অবতক খবর,১৯ মার্চ: ১৮ মার্চ বিকেলে তৃতীয় দফায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি দল। আর বীজপুরের বিজেপি প্রার্থী ঘোষিত হয়েছেন শুভ্রাংশু রায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুধু শুভ্রাংশু রায় নয়,একই বাড়ি থেকে পিতা-পুত্র প্রার্থী হয়েছেন। অর্থাৎ পিতা মুকুল রায় প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা থেকে।

বিজেপি নাকি পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়।এদিকে একই বাড়ি থেকে দুজন প্রার্থী হয়ে বসে আছেন। এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ডাক্তারের ছেলে ডাক্তার হতে পারে,উকিলের ছেলে উকিল হতে পারে, কিন্তু একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছেলে রাজনীতিতে গেলেই দোষ!” একথা তিনি ১০০ শতাংশ ঠিকই বলেছেন। কিন্তু ওই যে, বিজেপি বারবার বলে– বিজেপি দলের একটা নীতি আদর্শ আছে,তারা পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী নয়। তাহলে কি করে এই বিজেপি দল একই বাড়ি থেকে পিতা-পুত্রকে প্রার্থী করে?

এবার আসা যাক মোদ্দা কথায়।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরেই গোটা ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে বয়ে গিয়েছিল গেরুয়া স্রোত। আর সেই স্রোতেই গা ভাসিয়েছিলেন তৎকালীন বীজপুরের তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়।

কিন্তু আমাদের পাঠক-পাঠিকাদের মনে করিয়ে দিতে চাই গেরুয়া শিবিরে যোগদানের আগে তিনি বলেছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে কোচ ফ্যাক্টরি হবে ও সেইসাথে বীজপুরের বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান হবে এমন প্রতিশ্রুতি পেলে তবেই তিনি বিজেপিতে যোগদান করবেন। ঠিক তার কয়েকদিন পরেই তিনি বিজেপিতে যোগদান করলেন, প্রতিশ্রুতি দূরে হটে গেল। বীজপুরের যুবক-যুবতীদের মধ্যে যে একটু আশার আলো দেখা দিয়েছিল যে শুভ্রাংশু রায় তাঁর দেওয়া কথা হয়তো রাখবেন। কিন্তু এ কী!

তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তার বছর ঘুরে‌ গেছে। কিন্তু কোচ ফ্যাক্টরি তো হয়নি!
আর সেইসাথে হল না কর্মসংস্থানও।
ঠিক এই প্রশ্নই এক সাংবাদিক সরাসরি তাঁর দিকে ছুড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সুকৌশলে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন। কে কবে এই কোচ ফ্যাক্টরি দু- দুবার শিলান্যাস করেছিলেন বা কে বলেছিলেন কোচ ফ্যাক্টরি হবে সেই প্রশ্ন তুলে উত্তর এড়িয়ে গেলেন। আরে বাবা সেটা তো বড় কথা নয়। যে যখন ক্ষমতায় থাকে সে-ই তো কাজ করে, সে-ই তো উন্নয়ন করে।

আর শুভ্রাংশু রায় তো এই অঞ্চলের স্বঘোষিত উন্নয়নের কান্ডারী।
এছাড়া তিনি এও নিশ্চিত যে অনেক বেশি ভোটে তিনি এই অঞ্চলে জিতবেন এবং বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। তাহলে তো এই কোচ ফ্যাক্টরির দায়িত্ব তথা বেকারদের কর্মসংস্থানের দায়িত্ব তাঁকেই নিতে হবে। তবে তিনি প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন কেন? তিনি তো নিজেই জবান দিয়েছিলেন।

এদিকে এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, তিনি উড়ে এসে রাজনীতিতে জুড়ে বসেননি। বরং একটা একটা করে ধাপ পেরিয়ে এই জায়গায় এসেছেন। তাহলে আপামর বীজপুরবাসীর সামনে তিনি যে বলেছিলেন কোচ ফ্যাক্টরির কথা, সেই নিয়ে এখন ধানাই-পানাই করছেন কেন?
তাহলে কি তিনি মানুষকে বোকা বানানোর জন্য এই কথা বলেছিলেন? তবে কি বীজপুরবাসী বোকা?

আসলে হয় তো রাজনৈতিক নেতারা এটাই ভাবেন যে, মানুষ বোকা।
কিন্তু তা নয়!
রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য অনেক কিছুই বলে থাকেন এবং অনেক কিছুই করে থাকেন বিশেষ করে ভোটের আগে ভোট পাবার স্বার্থে।

তবে বীজপুরের মানুষ কতটা কি বুঝেছেন এই নেতাদের সম্পর্কে, আর তারা কি করবেন সেটা আগামী ২রা মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরেই বোঝা যাবে।