অবতক খবর,১১মে: কাঁচরাপাড়ায় বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। গত লোকসভা নির্বাচনের পর গেরুয়া হাওয়া বইতে শুরু করে ব্যারাকপুর মহকুমা জুড়ে। আর সেই হাওয়াতেই গা ভাসিয়ে সিপিএম এবং তৃণমূল থেকে প্রচুর কর্মী বিজেপিতে যোগদান করেন। আর তাতেই শুরু হয় গন্ডগোল। কারণ সদ্য বিজেপিতে যোগ দিয়েই ওই কর্মীরা একের পর এক পদ পেয়েছে। আর তা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি পুরনো অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি দলে থাকা কর্মীরা। যার জেরে বারংবার গন্ডগোলের সৃষ্টি হয়েছে।

নব্য ও পুরাতন বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন সকলের চোখের সামনে। এই সময়ে যখন গোটা বিশ্ব লড়ছে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে, সেই সময়েও ত্রাণ বিলি নিয়ে গন্ডগোলের জেরে পা ভাঙল কাঁচরাপাড়া বিজেপি মন্ডলের প্রাক্তন সভাপতি সমর দাসের।

এ বিষয়ে সমর দাস অভিযোগ করেন,গত ১০ মে তিনি কাঁচরাপাড়া সিটি লাইফ থেকে কিছু দুঃস্থ মানুষকে খাবার বিলি করবেন বলে ঠিক করেন। সেই মত তারা রান্নাকরা খাবার নিয়ে সিটি লাইফে পৌঁছালে সেখানে এসে উপস্থিত হয় বিজেপি সভাপতি তাপস ঘোষ, পুলক দাস, অনির্বাণ গাঙ্গুলী সহ অন্যান্যরা। তারা বলেন, বিগত ৪০ দিন ধরে তারা সেখান থেকে খাবার বিলি করেছেন। সুতরাং এখন সমর দাস কোনোভাবেই ওই অঞ্চল থেকে খাবার বিলি করতে পারবেন না। আর এই নিয়ে শুরু হয় কথা কাটাকাটি এবং সেটি হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছায়।

বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সমর দাস অভিযোগ করে বলেন, “সেখানে আমাকে মেরে আমার পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি মহিলাদেরও মারধর করা হয়েছে। এক মহিলা গুরুতর আহত অবস্থায় কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি।”
সমর দাস আরও বলেন,”তারা আমাকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছে।”

এই গন্ডগোল নিয়ে বীজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পুলক দাস, অনির্বাণ গাঙ্গুলি সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে। এই গন্ডগোলের পর‌ আজ বীজপুর থানা থেকে পুলিশ কর্মীরা গিয়ে সিটি লাইফ সিল করে দিয়েছে।

অন্যদিকে এই নিয়ে বীজপুর তৃণমূলের চেয়ারম্যান সুবোধ অধিকারী জানান,”এখানে দিলীপ ঘোষপন্থী এবং অর্জুন ও মুকুলপন্থীদের লড়াই চলছে। গত লোকসভা নির্বাচনের পর যে সন্ত্রাস মানুষ দেখেছে, সেই সন্ত্রাস অব্যাহত। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং যেখানে যাবেন সেখানে সন্ত্রাস সৃষ্টি করবেন। তিনি সন্ত্রাস ছাড়া রাজনীতি করেন না। ‌যখন তিনি তৃণমূলে ছিলেন তখনও কর্মীদের নিয়ে তিনি সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছেন, বিজেপিতে আসার পরেও তিনি একই কাজ করে চলেছেন। তিনি জনপ্রতিনিধি নন, নিজের আখের গোছানোই তাঁর কাজ। তিনি যেটা করেন সেটা নিজের লাভের জন্যই করেন, মানুষের জন্য নয়। জানা গেছে একজন মহিলাও আহত হয়েছেন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।যা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ‌আমি বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সমর দাসের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।”