না।
আমার কাছে মানুষ ছাড়া
এখন আর কোন বর্ণমালা নেই।
একটি শব্দই শুধু এখন
আমার সম্বল, আমার বাহুবল,
আমার মনোবল।
সেই শব্দটি হল মানুষ।

হাতে বেশি সময় নেই,
সময় নেই বেশি আর।
মানুষকে রাখতে হবে আগলে,
এই হোক অঙ্গীকার।

এই রাষ্ট্র কল্যাণকামী কিনা আমি জানিনা।
কেন এত দীর্ঘসূত্রিতায় ভোগে?
ভারতীয় বিজ্ঞানীরা গেল কোথায়?
রাষ্ট্রের পাশে এখন তারা
কোন বুদ্ধি নিয়ে দাঁড়ায়?

আমি ক্ষুদ্র মানুষ
সামান্য অক্ষর লিখে খাই।
সময়কে দেখি, সময় কি লিখি
সময় আর মানুষকে নিয়েই
আমার যত আঁকিবুকি।

মানুষ ছাড়া
সময় কত দ্রুত দৌড়াতে পারে,
সময় কি মানুষ ছাড়া বাঁচে?
আমার এই রাষ্ট্র কি
এখনো এসব কিছু বোঝে?

হাতে আর আমাদের
নেই কোনো সময়।
যত বেশি দেরি
তত মানুষের পরাজয়।
সময় এবং জলস্রোত
কারোর জন্য করেনা অপেক্ষা।
এ তো আমরা সকলেই জানি।
তবে কেন এত প্রতীক্ষা?
চীন, ইতালি কি এখনো
আমাদের দেয়নি কোন শিক্ষা?

দ্রুত করো, দ্রুত করো,দ্রুত করো,
দ্রুত থেকে দ্রুততর, দ্রুততম হও।
শীঘ্রই জারি করো জরুরি অবস্থা।
মানুষকে বলো, আমি আছি পাশে
আমি জনরাষ্ট্র,
আমার প্রতি রাখো আস্হা।

তোমরা যাকে বলছো,
লকআউট -শাটডাউন দ্রুত করো।
মানুষ আটকাও, ঘরে পোরো।

এখনও সময় আছে,
মানুষের খাদ্যব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করো।
এমার্জেন্সি জারি করো।
লক ডাউন, লক ডাউন, শাটডাউন করো।

বাঁচাও মানুষ!
কি দেবে তুমি পরে কৈফিয়ৎ।
বাঁচাও মানুষ!
এ দুনিয়ায় মানুষ শব্দটির
বড় ইজ্জত।

মানুষকে স্পর্শ করোনা
মানুষকে সঙ্গ করোনা
মানুষ থেকে থাকো দূরে
কী মারণ রোগ এলো,হায়!
এসব বাক্যবন্ধ লিখি আজ
চরম লজ্জায়!

এখন নিজেকেই নিজে
আত্মরক্ষা করতে শেখো।
দেরি নয়, দেরি নয়,
এখনি ঘরে ঢুকে পড়ো।
গৃহে থাকো অন্তরীণ—
সমুদ্র আকাশ,অরণ্য
প্রান্তর কিছুদিন থাকুক দৃশ্যহীন।

মানুষ ও প্রকৃতি ছাড়া
মানুষ কি বাঁচে?
অসহায় নিরুপায় মানুষ
নিজেকে তৈরি করো নিষ্ঠুর ধাঁচে।

করোনা তোমায় পিছু করেছে তাড়া।
জীবন্ত মৃত্যুদূত দুয়ারে তোমার,
হাতে নিয়ে শাণিত খাঁড়া।
রাষ্ট্রীয় চোখ খুলতে কেন এতো দেরি?
লকডাউন-শাটডাউন ঘোষণা করো
অতি দ্রুত- তাড়াতাড়ি।

ইতিহাস তুমি কি এখনও পড়োনি,
দেখোনি নতুন ইতিহাসের পাতা?
ইতালি, চীন,ইরান লিখে যায়
চলমান মৃত্যুগাথা!

আমি এখন ইনিয়ে বিনিয়ে
কোন কথা বলতে জানিনা,
লিখতে চাই না কোনো পদ্যছন্দ।
আমি এখন চাই—
দ্রুত লকডাউন ঘোষণা করো,
লেখো মানুষ বাঁচানোর প্রবন্ধ।